২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দাবি

ড. ইউনূসের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টি (ওপরে), গণফোরাম (নিচে বাঁয়ে) ও এলডিপির নেতারা : পিআইডি -


নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে যৌক্তিক দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। একই সাথে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭জন সেনা হত্যা, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যা এবং সর্বশেষ ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিচার দাবি করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে শহীদ, চিরতরে অক্ষম ও আহতদের দ্রুত তালিকা প্রণয়নপূর্বক ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা অনুযায়ী আশু ও ক্ষেত্রবিশেষে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, জুলাই বিপ্লবে শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা, দেশের ধ্বংস প্রায় বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ, অর্থ ও ব্যাংকিং বিভাগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সব বিভাগকে দ্রুত সংস্কার করতে হবে।

গতকাল বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সাথে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা তাদের বক্তব্য মনোযোগসহকারে শোনেন এবং দেশ পরিচালনায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন। গতকালের সংলাপে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো হচ্ছে- খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় পার্টি (জিএম কাদের),গণফোরাম (ড. কামাল)।

ইউনূস ছাড়াও সংলাপে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান কর্নেল অলি : প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে বেরিয়ে ৮৩ দফা দাবির কথা তুলে ধরেন লেবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) ড. অলি আহমেদ বীরবিক্রম। সংস্কারের আগে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন নয় উল্লেখ করে এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, সরকারকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটা সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করতে বলেছি। তা হলে প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে, সেটি ৬ মাস হতে পারে, ৯ মাস পরেও হতে পারে। যত দ্রুত হবে ততই সবার জন্য ভালো।

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। এখনো আমরা বাংলাদেশকে চাঁদাবাজমুক্ত করতে পারিনি। স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে দেশ, চাঁদাবাজমুক্ত হয় নেই। এখনো কোর্টকাচারিতে ন্যায়বিচার হচ্ছে না। মানুষ ন্যায়বিচার না পেলে এ স্বাধীনতার কোনো দাম নেই।
জামায়াতকে তুচ্ছ কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার নিষিদ্ধ করেছিল উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার আমলে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, গুম খুন হয়েছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চান এলডিপি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যতগুলো ধর্মবিরোধী লেখা গল্প আছে সেগুলো সব বাদ দিতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, নিজের স্বার্থ ভুলে যান, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ভুলে যান। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করেন, সে পরিকল্পনা করেন। এ সময় দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রিত্ব নয় : মাওলানা মামুনুল হক
প্রধান উপদেষ্টার সাথে সংলাপে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, দু’বারের বেশি কেউ যেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে না পারে এরকম প্রস্তাবনা পেশ করেছি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনসহ সব বৈষম্যমূলক প্রতিষ্ঠান, যেটি দলীয় ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়েছে, সেটিকে ঢেলে সাজাতে হবে। নতুনভাবে সংস্কার করে যেন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যায়। তার জন্য আমূল পরিবর্তনের একটি সংস্কার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশব্যাপী নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন করা যায়, সেই ধরনের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মৌলিক প্রস্তাবনা আমরা দিয়েছি। এ ছাড়া বিচার বিভাগ প্রশাসন ও শিক্ষাসহ বিশেষ করে এককেন্দ্রিক ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর পদ যেখান থেকে স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব, সেই জায়গাটিকে যেন ভারসাম্য তৈরি করা হয়। এ জন্য সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই নেতা আরো বলেন, সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থার বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে, সেটি যেন পুনর্বহাল করা হয়। সংশোধনী এনে তা পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছি। তিনি বলেন, ২০১৩ ও ২০২১ সালে হেফাজতের বহু নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, গুম হয়েছেন। এ বিষয়ে একটি সুন্দর ও সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন করার দাবি জানিয়েছি। যারা এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া ইসলামবিরোধী কোনো আইন না করা, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা অতি দ্রুত নির্বাহী আদেশে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।
মামুনুল হক বলেন, কোনো কালবিলম্ব না করেই যেন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করে, এ বিষয়ে আমরা দাবি জানিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে কালবিলম্ব না করে তারা নির্বাচনে দিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তবে যৌক্তিক সময় কত দিনের, এ নিয়ে নির্দিষ্ট করে কোন আলোচনা হয়নি।

প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দাবি সৈয়দ রেজাউল করীমের : প্রধান উপদেষ্টার সাথে সংলাপ শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এ জন্য নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানান মুফতি রেজাউল করীম। তিনি বর্তমান সংবিধান বাতিল করে একটি সাংবিধানিক কমিশন গঠন করে নতুন সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন এবং গণভোটের মাধ্যমে তা অনুমোদনের দাবি জানান। গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যার বিচার করতে হবে। একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের : প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, একটি অবাধ অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্র সংস্কার ও সব ক্ষেত্রে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে ঘুষ চাঁদাবাজি, দুর্নীতির পথ চিরতরে বন্ধ করা, বিগত সরকারের বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং জড়িত অপরাধীদের বিচার, হেফাজতে ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের বর্বর হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার, আলেম ওলামাসহ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা ও রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান।

সংলাপ শেষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম এফেন্দি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের কোনো সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। তিনি ২০১৩ ও ২০২১ সালে হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যা এবং ২০২৪ সালে ছাত্রজনতার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের জানান, বিপ্লব-পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর দ্রুত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, সংস্কার কার্যক্রম জোরদার এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেন যৌক্তিক দ্রুতসময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। একইভাবে আওয়ামী দলীয় ক্যাডারদের হাতে থাকা সব বৈধ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জুলাই বিপ্লবের মূল নিয়ামক ছাত্রজনতার ঐক্যকে সংহত ও এগিয়ে নিতে হবে। বিপ্লববিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষ গড়ে ওঠা ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারী খুনি হাসিনাকে দ্রুত দেশে এনে বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা এবং স্বৈরাচারের দোসর, লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের ‘বিশেষ ট্রাইব্যুনাল’ দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

সংস্কার করতে যত সময় প্রয়োজন দেবে জাতীয় পার্টি : প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তির দুই মেয়াদের বেশি না থাকার প্রস্তাব দিয়েছে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
গতকাল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা জানান। এর আগে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।

চুন্নু বলেন, জি এম কাদের প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি দু’বারের বেশি সময় যাতে না থাকেন, সেই প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা বলেছি, কোনো রাজনেতিক দলের পক্ষে ব্যাপক হারে সংস্কার করা সম্ভব নয়। আপনি যেহেতু সুযোগটুকু পেয়েছেন তাই ব্যাপক সংস্কার করতে পারবেন। আর এই সংস্কার করতে গিয়ে যতটুকু সময় প্রয়োজন সেই সময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেয়া হবে। সেই সময়টা কত দিন- এমন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, যৌক্তিক সময়ের বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রস্তাবনা দেয়া হয়নি। সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নিয়ে আমরা আলোচনা করিনি।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিটি দল সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেছে জানিয়ে চুন্নু বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার যে ব্যবস্থা এবং যেখান থেকেই স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব, এই জায়গায় যেন ভারসাম্য তৈরি করা হয়, সেই প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে জানান।

প্রস্তাবনা যাচাই শেষে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা : রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্কারের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক শুরু করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব আসছে। সেগুলো নিয়ে একটি চূড়ান্ত রূপরেখা প্রকাশ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সংস্কার প্রস্তাবের ওপর নির্ভর করবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচন কবে হবে।
গতকাল শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক শেষে রাতে তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় আছে। আশঙ্কা আছে। নির্বাচন কিভাবে হবে? প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনেছেন। বক্তব্য শেষে তাদের দেয়া প্রস্তাবনাগুলো যাচাই-বাছাই শেষে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেবেন। তিনি সব প্ল্যাটফর্মের কথা শুনবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আলম বলেন, জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। জনগণই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে আমাদের সংস্কারগুলো করা। আগে সংস্কার করতে হবে। সংস্কারের প্রস্তাবনার ভেতর থেকে ঠিক হবে তাদের মেয়াদ কত দিন হবে। মূলত সংস্কারের প্রস্তাবনা এবং প্রস্তাবনার ভিত্তিতে মেয়াদ শেষে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্ন আসবে। আমরা আশা করি- এটা একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা হবে।
রূপরেখা কি সংস্কার না ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতে উভয়ই থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা মূলত সংস্কারের রূপরেখা দেবেন। সংস্কারের ভেতরেই অন্তর্ভুক্ত আছে কখন, কিভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।

আমরা জনগণের গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সরকার দায়িত্ব পেয়েছে। এখানে বারবার বলা হচ্ছে রাষ্ট্র মেরামত করার। রাষ্ট্র মেরামত করার জন্য যে যৌক্তিক সময় রাজনৈতিক দলগুলো যে বলছে তারা তাদের প্রস্তাবনার ভেতর দিয়ে বলে দেবেন তারা সরকারকে যৌক্তিক কত দিন সময় দেবেন। তারপরই ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্ন আসবে। সংস্কার প্রস্তাবের ভেতরে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দলগুলোর পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রস্তাব এসেছে। কেউ সংবিধানের কিছু বিষয় সংশোধনের কথা বলেছেন। কেউ সংবিধান সংশোধনের কথাও বলেছেন। দলগুলো নিজেদের মামলা প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : শিশুসহ দগ্ধ ৭ সাবেক প্রধান বিচারপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ সুপ্রিমকোর্টের বিচারকাজ বন্ধ ফিরছেন শান্ত, অপেক্ষা বাড়ছে মুশফিকের জন্য পিক‌নিকের বা‌সে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু : পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাসহ বরখাস্ত ৭ কুয়াশায় ঢাকা কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি ‘স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদমুক্ত দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ রাশিয়ায় শিক্ষার্থীদের ‘নির্মমভাবে’ গ্রেফতারের বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিবাদ সাবেক প্রধান বিচারপতি রুহুল আমিন আর নেই তাজরীন ট্র্যাজেডির এক যুগ : পুনর্বাসনের দাবি আহতদের সিইসিসহ নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত

সকল