১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

বৈরী আবহাওয়ায় ঢাকাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত

সাগর উত্তাল, বরগুনায় ফেরেনি ১৫ ট্রলার, ভেসে গেছে মাছের ঘের, ৩০ ঘণ্টা অন্ধকারে ভোলা
-


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে এসে আরো গভীর হয়েছে। এই নিম্নচাপে ভোলা, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরগুনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, পাবনা, যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। নিম্নআয়ের মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে গেছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। বরগুনার ৩০টি মাছ ধরার ট্রলার তিন দিনেও ঘাটে ফিরে আসেনি। আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা
ভারী বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। তবে আজ সোমবার বিকেল থেকে অবস্থার উন্নতি হতে পারে। বৃষ্টি কমে যাওয়ার সাথে সাথে সার্বিক তাপমাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। গতকাল সারা দিনই কম-বেশি বৃষ্টি হওয়ার কারণে দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যায়। গতকাল সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য খুবই কম ছিল বলে দিনের বেলা শীত শীত অনুভূত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ সোমবার সারা দেশে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

একটি গভীর স্থল নিম্নচাপের কারণে গতকাল সারা দেশেই কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণও হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী জলাবদ্ধতা হয়ে গেছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরের নিম্নাঞ্চলে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা রয়েছে। ঢাকা শহরের মাঝখানের এলাকায় অবশ্য বৃষ্টি জলাবদ্ধতা সাময়িক সৃষ্টি হলেও তা বৃষ্টি কমে গেলে নেমে গেছে পানি। বৃষ্টির কারণে গতকালের ঢাকা ছিল যানজটের শহর। আধা কিলোমিটারের চেয়ে কম রাস্তা অতিক্রম করতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। ঢাকায় যারা নিয়মিত হেঁটে চলাফেরা করতেন তাদের প্রায় সবাই নানা ধরনের যানবাহনে চলাচল করতে হয়েছে। সারা দিনই এক বিরতিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল ঢাকায় রিকশার কদর আরো বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্যাডালে চালিত রিকশা, ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা, সিএনজি চালিত অটো রিকশা এবং বাসের প্রচুর চাহিদা ছিল।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, স্থল নিম্নচাপটি দুর্বল হতে শুরু করবে আজ থেকে। এটি ক্রমশই দুর্বল হয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র গতকাল রোববার দুপুরের সময় পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে মেদনীপুর জেলার উপরে অবস্থান করছে। গতকাল রোববার বিকেলের দিকে গভীর নিম্নচাপটি যদিও কিছুটা শক্তি হারিয়েছে তারপরও সেটা গভীর নিম্নচাপ অবস্থাই রয়ে গেছে। গতকাল দেশের ৬৪টি জেলাতেই বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়ে গেল। অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতরের তথ্যানুসারে, গতকাল পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা শহরে গতকাল সর্বোচ্চ বৃষ্টির ৭৮ মিলিমিটার। যানজটের কারণে এবং সারা দিন বৃষ্টির কারণে রিকশার ভাড়া ছিল অনেক বেশি। নারী ও স্কুলফেরত ছাত্র-ছাত্রীদের বেশ ভোগান্তি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরে। নিম্নচাপের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মেঘ আকাশে উঠে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও আজ সোমবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
ঢাকা বিভাগে আজও সকালে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টি হতে পারে। মোস্তফা কামাল বলেন, ঢাকা শহরের ওপর দুপুরের আগে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোর মধ্যে মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী জেলায় বৃষ্টি হতে পারে।
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা থাকায় আজ সোমবারও এসব জেলায় ওপরে ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।

কুষ্টিয়ায় বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় নাকাল অবস্থা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, বিরামহীন বৃষ্টি আর ঝড় বাতাসে কুষ্টিয়ার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে নাকাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে কুষ্টিয়ায়। গত শনিবার দুপুর ১২টা থেকে গতকাল রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪ দশমিক ৪৪ ইঞ্চি (১১৩ মিলিমিটার) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে; যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া কুমারখালী আবহাওয়া কার্যালয়। গত শনিবার আর রোববারের বিরামহীন বৃষ্টি সেই সাথে ঝড়ো হাওয়ায় রাস্তায় মানুষজনের চলাচল একেবারেই কমে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শহর ও শহরতলির সব রাস্তা পানির নিচে রয়েছে। অনেক স্থানে সড়কে হাঁটুপানিতে সেখানকার মানুষজনের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও নদীর কূলবর্তী মানুষদের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের ধান ক্ষেত পানির নিচে। আবার অনেক স্থানের ধান ক্ষেত পানিতে ছুঁই ছুঁই অবস্থা। সবজি ক্ষেতের অধিকাংশই পানির নিচে। এলাকার অর্থকরী ফসল আখের জমিতে আখ সম্পূর্ণ শুয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে পুকুর তলিয়ে সেখানকার মাছ ভেসে গেছে। শহরের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সপ্তাহের প্রথম দিন অফিস আদালত খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি কম ছিল।

ঝিকরগাছায় বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
ঝিকরগাছা (যশোর) সংবাদদাতা জানান, সারা দেশের মতো যশোরের ঝিকরগাছাতেও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আমন, পাকা আউশ ধান, কলা, পেঁপেসহ সব ধরনের সবজি ও মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চলে অসংখ্য পুকুর ভেসে গিয়ে মৎস্যচাষিদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিন ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, পদ্মপুকুর ও পৌরসদরের ৫নং ওয়ার্ডে কৃর্তিপুর গিয়ে দেখা গেছে এলাকার বেশ কয়েকটি পুকুর ভেসে গেছে। শফিকুল নামের এক মৎস্যচাষির কয়েক লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এ ছাড়া তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মল্লিকপুর গ্রামের আব্দুল করিম, রেজাউল, জহুরুল ও অনুভবের পুকুর, পদ্মপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুকুর। পদ্মপুকুর গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, তার পুকুর ভেসে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ দিকে কয়েক দিনে অতিবর্ষণে ও দিনভর এই বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। গতকাল রোববার ঝিকরগাছা হাট থাকায় এ দিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুলি-মজুর, ভ্যানচালক, ইজিবাইক, সিএনজিচালক ও নিজেদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে কৃষকসহ নিম্নআয়ের মানুষদের বাজারে আসতে দেখা গেছে। বিকেলে বৃষ্টির তীব্রতা বেড়ে গেলে অধিকাংশ ভ্যান-রিকশাচালক বাড়ি চলে যায়। তবে নিজেদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে বাজারে এসে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। এ দিন বাজারে মানুষ কম থাকায় বিক্রি কম হয়েছে।

ঈশ্বরদীতে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ঈশ্বরদীসহ উত্তরাঞ্চলে টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে শহরের নিম্নাঞ্চল। গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছে ওই সব এলাকা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি বিভাগে। বারোমাসি সবজিতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
ঈশ্বরদী কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, ঈশ্বরদীতে আবাদকৃত গাজর, মুলা, পেঁপেসহ সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তবে বিদ্যুৎ না থাকায় ইন্টারনেট চালানো যাচ্ছে না। ফলে পুরো রিপোর্ট দিতে আরো কিছু সময় লাগবে।
গত দুই দিন ধরে চলা টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঈশ্বরদীর জনজীবন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। সেই সাথে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং থাকায় অটোরিকশাচালকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এক দিকে গাড়ি চার্জ হচ্ছে না অন্য দিকে টানা বর্ষণে যোগ হয়েছে ভোগান্তি।

তিন দিন ধরে বৃষ্টি, পিরোজপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে পিরোজপুরে তিন দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় এ জেলায়। তিন দিন ধরে কখনো মুষলধারে আবার কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বর্ষণে শহরের বেশ কয়েকটি সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। শহরে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করলেও মানুষের উপস্থিতি কম। চরম বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া মানুষ।
অঝোরধারায় বৃষ্টির ফলে জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিরা, বড় মাছুয়া ও ছোট মাছুয়া, ভাণ্ডারিয়া উপজেলার চরখালী ও তেলিখালী এবং জিয়ানগর (ইন্দুরকানী) উপজেলার সাঈদখালীর চর, কালাইয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে দেড় ফুট থেকে দুই ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার রোপা আমনে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষক।

বৈরী আবহাওয়ায় টানা ১৫ ঘণ্টা অন্ধকারে ভোলা
ভোলা প্রতিনিধি জানান, বৈরী আবহাওয়া এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে টানা ১৫ ঘণ্টা অন্ধকারে ছিল ভোলা। এ ছাড়াও বারবার লোডশেডিংয়ে ভোলার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।
ওজোপাডিকো, ভোলার প্রকৌশলীর দাবি বোরহানউদ্দিন হতে ভোলা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের একাধিক স্থানে গাছ উপড়ে পড়ায় জেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, টানা বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ সৃষ্টি হওয়ায় টানা ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে ছিল দ্বীপজেলা ভোলা।
ভোলা সদরের পরানগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী তসলিম জানান, টানা বৃষ্টি ও বাতাসের মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং তা গতকাল বেলা ১১টায় চালু হয়। এই সময়ে পুরো ভোলায় একটি ভুতুড়ে অবস্থার সৃষ্টি হয়।
মাছ ব্যবসায়ী লিটন মিয়া জানান, বিদ্যুতের অভাবে বরফ উৎপাদন বন্ধ থাকে, ফলে অনেক ইলিশ সংরক্ষণ করতে না পারায় মাছ নষ্ট হয়ে গেছে।

সাগর উত্তাল বরগুনায়
ঘাটে ফেরেনি এখনো ৩০টি মাছ ধরার ট্রলার
বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে রূপ নেয়ার খবর পেয়ে বরগুনার অধিকাংশ মাছ ধরার ট্রলার সমুদ্র থেকে ঘাটে ফিরেছে। তবে এখনো ফেরেনি প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি ট্রলার। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবারের পর থেকেই সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে নিরাপদ আশ্রয়ে বিভিন্ন ঘাটে ফিরতে শুরু করে সমুদ্রে মাছ ধরতে থাকা ট্রলারগুলো। তবে গতকাল শনিবারের মধ্যে বরগুনার অধিকাংশ ট্রলার ঘাটে ফিরে এলেও এখনো ফেরেনি প্রায় ৩০টি মাছ ধরার ট্রলার। এসব ট্রলারে গড়ে ১২ জন হিসেবে প্রায় ৩৬০ জন জেলে রয়েছেন। এ ছাড়া পাথারঘাটায় গত তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ করতে পারছেন না ট্রলারে থাকা জেলেদের সঙ্গে।

সাগরে টিকতে না পেরে উপকূল আশ্রয়ে ফিশিং বোটবহর
শরণখোলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল বঙ্গোপসাগরে টিকতে না পেরে ফিশিং বোটবহর দুই দিন ধরে সুন্দরবনসহ উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে ।
সুন্দরবনের দুবলার ভেদাখালী খাল থেকে বাগেরহাটের বগা এলাকার ফিশিং বোট মাঝি ইলিয়াস হোসেন গতকাল দুপুরে মোবাইল ফোনে বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। প্রবল ঝড়ো বাতাস প্রচণ্ড ঢেউ ও বৃষ্টিতে সাগরে টিকতে না পেরে শত শত ফিশিং বোট দুই দিন ধরে সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, দুই দিন ধরে সাগরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগরে জাল ফেলতে না পেরে তাদের মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলের মহিপুর কুয়াকাটা, নিদ্রা ছকিনা, পাথরঘাটা, রায়েন্দাসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।

কলারোয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত, ভেসে গেছে মাছের ঘের
কলারোয়া (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা জানান, টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও পুকুর, তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর। একটানা বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর, ভ্যানচালক ও খেটেখাওয়া শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ। শীতকালীন সবজি ক্ষেতেরও ক্ষতি হয়েছে। কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তার বিদ্যালয়ের আঙিনা, বারান্দা ও ক্লাশরুম পানিবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মির্জাপুরের বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তাঘাট পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়ির আঙিনায় পানি উঠেছে। তিনি আরো জানান, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম বিপর্যয়ের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেশির ভাগ নাগরিক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আসলে কী হয়েছিল? মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করুন : তথ্য উপদেষ্টা বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টায় নজর ভারতের এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট নাটোরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে যুবদল নেতাসহ গ্রেফতার ৬ বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ ভিসা সমস্যার সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা মার্চেন্ট শিপিং ফেডারেশনের শহীদ পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ, আহতরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম

সকল