ফের ফাইনালে আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনা ২-০ কানাডা; (আলভারেজ, মেসি)- ক্রীড়া ডেস্ক
- ১১ জুলাই ২০২৪, ০০:৩৩
ইকুয়েডরের সাথে টাইব্রেকারে জেতা ম্যাচের প্রথম একাদশ থেকে তিনজনকে বাদ দেয়া। এদের বিকল্প হিসেবে অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, জুলিয়ান আলভারেজ ও গনজালো মনটিয়ালকে দিয়ে সেমিফাইনালের একাদশ সাজান কোচ লিওনেল স্কালোনি। এবারের কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার শিরোপা ধরে রাখার মিশনে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে পেয়েছিল কানাডাকে। কনকাকাফ অঞ্চলের এই দেশকে ২ গোলে হারিয়ে যাত্রা শুরু নিওনেল মেসিদের। গতকাল ভোরে সেমিতে প্রতিপক্ষ সেই উত্তর আমেরিকান দেশ কানাডা। স্কোর সেই একই। ২-০। তফাতটা হলো কাল গোল পেয়েছেন মেসি। তার গোলেই ফাইনাল নিশ্চিত ১৫ বারের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নদের। এ নিয়ে গত ছয়টি কোপা আমেরিকার চারটিতেই ফাইনালে খেলছে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সোমবার সকাল ৬টায় ফাইনালে আর্জেন্টিনা পাচ্ছে কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের মধ্যকার জয়ী দলকে। আজ ভোরেই কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল।
প্রথম ম্যাচের মতো এই খেলাতেও আর্জেন্টিনার গোল উৎসব কাতার বিশ্বকাপে ৪ গোল করা জুলিয়ান আলভারেজকে দিয়ে। ২১ মিনিটে ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার রদ্রিগো ডি পলের লব থেকে আসা বলের দখল নেন। এরপর গায়ে গায়ে লেগে থাকা কানাডার ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলেন। সামনে তখন আগুয়ান গোলরক্ষক। আলভারেজ ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠানোর কাজটি করেন গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল প্লেস করে। আর্জেন্টিনা দলের স্ট্রাইকিং পজিশনে তুমুল ফাইট চলছে আলভারেজ ও লাউতারো মার্টিনেজের মধ্যে। দু’জনই গোল পাচ্ছেন। ফলে একেক দিন একেক জন একাদশে খেলছেন পরস্পরের বদলি হিসেবে। কানাডার বিপক্ষে প্রথম খেলায় দু’জনই জালের নিশানা পান। সে দিন আলভারেজের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন লাউতারো। ইন্টার মিলানের এই স্ট্রইকার এরপর চিলির বিপক্ষে একটি এবং পেরুর বিপক্ষে জোড়া গোল করেন। তবে ইকুয়েডরের বিপক্ষে একাদশে চান্স পেয়েও গোল না পাওয়ায় কাল ১১ জনের বাইরে ছিলেন। পরে লাউতারো ৭৮ মিনিটে মাঠে আসেন আলভারেজের জায়গায়। যদিও সেমিতে তিনি গোল পাননি। অবশ্য এর পরও ৪ গোল দিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে কাতার বিশ্বকাপে কোনো গোলের দেখা না পাওয়া মার্টিনেজ।
আর্জেন্টিনা লিড নিলেও কাল ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার মতো চান্স কিন্তু প্রথমে কানাডাই পেয়েছিল। ৪ ও ৬ মিনিটে তাদের দু’টি প্রচেষ্টা বিফলে যায় শট পোস্টে না থাকায়। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে সমতার খুব কাছে চলে গিয়েছিল ইতিহাস গড়ে এই প্রথম কোপা আমেরিকার সেমিতে খেলা দলটি। থ্রো-ইন থেকে পাওয়া সেই চেষ্টা সফল হতে দেননি গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। জোনাথন ডেভিসের খুব কাছ থেকে নেয়া শট কর্নার করেন তিনি।
১-০তে প্রথমার্ধে শেষ হওয়ার পর ৫১ মিনিটে গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। মেসি-রদ্রিগো ডি পলের পা ঘুরে বল বক্সে আসে। সেখানে কানাডার ডিফেন্ডার ঠিক মতো ক্লিয়ার করতে পারেননি বল। সেই বল এনজো ফার্নান্দেজের কাছে যায়। গত বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল করা এই মিডফিল্ডার মাটিঘেঁষা শট নেন পোস্টে। সে বলে হালকা পায়ের ছোঁয়া লাগিয়ে কানাডার গোলরক্ষক মেক্সিমো কিরিপিয়েউকে বোকা বানান মেসি। এতে এবারের কোপা আমেরিকায় প্রথম গোলের দেখা পেলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে জাতীয় দলের জার্সিতে ইরানের আলী দায়িকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেছেন মেসি। আলী দায়ির গোল ১০৮ টি। মেসির ১০৯টি। মেসির সামনে এখন পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (১৩০)। অবশ্য প্রথমার্ধে মেসির তিনটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দু’টি যায় পোস্টঘেঁষে। অপরটি ঠিকানা ছিল বার উঁচিয়ে। এ ছাড়া ডি মারিয়ার একটি চিপ করা বল ক্রসবারে বাতাস দিয়ে বাইরে যায়। ২০২১ কোপা আমেরিকার ফাইনালে
ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়সূচক গোল করা ডি মারিয়া এবার এখনো গোলশূন্য।
২-০তে এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনার কোচ এই স্কোর লাইনকেই যথেষ্ট মনে করেছিলেন। তাই তিনি একে একে ৫ খেলোয়াড় বদল করেন। ডি মারিয়া, আলভারেজ, মন্টিয়াল, ম্যাক অ্যালিস্টারদের তুলে নেন। অন্য দিকে কানাডা শেষ ছোবল মারার অপেক্ষায় ছিল। তাদের সেই প্রচেস্টা সফল প্রায় হয়েই যাচ্ছিল। হাতে পায়ে সমান তালে বল ঠেকানোতে দক্ষ এমিলিয়ানের মার্টিনেজ চীনের প্রাচীর রূপে আবির্ভূত হওয়ায় হতাশ হতে হয় কোচ জেসেস মার্চেসেরে দলকে। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারদের ভুলে বল পেয়ে ৮৯ মিনিটে টানি ওলুয়াসেলি গোলে শট নেন। সে শট বাম পা দিয়ে আটকে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পরের মিনিটেই ওলুয়াসেলির ফাঁকা ফ্লিক করা হেড পোস্টের খুব কাছ দিয়ে যায়। হারের ফলে কানাডাকে এখন তৃতীয় স্থানের জন্য লড়তে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা