আন্দোলনে সহিংসতা যুক্ত হলে খবর আছে

গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মাঠের রাজনীতিতে বিএনপি একেবারে চুপচাপ ছিল। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনেও অংশ নেয়নি দলটি। সম্প্রতি দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আবারো সরব হয়ে উঠেছে মাঠের প্রধানবিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা। আন্দোলন চাঙা হওয়ার আগেই বিএনপি ও তার মিত্রদের গতকাল কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আন্দোলন করছেন, করেন। তবে আন্দোলনে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে খবর আছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বড় বড় কথা বলে। তাদের আন্দোলন ভুয়া। বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। মধ্যরাতে টেমস নদীর পাড় থেকে ফরমান আসে। একজন গেলো, আরেকজন এলো, মধ্যরাতের ফরমান। তারেক রহমানের এ ফরমানে ফখরুল ইসলাম, গয়েশ্বর বাবু কোথায় যান? কেউ জানে না। তিনি বলেন, লন্ডনে বসে কর্মসূচি দেয় মেড ইন লন্ডন। নতুন নেতৃত্ব পাঠায় ফরমান আকারে। লন্ডনে বসে নেতা বানায়, কর্মসূচি দেয়। এই মেড ইন লন্ডন কর্মসূচির মানে কী? খেলা কিন্তু হবে, ছেড়ে দেয়া হবে না।
দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আবারো কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সব দেশের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতার লোভে যে কোনো দেশের দাসত্ব করতে পারে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী আওয়ামী লীগ। ৭৫ বছর এই সংগঠন দলের বয়স। দীর্ঘ সংগ্রাম, আন্দোলন, ঝড়, অন্ধকার, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দীপ্ত পায়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই। আমরা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা ওড়াই। আমাদের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। আমাদের জন্ম জনতার মাঝ থেকে। আমরা অস্ত্র উঁচিয়ে শেষ রাতে ক্ষমতা দখলকারী দল নই। জনগণের মাঝে জনগণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বলেছিলাম প্লাটিনাম জয়ন্তী বছরব্যাপী উদযাপন করব। সেখানে খবর হয় আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি করছি। গতকাল (শুক্রবার) আমরা সাইকেল র‌্যালি করেছি, বিএনপির কী কিছু ছিল? তাহলে কেন এই অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন? আমরা সারা বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করব। আমাদের কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে। আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। সে সমাবেশে শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা-৬ আসনের এমপি সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।