টানা চতুর্থবার প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতে ম্যান সিটির রেকর্ড
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ মে ২০২৪, ১৬:৫৮
প্রথম ইংলিশ ক্লাব হিসেবে টানা চতুর্থবারের মতো প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয় ম্যানচেস্টার সিটির কাছে সময়ের ব্যপার ছিল মাত্র।
রোববার ওয়েস্ট হ্যামকে মৌসুমের শেষ ম্যাচে ৩-১ গোলে পরাজিত করে কোন অঘটন ঘটতে দেয়নি পেপ গার্দিওলার দল। বরং আর্সেনালকে হতাশ করে জার্গেন ক্লপের লিভারপুল থেকে আবেগি বিদায়ের দিনে সিটি ঠিকই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে।
ফিল ফোডেনের শুরুতেই দ্রুত দুই গোলের সুবাদেই কার্যত সিটির জয় নিশ্চিত হয়। এর মধ্যে প্রথমটি এসেছে মাত্র ৭৯ সেকেন্ডে। ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে সিটির জয়ে পুরো পরিবেশ হয়ে উঠেছিল আকাশী রঙে বর্ণিল।
সফরকারী ওয়েস্ট হ্যামের মোহাম্মেদ কুদুস দুর্দান্ত ওভারহেড কিকে এক গোল পরিশোধ করলে এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল কিছুটা আশা খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু ৫৯ মিনিটে রড্রির গোলে আর্সেনাল তখনই আশা ছেড়ে দেয়। ২০০৪ সালের পর থেকে প্রিমিয়ার লিগে শিরোপাহীন রয়েছে গানার্সরা। নিজেদের শেষ ম্যাচে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত এভারটনের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মিকেল আর্তেতার দল। কিন্তু এই জয়ের পর সিটির ৯১ পয়েন্টের থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে টানা দ্বিতীয় মৌসুমে টেবিলের দ্বিতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো আর্সেনালকে।
ম্যানচেস্টার সিটি এই শিরোপা জয়ে ডিসেম্বরের শুরুতে সর্বশেষ এ্যাস্টন ভিলার কাছে পরাজয়ের পর ১৯টি জয় ও চারটি ড্র দিয়ে লিগ শেষ করেছে। এ নিয়ে গত সাত মৌসুমে ষষ্ঠ লিগ শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালো সিটিজেনরা। এই জয়ে তারা লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অতীত ইতিহাসকে পিছনে ফেলেছে।
সিটি বস গার্দিওলা বলেন, ‘আমি যখন এখানে আসি কেউ একজন আমাকে বলেছিল তুমি কি সাত মৌসুমে অন্তত ছয়বার এই শিরোপা জিততে পারবে, আমি তাকে বলেছিলাম তুমি পাগল, এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসির মতো দলের যে সমস্ত খেলোয়াড় রয়েছে তাদের বিপরীতে এই ধরনের রেকর্ড কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু এখন এটা আমাদের সময়, আমরা এখন ইতিহাসের অংশ।’
ইংলিশ ফুটবলে নতুন এক মান তৈরী করার জন্য সিটিকে সবাই সমীহ করবে, সবাই মনে রাখবে।
প্রিমিয়ার লিগের এবারের মৌসুমের শেষ দিনের অন্য ম্যাচে ঘরের মাঠে ফুলহ্যামের কাছে ৪-২ গোলে পরাজিত হয়ে রেলিগেটেড হয়ে গেছে লুটন। আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপে তারা বার্নলি ও শেফিল্ড ইউনাইটেডের সাথে যোগ দিবে।
তলানির দল শেফিল্ডকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে টেবিলের পঞ্চম স্থান নিশ্চিত করেছে টটেনহ্যাম। আগামী মৌসুমে এর মাধ্যমে তাদের ইউরোপা লিগের পজিশন নিশ্চিত হয়েছে। অন্য ম্যাচে বোর্নমাউথকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ষষ্ঠ স্থানের পাশাপাশি ইউরোপীয়ান ফুটবলের অবস্থানও নিশ্চিত হয়েছে চেলসির।
ব্রেন্টফোর্ডকে ৪-২ গোলে হারিয়ে গোল ব্যবধানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পিছনে ফেলে সপ্তম স্থান নিশ্চিতের মাধ্যমে ইউরোপা কনফারেন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছে নিউক্যাসল। এরিক টেন হাগের দল ইউনাইডেটকে ব্রাইটনকে ২-০ গোলে পরাজিত করেও অষ্টম স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো।
১৯৯০ সালের পর এতটা বাজে অবস্থানে থেকে ইউনাইটেড কখনই লিগ শেষ করেনি। ব্রাইটনের কোচ হিসেবে এটাই রবার্তো ডি জারবির শেষ ম্যাচ ছিল। আগামী সপ্তাহে সিটির বিপক্ষে এফএ কাপের ফাইনালে সফল হতে পারলে কিছুটা হলেও হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে ইউনাইটেড। কিন্তু এই ম্যাচে পরাজিত হলে ইউরোপীয়ান ফুটবল থেকে ছিটকে যাবে রেড ডেভিলসরা।
ইত্তিহাদ স্টেডয়ামে ২৩ বছর বয়সী ফোডেন তার দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রেখে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এই ম্যাচে দুই গোল করে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ২৭ গোলের পাশাপাশি তার এ্যাসিস্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টি। গতকাল পেনাল্টি এরিয়ার বাইরে থেকে বা পায়ের জোড়ালো শটে দ্বিতীয় মিনিটে তিনি স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। এরপর ১৮ মিনিটে জারেমি ডকুর এ্যাসিস্টে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রিমিয়ান লিগের বর্ষসেরা এই খেলোয়াড়।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে টাকেগিরো টোমিইয়াসুর সাইড-ফুটের শটে আর্সেনাল যখন সমতায় ফিরে তখন শিরোপা জয়ের লড়াই কিছুটা জমে ওঠে। তার ঠিক পরই কুডুস ওয়েস্ট হ্যামের হয়ে এক গোল পরিশোধ করলে সিটি শিবিরে অস্বস্তি বেড়ে যায়। লন্ডনে তখন পরিবেশ কিছুটা হলেও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। কিন্তু ডেভিড ময়েসের অধীনে শেষ ম্যাচে হ্যামার্সরা সিটির বিপক্ষে আর কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। উল্টা ৫৯ মিনিটে গোল করে রড্রি সিটিকে সেফ সাইডে নিয়ে যান। কেই হাভার্টজের শেষ ভাগের গোলে আর্সেনাল জয় পেলেও তা শেষ পর্যন্ত কোনো কাজে আসেনি।
সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আর্তেতা ম্যাচ শেষে বলেন, ‘সবকিছুই সম্ভব হয়েছে কারণ তোমরা সবাই আমাদের ওপর আস্থা রেখেছ, ধৈর্য্য ধরেছ, বুঝতে পেরেছ আমরা কতটা চেষ্টা করেছি। সব কৃতিত্ব খেলোয়াড় ও স্টাফদের। এখানে সন্তুষ্ট হলে চলবে না, আমরা এর থেকেও বেশি কিছু করতে চাই।’
এ্যানফিল্ডে শেষ ম্যাচে উল্ফসকে ২-০ গোলে হারিয়ে দীর্ঘদিনের কোচ ক্লপকে আবেগি বিদায় জানিয়েছে লিভারপুল। সমর্থকরা দাঁড়িয়ে তাদের প্রিয় কোচকে সম্মান জানিয়েছে। ২০১৫ সালের পর ক্লপের অধীনে বদলে যাওয়া লিভারপুলকে তো কেউ অস্বীকার করতে পারে না। পুরো স্টেডিয়াম ভর্তি সমর্থকদের সামনে ক্লপ বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি চলে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে, সবেমাত্র শুরু হলো। আমি আজ এখানে যে দলকে রেখে যাচ্ছি সেই দলটি পুরোটাই প্রতিভায় ভরা, এখানে তরুণরা আছে, যাদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা আছে, জয়ের আকাঙ্খা আছে। আমাদের একটি বিশ্বমানের স্টেডিয়াম ও ট্রেনিং সেন্টার আছে। সর্বোপরি তোমরা লিভারপুলের সুপারপাওয়ার, যা বিশ্বে বিরল।’
সূত্র : বাসস/এএফপি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা