০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

অফিস খোলার প্রথম দিনেই রাজধানীতে তীব্র যানজট

-

কারফিউ শিথিল করায় খুলেছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। টানা তিন দিন পর বাসা থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন রাজধানীবাসী। তবে অফিস আদালত মার্কেট বিপণিবিতান খুললেও বন্ধ রয়েছে মেট্রোরেল খোলেনি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এদিকে এক সাথে বিপুলসংখ্যক মানুষ ও যানবাহন রাস্তায় নামায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দেয় ভয়াবহ যানজট। সকাল থেকেই শুরু হওয়া যানজট বিকেল আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। বিকেল ৫টায় পুনরায় কারফিউ শুরু হওয়ার আগে বাসায় ফিরতে তড়িঘড়ি করায় গাড়ির চাপ আরো বেড়ে যায়।
বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিলের সুযোগে ব্যক্তিগত যানবাহন, বাস, সিএনজি অটোরিকশা চালাচল বেড়ে যায়। বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, গাবতলী, আগারগাঁও, উড়োজাহাজ ক্রসিং, তেজগাঁও, মতিঝিল, বনানী, মহাখালী, সায়দাবাদসহ বিভিন্ন রাস্তায় এই যানজট দেখা যায়।
যাত্রীরা বলছেন, এক দিকে বন্ধ মেট্রোরেল, অন্য দিকে বন্ধ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। তার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করায় সড়কে প্রচণ্ড যানজট দেখা দেয়। তবে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম। গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী যাত্রীরা সকালেই পড়েন বিপাকে।
সারোয়ার নামে একজন যাত্রী বলেন, অনেক গাড়ির চাপে আটকে রয়েছে অনেক রাস্তা। কিন্তু সেখানে গণপরিবহন নেই বললেই চলে। শুধু প্রাইভেট কার, অটোরিকশাসহ অন্যান্য বাহন। রিকশাচালকরা ৫০ টাকা ভাড়া দাবি করছে ১৫০ টাকা। বাধ্য হয়ে শেওড়াপাড়া থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। এখন মতিঝিল অফিসে যাব কিভাবে সেটাই ভাবছি।

ফার্মগেটে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা শামসুল হক নামে এক যাত্রী বলেন, বাংলামোটর যাব, কোনো কিছু পাচ্ছি না। এখানে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে, কিন্তু পর্যাপ্ত যানবাহন নেই। যাও আছে যানজটে আটকে যাচ্ছে। ৬০ ফিট পীরেরবাগ থেকে মোটরসাইকেলে তেজগাঁও পৌঁছতে লেগে যায় এক ঘণ্টারও বেশি।
তেজগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগর জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) তারেক সেকান্দার বলেন, নাশকতায় মেট্রোরেল বন্ধ, অন্য দিকে নিরাপত্তার কারণে বন্ধ গণভবনের সামনের সড়ক। সঙ্গত কারণে কল্যাণপুর মিরপুর গাবতলী শ্যামলীর সব গাড়ি আগারগাঁও রুটে আসায় চাপ বেড়ে যায়।
সচিবালয়ে আলোচনার বিষয় ছিল ছাত্র আন্দোলন : এ দিকে পাঁচ দিন পর প্রথম কর্মদিবসে গতকাল অনেকটা ঢিলেঢালা অফিস করতে দেখা গেছে কর্মচারীদের। স্বাভাবিক সময়ের মতো গাড়ি না চলায় সময়মতো অফিসে পৌঁছতেও বেগ পেতে হয়েছে তাদের। স্বাভাবিক সময়ে সচিবালয় খোলা থাকলে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে তবে গতকাল দেখা মেলেনি। কর্মচারীদের প্রবেশের সময় তল্লাশি করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
সকালে সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ থাকলেও গতকাল কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি খুব বেশি চোখে পড়েনি। বেশির ভাগ কর্মকর্তাই ব্যক্তিগত গাড়ি রেখে রিকশা বা অফিসের গাড়িতে এসেছে। এজন্য সচিবালয় এলাকা ছিল প্রায় ফাঁকা।
সচিবালয়ের সামনে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া প্রবেশের গেটে রয়েছে পুলিশের অনেক সদস্য। যারা ব্যাগ নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন, তাদের ব্যাগও তল্লাশি করা হচ্ছে। নারীদের তল্লাশি করার জন্য নারী পুলিশ ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, গতকাল নতুন সময়সূচি অনুযায়ী অফিস করতে হয়েছে। অফিসে আসার সময় রাস্তায় যানজটে পড়তে হয়েছে। এরপর স্বাভাবিক সময়ে সচিবালয়ের সব গেট খোলা থাকলেও এ দিন শুধু ১ নং গেট দিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢোকা গেছে। সচিবালয়ের সব বাস চালু ছিল না। এজন্য অনেককেই হেঁটে অথবা রিকশায় অফিসে আসতে হয়েছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement