আওয়ামী সরকারের আমলে গুদাম থেকে উধাও টনকে টন খাদ্যশস্য
- আবু সালেহ আকন
- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দেশের সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনায় চলছে হরিলুট। সরকারি গুদামের টনকে টন ধান-চাল-গম হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। অতিলোভী খাদ্য পরিদর্শক তথা গুদাম কর্মকর্তার সম্পৃক্ততায় এমনটি ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকর্তা সাবেক আওয়ামী সরকারের তৎকালীন মন্ত্রীর ডিও লেটারে ও সুপারিশে পদায়নকৃত বলে জানা গেছে। এসব কর্মকর্তা এখনো ওই সব পদে বহাল থাকলে খাদ্য ব্যবস্থাপনায় আরো সঙ্কট সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া খাদ্যগুদামের প্রায় ২৫০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উধাও হয়ে গেছে। ভোলা সদর খাদ্যগুদামের ৫০ মেট্রিক টন চাল উধাও হয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ খাদ্যগুদামের ১৫০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ না করেও ভুয়া কাগজ তৈরি করে ৪১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর আগে কুমিল্লা জেলার লাকসাম খাদ্যগুদামের এক হাজার ৮৪৮ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আত্মসাতে বিভাগীয় মামলাও দুদকে চলমান রয়েছে। বরিশালের হিজলা খাদ্যগুদামের ১২ মেট্রিক টন চালের কোনো হদিস নেই।
সম্প্রতি রংপুর সদর খাদ্যগুদামের প্রায় ১৫০ মেট্রিক টন চাল উধাও হয়ে গেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে একটি মহল। ওই সময়ে রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল ইসলামের সাথে মোবাইলে এ নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট খাদ্য পরিদর্শক গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমাকেও অন্যত্র বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কানিজ ফাতেমার মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ ছাড়া ওই বিভাগেরই দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি গুদাম থেকে ৩১৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উধাও হয়ে গেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা। এই ঘটনায় খাদ্য পরিদর্শক গুদাম কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমকে বদলি করা হয়েছে ও তার বিরুদ্ধে খাদ্য বিভাগ থেকে মামলা করা হয়েছে। একই বিভাগের পলাশবাড়ি খাদ্যগুদাম থেকে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যমানের ২০০ মেট্রিক টন চাল ও গম উধাও হয়ে গেছে। খাদ্য পরিদর্শক গুদাম কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুনকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে ও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্যগুদামের ৩২৯ মেট্রিক টন চাল উধাও হয়েছে ২০২৩ সালে। এই ঘটনার পর ওই গুদামের ওই সময়ের খাদ্য পরিদর্শক তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গত বছরের ২১ নভেম্বর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা বাদি হয়ে মুক্তাগাছা থানায় এ মামলা করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভাগীয় মামলা হলেও অধিকাংশ কর্মকর্তাকে বদলি বা সাময়িক বরখাস্তের ও লঘু দণ্ডের মধ্যেই শাস্তি সীমাবদ্ধ থাকছে। এভাবে অসংখ্য মামলা রয়েছে, যা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এসব মামলার তথ্য চেয়ে ৩ সেপ্টেম্বর একটি পত্র জারি করা হয়েছে। আওয়ামী সরকারের সময় মন্ত্রীর ডিও লেটারে ও সুপারিশে এসব কর্মকর্তা নিয়োগ হওয়ার কারণে তারা কাউকেই পরোয়া করত না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা