০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১, ১ শাবান ১৪৪৬
`

জেলাতেও ফুটবলের একক স্টেডিয়াম জরুরি

চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম - ছবি : সংগৃহীত

বাফুফেকে ২৫ বছরের জন্য চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এতে ফুটবলের জন্য দারুণ সুসংবাদ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এই এম এ আজিজ স্টেডয়ামকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু করতে চায়। আগেও এই মাঠে আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল এবং বাংলাদেশ ও কাতারের এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ হয়েছিল। তবে বাফুফে এখনো বুঝে পায়নি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম।

গত জানুয়ারিতে এই মাঠ বাফুফেকে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও এখন জুন মাস লেগে যাবে। ফলে দেশের ফুটবলের মূল ভেনু খেলার বাইরে।

ক্রীড়া পরিষদ জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট ছাড়া অন্য সংস্কার কাজ শেষ হবে। ফলে জানুয়ারি থেকে এই মাঠ বাফুফে ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু তা হলো না। বাংলাদেশ পেশাদার লিগের নিয়ম হলো এক স্টেডিয়াম দু’টি দলের হোম ভেনু। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে এবার গোপালগঞ্জ স্টেডিয়ামকে কোনো দলই হোম ভেনু করেনি। রাজশাহীতেও কোনো ক্লাব খেলতে যাওয়ার আগ্রহ দেখায়নি। তাই এবার বিপিএলে নতুন ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হয় গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামের। এই স্টেডিয়ামের মাঠ শুরুতে একেবারেই অনুপযুক্ত ছিল। কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম অনেক দিন ধরেই বিপিএল ভেনু। এবার এই মাঠ দেশের দু’জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডানের হোম। তবে এই স্টেডিয়ামের মাঠ ক্রিকেট পিচের কারণে পুরোপুরি ফুটবল খেলার উপযোগী ছিল না।

এই মুহূর্তে বিপিএল ভেন্যুগুলোর মধ্যে কিংস এরিনা ও ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম শুধুই ফুটবলের জন্য। কিংস এরিনা বসুন্ধরা কিংসের নিজস্ব মাঠ। জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনে ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও কুমিল্লা স্টেডিয়াম। ময়মনসিংহে ক্রিকেটের জন্য সার্কিট হাউজ মাঠ বরাদ্দ থাকায় রফিকউদ্দিন স্টেডিয়ামে ক্রিকেটকেন্দ্রিক সমস্যা নেই। সেখানে নিয়মিত ফুটবল হয়। কিন্তু ক্রিকেট পিচের কারণে মাঠ ফুটবল খেলার অনুপযোগী গাজীপুর ও কুমিল্লা স্টেডিয়ামে। ক্রিকেটের পিচের মাটি তুলে সেখানে ফুটবলের মাটি ফেলা হয়েছে। এই দু’স্টেডিয়ামের মতোই অন্যসব জেলা স্টেডিয়াম ফুটবল ও ক্রিকেট ভাগাভাগি করে ব্যবহৃত হচ্ছে। পিচজনিত সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। আসলে দেশের ফুটবল ও ক্রিকেট এখন যে পর্যায়ে গেছে তাতে এক স্টেডিয়াম ক্রিকেট ও ফুটবলকে ভাগাভাগি করার সুযোগ নেই। দুই ডিসিপ্লিনের জন্যই আলাদা স্টেডিয়াম থাকা জরুরি।

সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের সময় দেশের বিভাগীয় শহরের জেলা স্টেডিয়ামকে ফুটবলের জন্য এবং বিভাগীয় স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটের জন্য দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে বিষয়ে রিপোর্টও বিভিন্ন দৈনিকে ছাপা হয়েছিল। পরে আর সেই পথে হাঁটেনি ক্রীড়া পরিষদ। ক্রিকেট ও ফুটবল উভয়ই ভাগ করে বিভাগীয় শহরের জেলা স্টেডিয়ামগুলো ব্যবহার করছে। এখন থেকে অবশ্য এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আর ক্রিকেট হবে না। ফুটবলই হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এই এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আগে টেস্ট ও ওয়ানডে দু’টিই খেলেছে।

গত বছর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া চট্টগ্রাম গিয়ে সেখানকার এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে শুধু ফুটবলের জন্য ব্যবহারের ঘোষণা দেন। এখন সেটির বাস্তবায়ন। এই পরিক্রমায় অন্য সব বিভাগীয় শহরের জেলা স্টেডিয়ামের মতো প্রতি জেলাতেও ক্রিকেট ও ফুটবলের জন্য আলাদা স্টেডিয়াম জরুরি। তাহলে মাঠ নিয়ে ডিএসএ (জেলা ক্রীড়া সংস্থা) ও ডিএফএ (জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন) এবং ফুটবল ও ক্রিকেটের মধ্যে দ্বন্দ্ব তথা দূরত্ব তৈরি হবে না।

দেশের ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে জেলা পর্যায়েও ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য ভিন্ন ভিন্ন স্টেডিয়াম করা সম্ভব কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু দিন আগে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পরিদর্শনকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী জানান, ‘যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে কথা বলে আমরা চেষ্টা করব জেলাগুলোতে ফুটবলের জন্য ডেডিকেটেড ফুটবল স্টেডিয়াম রাখা যায় কিনা।’

তিনি স্বীকার করেন, ‘এটা সত্য ক্রিকেট পিচ ভেতরে থাকলে তা ফুটবলের জন্য সমস্যা। তার মতে, ‘ফুটবল খেলা খুবই জনপ্রিয়। জেলা স্টেডিয়ামগুলোকে ফুটবলের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে কাজ করব। ক্রীড়া উপদেষ্টা তেমনটাই চান।’


আরো সংবাদ



premium cement

সকল