১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
সাংবাদিক মুশফিক আনসারীকে সংবর্ধনা

সুপরিকল্পিতভাবে ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুশফিকুল ফজল আনসারীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -


বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা চলছে, সেটিকে রুখে দিতে হবে। ঐক্য ধরে রাখতে পারলেই ছাত্রজনতার বিপ্লবের বিজয় সুসংহত হবে।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের দীর্ঘ অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভস ও জাস্ট নিউজের সম্পাদক এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডম’র নির্বাহী পরিচালক মুশফিকুল ফজল আনসারী’র বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সংবর্ধনার আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেড।
একদশক পর দেশে ফিরে আসা সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীকে গণতন্ত্রের সংগ্রামের হিরো আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কাছে, এই দেশের মানুষের কাছে, গণতন্ত্রের সংগ্রামের ক্ষেত্রে তিনি একজন হিরো। এই জন্য যে, অত্যাচার, নির্যাতনে আমরা যখন হতাশ হয়ে পড়তাম মাঝে মাঝে, তখন তিনি আমাদের মাঝে আশার আলো জাগিয়ে তুলতেন। এ জন্যই আমাদের সবার কাছে তিনি নিঃসন্দেহে হিরো। ফখরুল আরো বলেন, একটা কথা সবার উদ্দেশে বলতে চাই মুশফিক এবং মুশফিকের সাথে আরো অনেকে এই দেশে থাকতে পারেননি ফ্যাসিবাদী হাসিনার অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে। তারা লড়াই করেছেন বাইরে গিয়ে। আমরা লড়াই করেছি ভেতরে।

অনুষ্ঠানে মুশফিকুল ফজল বলেন, স্বৈরাচার মুক্ত করে দেশের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে বসবাস করছেন। দেশটাকে নতুন করে স্বাধীন করতে গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে যারা জীবন দিয়েছেন তাদেরকে তিনি স্মরণ করেন। তিনি বলেন, নতুন করে স্বাধীনতা আনতে ছাত্র-জনতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তবে, বেশ আগে থেকেই কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করে আসছে। একটা পর্যায়ে যার সমাপ্তি ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা। মুশফিক বলেন, এখনো ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। তাই আমাদেরকে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কারণ, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা এখনো বসে নেই। তাই, এ আন্দোলনে কার ভূমিকা কম বা বেশি ছিল তা নিয়ে আমাদের তর্ক করার সময় এখন নয়। দেশটাকে নিয়ে কেউ যেন আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা একটি কার্যকর রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র চাই, যা দেশের মানুষের জন্যে মঙ্গল বয়ে আনবে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, দেশটি আমাদের নিকট প্রতিবেশী। আমরা চাই ভারত বিশেষ কোনো দল বা গোষ্ঠী বা ব্যক্তির প্রতি সম্পর্ক না করে দেশের মানুষের চাওয়াকে প্রাধান্য দেবে। আমি ইতোমধ্যে ভারতের কয়েকজন দায়িত্বশীল পর্যায়ের মানুষের কাছে আবদেন করেছি- তারা যেন এ দেশের সব দল বা মানুষের প্রতি সমআচরণ করেন।

নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল জয়ী। যে কারণে আমরা গর্বিত। এই সরকারের সব উপদেষ্টা তাদের নিজস্ব সেক্টরে অত্যন্ত দক্ষ ও পরিচিতজন। আমরা আশা করছি, জনগণের অবস্থা বুঝে তারা কাজ করবেন।
দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে নিজের আবেগ আর অনুভূতি ব্যক্ত করে সাংবাদিক আনসারী বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের জন্যেই কাজ করেছি। আজীবন তা করে যাব। ইতোপূর্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের কোনো লোভ আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
অনুষ্ঠানে মুশফিকুল ফজল আনসারীকে ফুলেল সংবর্ধনা দেন সাংবাদিক নেতারা। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায় থেকেও তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা কামাল উদ্দিন সবুজ, কবি আব্দুল হাই সিকদার, এম আব্দুল্লাহ, শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, ইলিয়াস খান, আইয়ুব ভুঁইয়া, শফিউল আলম দোলন, মুরসালিন নোমানী, এম. সাঈদ খান, সরকারি কর্মকর্তা সমিতির নেতা ড. নেয়ামত উল্যাহ, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতারা ছাড়াও পেশাজীবী ও রাজনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement