১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বন্যার আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে ভারতের নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনাশ কে ত্রিপাঠি : বাসস -

চলতি বছরের আগষ্ট মাসে দেশে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বন্যার বিষয়ে সতর্ক থাকার এবং আগাম প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা সচিব। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বলেছেন, বন্যা হতে পারে, পূর্বাভাস সেরকম পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বাজেট বাস্তবায়ন বাড়াতে অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত নতুন অর্থবছরের প্রথম জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. এমদাদউল্লাহ মিয়ান, কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী এবং তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নসহ ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহতায় থেকে ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১০৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে সিনিয়র সচিব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এবার বন্যার আশঙ্কা আছে। বৃষ্টির প্রভাব পড়বে। সবাইকে বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশেষ করে দেশের মানুষকে বন্যা থেকে রক্ষার জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কাজের মান নিশ্চিত করতে সবারই দায়িত্ব আছে। আগামী ৪ জুন সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। যাতে প্রকল্পের কাজ দ্রুত হয়। এসব বিষয় লক্ষ রেখে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের দিকে উন্নয়নশীল দেশে চলে আসব আমরা। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ঢাকা অঞ্চলের কৃষির উন্নয়ন প্রকল্প, বরগুনা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রায়পুরা ১২০ মেগাওয়াট এসিপিক গ্রিড টাইড সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট ও চট্টগ্রাম স্থাপন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (প্রথম সংশোধিত), কুমিল্লা-সালদা ও কসবা (সৈয়দাবাদ) সড়কে (এন-ট১১৪) জাতীয় মহাসড়ক মানে উন্নীত করা, নগরাঞ্চলের ভবন সুরক্ষা প্রকল্প, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়, দ্বিতীয় সংশোধিত), দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের থানার প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অন্যদের জন্য মডেল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে অন্যদের জন্য ‘মডেল’ এবং ‘উদাহরণ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন- কেননা উভয় দেশ আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করেছে। ভারতের নৌবাহিনীপ্রধান এডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠি গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবন কার্যালয়ে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল সীমানা ও সমুদ্রসীমা সমাধানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এগুলোর (সমাধান) সমন্বয়ে এই উদাহরণ তৈরি করা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, “আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণের সহায়তা ও অবদান সবসময় স্মরণ করি।”
ভারতের নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে নিজের বাড়ির মতো অনুভব করছেন। কারণ প্রকৃতিগত দিক থেকে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
বাংলাদেশের অনেক নৌ কর্মকর্তা ভারতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন উল্লেখ করে এডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী বলেন, তিনি তার বাংলাদেশী সমকক্ষকে বলেছেন, বাংলাদেশ চাইলে আরও অফিসার পাঠাতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement