১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্র জনতার লংমার্চ

রাজধানীর শাহবাগ থেকে লংমার্চ শুরু করে ইনকিলাব মঞ্চ : নয়া দিগন্ত -


আন্তর্জাতিক নদীতে ভারতের বাঁধ নির্মাণ, ইচ্ছেমতো পানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাংলাদেশে বন্যা ও নদীর নাব্যতা হ্রাস-বৃদ্ধিতে প্রভাব খাটানোর প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ অভিমুখে লংমার্চ করেছে ছাত্র-জনতা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ এর ব্যানারে লংমার্চটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়কদের নিয়ে গঠিত এ মঞ্চের আহবানে লংমার্চে যোগ দিতে সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে জড়ো হন অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। পরে ১০টি ট্রাকযোগে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা নিয়ে যাত্রা করে এ লংমার্চ। যাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, দেশ আজ গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন এক দিগন্তে উপনীত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনগণ আওয়াজ তোলার সাহস করেনি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ভারত পানিসন্ত্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রতিনিয়ত সীমাহীন জুলুম করেই যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের এ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল জনমত তৈরি করতে ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ অভিমুখে আমাদের এই লংমার্চ।
তিনি বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের অসংখ্য নদীর সংযোগ আছে। তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে না জানিয়ে এসব নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে। আমরা বলতে চাই, ভারত যতগুলো বাঁধ নির্মাণ করেছে, তা ভেঙে ফেলতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক আইনে কোনো দেশ এককভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা ব্যবহার করে পুরো দেশকে আয়নাঘর তৈরি করে রেখেছিল। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।
সম্প্রতি ত্রিপুরা থেকে আসা ঢলে দেশের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। এ অঞ্চলের ১১ জেলায় বন্যা ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েক লাখ মানুষ। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতি হয় বলে সে সময় অভিযোগ ওঠে।

হাতে ও মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে, ব্যানার নিয়ে, পিকআপভ্যানে চড়ে লংমার্চে অংশ নিয়ে ছাত্র-জনতা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব’, ‘সোনিয়া আর গেরুয়া মোদি, গুম করেছে আমার নদী’, ‘খুনি ভারতের নদীর বাঁধ, বাংলাদেশের মরণ ফাঁদ’, ‘পদ্মা-তিস্তা-আবরার, যুদ্ধে ডাকে বারবার’, ‘স্বর্ণ দাস মরল কেন, খুনি ভারত জবাবে দে’, ‘ফেলানী ও স্বর্ণা দাস, কাঁটাতারে ঝুলছে লাশ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

লংমার্চ শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে প্রথমে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তায় পথসভা করে। এরপর বেলা ২টায় কুমিল্লার চান্দিনায় একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বিকাল ৪টায় কুমিল্লার টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল সমাবেশ। এতে কুমিল্লার বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এর পর লংমার্চে অংশগ্রহণকারীরা পদযাত্রা নিয়ে বিবির বাজার পৌঁছায়।
এর আগে বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলন লংমার্চের রুটগুলো তুলে ধরে ইনকিলাব মঞ্চ। এতে তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, অতিদ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া, জাতিসঙ্ঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭-এ অতিসত্বর অনুস্বাক্ষর করা এবং এ কনভেনশন অনুযায়ী ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানের দেশের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি, আন্তঃসীমান্ত নদীর নতুন তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া, ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানিবণ্টনে সব পন্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা, ভারতের সব অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদের দাবিতে আন্তর্জাতিক ফোরামকে অন্তর্ভুক্ত।

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা টাউনহল মাঠের মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দাবি করেন, ভারত যতগুলো বাঁধ নির্মাণ করেছে, তা ভেঙে ফেলতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক আইনে কোনো দেশ এককভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে পারে না। আন্তর্জাতিক নদীতে এভাবে বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে না ভারত।
রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে ও ইনকিলাব মঞ্চ, কুমিল্লার আহ্বায়ক গোলাম সামদানীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট ইসলামিক বক্তা মাওলানা মোশতাক আহমেদ ফয়েজি, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মিয়া মুহাম্মদ তৌফিক, নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা ব্যবহার করে পুরো দেশকে আয়নাঘর তৈরি করে রেখেছিল। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বাড়ির জমির রেজিষ্ট্রি না পাওয়ায় ৬০ পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন বায়াররা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, গার্মেন্টস শিল্প এখন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা : শ্রমসচিব রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগের দাবিতে মহাসড়ক ব্লকেড চকরিয়ায় গোসলে নেমে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হাসিনা-রেহেনা-জয়সহ ১৭৯ জনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁওয়ে মামলা গত ১৫ বছর বঞ্চিত আড়াই হাজার কর্মকর্তার সুযোগ-সুবিধা ফেরত পেতে আবেদন নবীনগরে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত 'আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে রাসুল সা.-এর পথ অনুসরণ করতে হবে' কমলনগরে যুবদল নেতা বহিষ্কার আ’লীগ নেতাকর্মীদের অবৈধ অস্ত্র জব্দ না হওয়ায় সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে : রিজভী নাগরিক ফোরাম দেশ পুনর্গঠনে নিয়োজিত তরুণদের প্লাটফর্ম : আখতার

সকল