৩ ইস্যুতে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত
শরিকদের সাথে কাল থেকে সিরিজ বৈঠক- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারতের সাথে দেশবিরোধী চুক্তি ও সরকারের নানামুখী দুর্নীতির প্রতিবাদে কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কর্মসূচির সার্বিক বিষয় চূড়ান্ত করতে আজ দলের যুগ্ম মহাসচিব এবং আগামীকাল থেকে যুগপৎ আন্দোলনে মিত্রদের সাথে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করবে বিএনপি।
জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে গণঅনশন, স্বেচ্ছা কারাবরণসহ কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। আর প্রাথমিকভাবে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দলের যুগ্ম মহাসচিব এবং যুগপতের মিত্রদের সাথে বৈঠকে তাদের মতামত নিয়ে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করায় স্থায়ী কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে। এ ইস্যুতে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিভিন্ন দল ও জোটের সাথে সমন্বয় করে প্রায় এক বছর যুগপৎ আন্দোলন করে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ায় সব মিলিয়ে ৪০টির মতো রাজনৈতিক দল যুক্ত ছিল। বিএনপি ও মিত্র দলগুলোর আন্দোলন এবং বর্জনের মধ্যেই গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মাধ্যমে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত যুগপৎভাবে কোনো কর্মসূচি হয়নি। এ নিয়ে শরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অবশ্য যুগপৎ আন্দোলন শুরু না হলেও নির্বাচনের পর থেকেই নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে যুগপতের মিত্র দল ও জোটগুলো। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ পড়ে পড়লে তার মুক্তির দাবি সামনে নিয়ে আসে বিএনপি। এই ইস্যুতে গত ২৯ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা শহরে তিন দিনের সমাবেশের কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ, রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানসহ সরকারসংশ্লিষ্ট অনেকের দুর্নীতিতে চারদিকে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। একই সাথে সরকার সম্প্রতি ভারতের সাথে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে তা দেশবিরোধী। বিদ্যমান এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী দল হিসেবে চুপ থাকার সুযোগ নেই। এসবের প্রতিবাদে কর্মসূচিতে যাওয়া সময়েরই দাবি।
চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই আগামীতে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন করে মিত্রদের সাথে বসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে চার দলীয় জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরাম (মন্টু) ও এনডিএমের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে যুগপতের অন্য শরিকদেরও মতামত নিবে বিএনপি।
তবে এর আগের দুটি বৈঠকে বিএনপির কাছে ‘সম্ভাবনাময়’ বিগত আন্দোলন সফল না হওয়ার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান এবং আগামী দিনের লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে জানতে চেয়েছিল যুগপতের গুরুত্বপূর্ণ জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। সেগুলোর এখনো সদুত্তর পায়নি তারা। তাই আগামীর বৈঠকে কর্মসূচি ছাড়াও এগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এদিকে মিত্রদের সাথে বৈঠকে বসার আগে আগামীর আন্দোলন ইস্যুতে দলের যুগ্ম মহাসচিবদের মতামত নিবে বিএনপি। এর আগে গত ১৫ জুন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে ৪৫ নেতাকে পদায়নের পর যুগ্ম মহাসচিবদের সাথে বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে আন্দোলন সংক্রান্ত বেশ কিছু কর্মসূচির বিষয়ে প্রস্তাব করেন নেতারা।
দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, নজিরবিহীন দুর্নীতি, দেশের ও বাইরের ব্যাংকগুলো থেকে ঢালাও ঋণ গ্রহণের ফলে ঋণ ফাঁদ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনগণের ওপর চাপ বাড়ছে। এসব বিষয়কে নিয়ে বিস্তারিত তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন তৈরি করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দুই বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, সরকার সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে ভারতের ওপর প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা