০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫
`

রাখাইনে জান্তার বিমান হামলা এপারে আতঙ্ক

-


মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সঙ্ঘাত চলছে। ওপারের বেশ কিছু সীমান্ত চৌকি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে। রাখাইনে যুদ্ধের কারণে এপারের সীমান্তের টেকনাফের নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, কুলালপাড়া, খাংগার ডেইল, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাংয়ের মগপাড়া, আছারবনিয়া, ডেগিল্লাবিল, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ায় মর্টারশেল, বিমান হামলা ও বোমার বিকট শব্দে বাড়িঘর কাঁপছে। চরম আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। ফোনে রাখাইনের সুদাপাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল জানিয়েছেন, এখনো মিয়ানমারে তীব্র লড়াই চলছে। সকাল থেকে গ্রাম খালি করতে মাইকিং করা হচ্ছে। লোকজন না সরায় যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। গইন্যাপাড়া ও গজ্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলেও ওপারে মংডুতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটছে। অনেকে আবার এপারে আসতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শুনেছি।

এ দিকে রাখাইনে সঙ্ঘাতের কারণে নতুন করে বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে কোস্ট গার্ড এবং বিজিবি। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি চলছে। এ কারণে এপারে বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সীমান্তবর্তী লোকজনের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে যাতে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে না পারে সেজন্য সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ওপারে সঙ্ঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মিয়ানমারে চলমান সঙ্ঘাতে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্তে বসবাসকারীদের খোঁজখবর রাখছি।

উখিয়ায় ছুরিকাঘাতে এক রোহিঙ্গা নিহত : উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮ ইস্ট ডি-৭৬ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মোহাম্মদ সালেক। সে ওই ক্যাম্পের মোহাম্মদ নুর আলমের ছেলে। সূত্র জানিয়েছে, ভোরে মোহাম্মদ সালেক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-৫০ ব্লক থেকে তার নিজস্ব ব্লকে আসার সময় পথে তিন-চারজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী তাকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের রোহিঙ্গারা তাকে উদ্ধার করে পার্শ¦বর্তী এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হয়। উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়না তদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।


আরো সংবাদ



premium cement