খেয়াং-চাক মেয়েদের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:১৯
‘আমরা খিয়াং নই। খেয়াং। আমাদের মধ্যে দু’টি গোষ্ঠী। খিয়াংরা হলো খ্রিষ্টান। আর খেয়াংরা হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।’ খেয়াং না খিয়াং এই বিভ্রান্তি দূর করতে এভাবেই বিষয়টি পরিষ্কার করলেন মে চা চিং খেয়াং। তবে সানু চিং খেয়াংয়ের মতো শুদ্ধ এবং স্মার্টলি বাংলা বলতে পারেন না হ্লা মা চিং খেয়াং, উনু চিং খেয়াং এবং মে চা চিং খেয়াং। তবে ফুটবলটা বেশ ভালো ভাবেই রপ্ত করেছেন তারা। সাথে দীর্ঘদেহী খাইমা চিং চাকও। তাই সুদূর পাহাড়ি জেলা বান্দরবান থেকে তারা ঢাকায় এসেছেন ফুটবলে ট্রায়াল দিতে।
আসন্ন নারী ফুটবল লিগে অংশ নেবে তারেক রহমান স্পোর্টিং ক্লাব। দলটির দ্বিতীয় দফা ট্রায়ালে যোগ দিতে এসেছেন তারা। এর আগে দলটি পঞ্চগড়সহ অন্য জেলার ফুটবলারদের ট্রায়াল নিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে খেয়ায়-চাকদের ফুটবল প্রশিক্ষণে পাওয়া গেল খিলগাঁও জোড় পুকুর মাঠে। বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলে চাকমা-মারমা ফুটবলারদের পাওয়া গেলেও খেয়াং ও চাক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী খেলোয়াড় পাওয়া যায়নি। যদি এই পাঁচজন কোচ ফারুক আহমেদের পাশ মার্ক পান তাহলে তারাই হবেন ফুটবলে সংশ্লিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর পথিকৃৎ।
সবার বাড়িই বান্দরবানে। চার খেয়াং কন্যার বাড়ি বান্দরবান শহর থেকে আধাঘণ্টার দূরত্বে ঘুংঘুরু পাড়ায় হলেও খাইমা চিং চাকের বাড়ি আরো দূরে নাইখ্যাংছড়িতে। সেখান থেকে ২০ মিনিটের হাঁটা পথ, টমটম এবং বাসে চড়ে বান্দরবান শহরে আসতে তার লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টার উপরে। এরা সবাই শিক্ষিত। কেউ কলেজে পড়েন। কেউ বা স্কুলের ছাত্রী। স্থানীয় কোচ বাবলু বড়ুয়ার হাত ধরেই তাদের ফুটবলে আসা। আর বাবলুর সাথে কথা বলেই তাদের পরখ করতে ঢাকায় এনেছেন তারেক রহমান স্পোর্টিংয়ের কোচ।
বাড়িতে লেখাপড়ার পাশাপাশি কৃষি কাজে পরিবারকে সহায়তা করেন মে চা চিং খেয়াংরা। ধান, মরিচ, শীম, বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন তারা। এদের ফুটবল চর্চা শুরু গত বছর থেকে। নিজ এলাকা থেকে বান্দরবানে আসতে দিনে তিন শ’ টাকা লাগে। তাই এই ফুটবলারদের অনুরোধে মে চা চিং, উনু চিংদের এলাকায় কোচ মং সই মারমাকে পাঠান বাবলু বড়ুয়া। এই মং সইয়ের ছোঁয়াতেই তারা এখন ঢাকার ক্লাবের ট্রায়ালে। এদের সবারই আদর্শ ফুটবলার রিতু পর্না চাকমা। খেয়াং-চাক কন্যারা জানান,‘আমরা আমাদের খেয়াং জাতিকে ফুটবলের মাধ্যমে পরিচিত করতে চাই। হতে চাই রিতু পর্নার মতো খেলোয়াড়।’
বান্দরবান ফুটবল অ্যাকাডেমির কোচ বাবলু বড়ুয়া জানান, ‘আগে কখনো খেয়াং বা চাক জনগোষ্ঠীর কোনো নারী ফুটবলার ঢাকায় খেলেনি। আর আমার কাছে অনুশীলন করে ১২ জন খেয়াং ও দু’থেকে তিনজন চাক মেয়ে।’ উল্লেখ্য, খেয়াং ও চাক নৃ-গোষ্ঠীর বাস শুধু বান্দরবান জেলাতেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা