০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১, ১ শাবান ১৪৪৬
`

নারী ফুটবলের জন্য অশনি সঙ্কেত

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছন জাতীয় নারী দলের ফুটবলাররা। - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ নারী জাতীয় দলের হেড কোচ পিটার জেমস বাটলারের বিপক্ষে অবস্থান ১৮ জন ফুটবলারের। ফলে আজ ১২ জন খেলোয়াড়কে নিয়েই জিম সেশন করার কথা এই ইংলিশ কোচের।

সাবিনা, মাছুরা, নীলা, মারিয়া, মনিকারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাটলার জাতীয় দলের কোচ থাকলে তারা অনুশীলন করবে না। প্রয়োজনে ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাবে। গণ অবসরে যাবে। অবশ্য তাদের যুক্তি হালে পানি পাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি হয়ে গেছে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চিঠি দিয়ে বাফুফেকে বিষয়টি সুরাহা করতে বলেছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে) ভার্চুয়ালী জরুরি সভা করে নারী ফুটবলারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। ইমরুল হাসানকে চেয়ারম্যান, ফাহাদ করিমকে ডেপুটি চেয়ারম্যান করে এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে সভাপতি তাবিথ আওয়াল বরাবর রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

তবে কোচের বিপক্ষে সাবিনাদের এই অবস্থান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আছে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আলফাজ আহমেদ বর্তমানে বিপিএলে শীর্ষে থাকা ক্লাব মোহামেডানের কোচ। সাবেক এই স্ট্রাইকার কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না নারী ফুটবলারদের এই আন্দোলন। তার মতে, এটা নারী ফুটবলের জন্য অশনি সংকেত। সাবিনারা এ দেশের নারী ফুটবলের আইডল। তারা যা করছে এতে ভবিষ্যত প্রজন্মের ফুটবলাররা ভালো কিছু শিখছে না। তারাও মনে করবো আন্দোলন করলেই সব হয়। কোচও পরিবর্তন করা যায়।’

আলফাজ যোগ করেন, ‘কোচই সর্বেসর্বা। কোচই ঠিক। এখন নারী ফুটবলারদের এই আন্দোলনের ফলে যদি কোচ বদল করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আর কোনা বিদেশী কোচ বাংলাদেশে আসবে না। তারাও ভেবে নেবে এ দেশেতো আন্দোলনেই সব হয়। এটা আসলে খুবই বিপদ জনক।’

জাতীয় দলের সাবেক কোচ আবু ইউসুফের মতে, ‘নারী ফুটবলারদের কোনোভাবেই এ কাজ করা উচিত হয়নি। তারা কেন কোচ বদল করার দাবি তুলবে। বিষয়টি বাফুফের কঠোর হস্তেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর যদি সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে এ বিষয় দলের জোশটা নষ্ট করে ফেলে। টিম বন্ডিংটা আসে না।’

২০০৮ সালে সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন আবু ইউসুফ। সে সময়ই তিনি এই বাজে পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার বলেন, ‘সাফে ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল এটি। আমি সাফ থেকে ফিরে এসে বাফুফেকে বিচার দিয়েছিলাম কিছু ফুটবলারের বিপক্ষে। কিন্তু বাফুফে এর কোনো বিচারই করেনি। তাই আমি পদত্যাগ করে চলে যাই। তাই আমার প্রস্তাব, বাফুফে যেন কঠোর হস্তে দমন করে বিষয়টি।

জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ এবং বর্তমানে ফর্টিস এফসির হেড কোচ মাসুদ পারভেজ কায়সারের মতে, ‘আমরাতো শুধু নারী ফুটবলারদের কথাই শুনছি। কোচের কোনো কথা শুনছি না। কোচ তার বক্তব্য দিলে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হতো। সাবেক এই ডিফেন্ডার যোগ করেন, কোচকে অবশ্যই খেলোয়াড়দের খুশী রাখতে হবে। তা না হলেতো কোচ কাজই করতে পারবে না। বাফুফের আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল।’

জাতীয় দল এবয় ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যানেজার আমের খানের মতে, ‘দিন শেষে ফেডারেশন হলো অভিভাবক। আর মাঠে খেলবে ফুটবলাররা। তাই বাফুফের উচিত হবে ফুটবলারদের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমা করে সব কিছুর সমাধানে যাওয়া।’

ঢাকা আবাহনীর কোচ মারুফুল হক অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্যই করতে রাজী হননি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল