২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ শাবান ১৪৪৬
`

সাবিনাদের অনুপস্থিতিতে নতুনদের দারুন সুযোগ

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল - ছবি : সংগৃহীত

পরশু রাতে মাহফুজা আক্তারের কথার সুরেই মনে হচ্ছিল সমাধান হতে যাচ্ছে নারী ফুটবলের সঙ্কটময় পরিস্থিতির। শেষ পর্যন্ত আজ দুপুরে এলো সুসংবাদ।

কোচ পিটার জেমস বাটলারের অধীনে প্র্যাকটিস করতে রাজি হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ১৮ নারী ফুটবলার। দুপুরে বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান কিরণের সাথে মিটিং হয় ১৮ ফুটবলারের। তাতেই অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন সাবিনা খাতুনসহ অন্যরা। তবে এখনই তাদের প্র্যাকটিসে নেয়া হচ্ছে না।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ২৪ ফেব্রুয়ারির সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরেও নেয়া হচ্ছে না। বিদ্রোহীদের বাড়ি ফিরতে হবে। এরপর এরপর ফের যখন ক্যাম্প শুরু হবে তখনই বাটলারের অধীনে যোগ দিতে পারবেন তারা। এমনটাই জানিয়েছেন কিরণ। কিরনের ব্রিফিং শেষেই তার রুমে প্রবেশ করেন কোচ বাটলার। সামান্য কিছুক্ষণ থেকেই বের হয়ে আসেন এই বৃটিশ কোচ।

এরপর সাবিনাদের বিদ্রোহের অবসান প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দলের এই কোচের জবাব, আমার এই বিষয়ে কোনো আগ্রই নেই। তারা ফিরে আসবে। তবে আমি কোনো কোনো ফুটবলারকে ডাকবো তা আমার পছন্দের উপর নির্ভর করছে।

এরপর জানান, কয়েকজনকে আমি ডাকবো না। দলে আমি প্রাধান্য দেবো ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের।’ যার অর্থ নতুনদের দারুন সুযোগ হচ্ছে দুই আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিজেদের প্রমানের।

বেশ কঠোর মনোভাবই দেখা গেল বাটলারের। আসলে বাংলাদেশ বলেই এবং বাফুফে বর্তমান কমিটির মেয়াদ খুব বেশি দিন না হওয়ায় পার পেয়ে গেছেন নারী বিদ্রোহী ফুটবলাররা। অন্য কোনো দেশ হলে বা দেশের পরিস্থিতি অন্য রকম হলে কঠোর শাস্তিই পেতে হতো সাবিনা, নীলা, সানজিদাদের। এখনো যে তাদের শাস্তির শঙ্কা শেষ হয়ে গেছে তা নয়। বিশেষ কমিটির রিপোর্ট কিন্তু পক্ষে যায়নি এই বিদ্রোহীদের। অবশ্য নারী উইংয়ের চেয়ারম্যানের মাথা ব্যাথা নেই বিশেষ কমিটির রিপোর্ট নিয়ে।

তার মতে, ‘আমি এখন মেয়েদের কোচ বাটলারের অধীনে ট্রেনিংয়ে ফেরাতে রাজী করিয়েছি এটিই গুরুত্বপূর্ন।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ নারী ফুটবলারদের পুনরায় ক্যাম্প শুরু হবে জুনের এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের জন্য। তখন সিনিয়রদের সাথে কোচ বাটলারের দূরত্ব কমানোর জন্য সবাইকে ডেকে একত্রে বসবেন কিরণ।

তার মতে, ‘যেহেতু এক সাথে অনুশীলন করবে, কারো প্রতি অসন্তোষ থাকলে ভালো কিছু হবে না। তাই আমরা একসাথে বসে সমস্যার সমাধান করবো। মেয়েরা বলেছে, তার ফিরে এসে অনুশীলনে যোগ দেবে। চুক্তি করবে। এটা ইতিবাচক। যে ভুল বুঝাবুঝি ছিল সেগুলো থেকে মেয়েরা ফিরে এসেছে।’ তবে প্র্যাকটিসে যোগ না দিলে কোনো ফুটবলারের সাথেই চুক্তি হবে না। তা স্পষ্ট করলেন কিরন। আরো জানান, চুক্তিপত্রতো রেডি। আমার আর বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়ালের স্বাক্ষর আছে। বাকী মেয়েদের স্বাক্ষর।

এটা নিশ্চিত এক প্রকার আনকোড়া দল নিয়েই সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে জাতীয় দল। যে দলে অপেক্ষাকৃত সিনিয়র বলতে আছেন ডিফেন্ডার আফেঈদা খন্দকার প্রান্তি, শাহেদা আক্তার রিপা, আকলিমা খাতুন, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, রুমা আক্তার, সৌরভী আকন্দ প্রীতি, মুনকি আক্তাররা। রূপনারা বিদ্রোহীদের সাথে থাকায় পোস্টের নীচে দেখা যেতে পারে ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার ও মেঘলাদের। যেহেতু বয়সভিত্তিক দলে বাংলাদেশ দলে ক্যাপ্টেন্সি করেছেন প্রান্তি, তাই এই ডিফেন্ডারেরই আমিরাতের বিপক্ষে দু’ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার সম্ভাবনা বেশি। জাতীয় দল সূত্রে তা জানা গেছে।

বাফুফে অবশ্য বিদ্রোহী এই ১৮ ফুটবলারের সাথে চুক্তি যেমন করেনি, তেমনি তাদের সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসার জন্য আবেদনও করেনি। কিরন জানান, ‘এই মেয়েদেরতো ফিটনেসই নেই। তারা প্র্যাকটিসের বাইরে।’

সাবিনাদের বিদ্রোহ অবশ্য আকলিমা, প্রীতি, রিপা, সুরমা জান্নাত, আইরিনদের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে সিনিয়র জাতীয় দলে ভালো করার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নারী ফুটবল অতোটা ভালো নয়। তাই নতুন এই ফুটবলাররা ভালো করলে জাতীয় দলে স্থানটা নড়বড়েই হয়ে যাবে বিদ্রোহ করা ফুটবলারদের।

তবে ওই ক্যাম্পে এই বিদ্রোহীদের সবাই ডাক পাবেন কিনা সেটি একটি প্রশ্ন। কারণ বাফুফের বিশেষ কমিটি শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করেছে এই বিদ্রোহীদের। হয়তো তখন কয়জন খেলোয়াড় ক্যাম্পে আর ডাকা নাও হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement