০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

কাজলায় গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার : আরো ৬ মৃত্যু

-

কোটাসংস্কার আন্দোলন ও সংঘর্ষের পাঁচদিন পর কাজলা এলাকায় রাস্তা পরিস্কার করতে গিয়ে পাওয়া গেছে গুলিবিদ্ধ অর্ধগলিত লাশ। এ ছাড়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন, মো: জামাল (১৭) ও মো: জাকির হোসেন (২৯)। কাজলা থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার বয়স আনুমানিক (৩২)। অন্যদিকে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন আরো ৪ জনের।
পুলিশ হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, কোটাসংস্কার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত আবর্জনা পরিস্কার করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায়ও কাজলা রাস্তার পাশে আবর্জনা পরিস্কার করার সময় রাস্তার পাশে একটি অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে খবর দেয়া হলে রাতে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। যাত্রাবাড়ি থানার এসআই ওয়াসিম বিল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে রাতে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে ১৭ জুলাই সংঘর্ষের সময় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মর্গ সূত্র জানায়, লাশের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। বেশি দিন পড়ে থাকায় লাশে পচন ধরেছে।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। নিহত জামাল একজন পোশাক শ্রমিক। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ। কাজ করতেন নরসিংদীর একটি কারখানায়। গত ২১ জুলাই কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিতে আহত হন তিনি। পরে তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার রাতে মারা যান। নিহত জাকির ছিলেন একজন নির্মাণ শ্রমিক। গত ১৯ তারিখ কদমতলী রায়েরবাগে কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে গুলিতে আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার রাতে মারা যান। নিহত জাকিরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী । তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান।
সাভার এনাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আরো ৪ জনের মৃত্যু
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, কোটাসংস্কার আন্দোলনে সাভারের আশুলিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় সাভার মডেল থানায় ৮টি ও আশুলিয়া থানায় ৩টিসহ মোট ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার জনকে। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সাভার এনাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন চারজনসহ মোট ১০ জন নিহত হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের ডিউটি অফিসার শফিকুল ইসলাম। হাসপাতালে এখনো ৯ জন গুলিবিদ্ধ রয়েছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে আশুলিয়ায় গত ২ দিনে পুলিশ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে মার্কেট, প্রাণিসম্পদ অফিস, হাসপাতাল, ট্রাফিক বক্স, একাধিক বাস ও ট্রাকে আগুন দেয়া হয়। এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছেন জামায়াত নেতা ও একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম, তার ভাই আবদুল করিম।
ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আবদুল্লাহিল কাফি জানান, সংঘর্ষ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গত কয়েক দিনে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement