০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

গ্রেফতার আতঙ্কে হাসপাতাল থেকে পালাচ্ছে গুলিবিদ্ধরা

-

গ্রেফতার আতঙ্কে চিকিৎসা না নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাচ্ছে গুলিবিদ্ধ আহতরা। ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। ফলে হাসপাতালের খাতায় নাম থাকলেও ওয়ার্ডে গিয়ে বেডে রোগী পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া হাসপাতালে কিছু রোগী ভর্তি থাকলেও তাদের নাম না লিখতে আকুতি জানাচ্ছেন স্বজনরা। এ জন্য হাসপাতালের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় আহত ৮ শতাধিক রোগী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছিলেন।
রোগীর স্বজন পরিচয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। রোগীর স্বজনরা বলছেন, সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা। রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অন্য কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে অথবা হাসপাতালে। এ দিকে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। রোগীর স্বজন ছাড়া কাউকে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বলছেন, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে রোগীর স্বজন ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার (পিসি) মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে সব আনসার সদস্যকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা ফলো করা হচ্ছে। আমাদের করার কিছুই নেই। রোগীর স্বজন ছদ্মবেশে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১৫ জন রোগী গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও কিশোর রয়েছে। ওয়ার্ডের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন রামপুরা আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও রামপুরের উলোন এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা শেষে বাসায় ফেরার পথে রামপুরা এলাকায় ডান পায়ে গুলি লাগে তার। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একজন নার্স বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে খাতায় অনেক রোগীর নাম রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে বেডে গিয়ে সেসব রোগী আর খুঁজে পাই না। আহতরা কাউকে না বলে স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছেন। শুনতে পেরেছি পুলিশ তাদেরকে হয়রানি করবে বলে তারা চলে যাচ্ছেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো: বাচ্চু মিয়া জানান, কোটা আন্দোলনের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ও ইটপাটকেল ও মারধরে আঘাতে প্রায় ৮ শতাধিক রোগী হাসপাতালে আসেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর চলে যান। ভর্তিদের মধ্যে আবার অনেকেই চলে গেছেন। তিনি আরো জানান, এখনো আহত ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement