১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

এবার ভারত থেকে ডিজেল আসবে পাইপলাইনে

-

সরকারি চুক্তির (জি-টু-জি) আওতায় ৬টি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ ছাড়াও বৈঠকে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানিরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ দিন ক্রয় কমিটির বৈঠকে মোট পাঁচটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো: মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬টি দেশের ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইস অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এ তেল আমদানি করবে। প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইসসহ এতে মোট ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮০ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৬ হাজার ৪৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
তিনি জানান, পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মধ্যে ১১ লাখ মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (প্রিমিয়াম হার ৮.৭৫ ডলার); ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল (প্রিমিয়াম হার ১০.৮৮ ডলার); ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল (প্রিমিয়াম হার ৪৬.৭০ ডলার); ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন মোগ্যাস (প্রিমিয়াম হার ৯.৮৮ ডলার) ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন মেরিন ফুয়েল (প্রিমিয়াম হার ৭৬.৮৮ ডলার) রয়েছে। জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- চীনের পেট্রো চায়না ও ইউনিপেক, মালয়েশিয়ার পিটিএলসিএল ও আইওসিএল; ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি; আরব আমিরাতের ইনোক; ওমানের ওকিউটি ও থাইল্যান্ডের পিটিটিটি। সংস্কার সচিব সাংবাদিকদের জানান, ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ের জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরকার মোট যে, জ্বালানি তেল আমদানি করে, তার ৫০ শতাংশ করে জি-টু-জি ভিত্তিতে। বাকি ৫০ শতাংশ স্পর্ট মার্কেট থেকে কেনা হয়। নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে যে ডিজেল কেনা হবে তা জি-টু-জি প্রক্রিয়ায়। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে এই ডিজেল শিলিগুঁড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে সরাসরি আমদানি হবে। প্রিমিয়ামসহ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেলের দাম হবে ২৭৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রতি ব্যারেলের প্রিমিয়াম হলো ৫ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। আর রেফারেন্স প্রাইস ধরা হয়েছে চলতি বছরের ২৮ জুনের দাম।
তিনি জানান, বৈঠকে দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে স্পট মার্কেট থেকে সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি চলতি বছরের ২৩তম এলএনজি কার্গো আমদানি। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১২.৫৮ ডলার (ইতঃপূর্বে কেনা হয়েছে ১৩.৫৫৮ ডলারে) হিসাবে কার্গোটি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৮৩ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি আরো জানান, এ ছাড়া বৈঠকে রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের মধ্যে চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন করে দু’টি লটে (৩য় ও ৪র্থ) মোট ৮০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির দু’টি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ২৭৫.৫০ ডলার হিসেবে ৮০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ২৬০ কোটি ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement