১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়াকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে আফগানিস্তান

-

প্রথমবারের মতো নিজেরা সেমিতে যাওয়ার পাশাপাশি আফগান এবং অসিদের বাদ করতে পারত নাজমুল শান্তর দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাইগার সমর্থকদের হতাশই হতে হলো। সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকেও। সুপার এইটের তিন ম্যাচেই হারের স্বাদ পেলেন শান্ত-লিটন-সাকিবরা। টাইগার ব্যাটারদের নিজেদের বোলিং তোপের মুখে ফেলে সব ধরনের সমীকরণকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ৮ রানের জয় ছিনিয়ে নিল আফগানিস্তান। বাংলাদেশের এই হারের ফলে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বকাপের চলতি আসর থেকে বাদ পড়ল অস্ট্রেলিয়াও।
নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেও শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ। বোলিং নৈপুণ্যে ৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান। এই জয়ের মাধ্যমে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে রশিদ খানের দল। বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না, জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২০ বলে ১১৬ রান। তবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে এই রানটা ৭৩ বলের মধ্যে টপকাতে হতো টাইগারদের। এমনটা করতে পারলে ইতিহাসও গড়তে পারত বাংলাদেশ! কিন্ত হলো না, শেষ পর্যন্ত টাইগাররা ১৭.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১০৫ রানই করতে পারে।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ব্যাট হাতে শুরুটা দারুণ করেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ১১তম ওভারে ৫৯ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে গুরবাজের ব্যাট থেকেই। এরপর আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে সঙ্গী করে দলের হাল ধরেন জাদরান। ১৬তম ওভারে ভাঙে এই জুটিও। এরপর যেন ব্যাট হাতে বেশ নড়বড়ে হয়ে পড়ে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বোলাররাও যেন নিজেদের ফর্ম ফিরে পান, দুর্দান্ত বোলিং করে একের পর এক উইকেট শিকার করেন। শেষে রশিদ খানের ১০ বলে অপরাজিত ১৯ রানের ক্যামিও ইনিংসের মাধ্যমে ১১৫ রান জমা হয় আফগানদের রানের খাতায়।

বাংলাদেশের সামনে সেমির টিকিট পেতে হলে সমীকরণটা ছিল ১১.৪ থেকে ১৩.৪ ওভারের মধ্যে জিততে হবে, লক্ষ্যের ওপর নির্ভর করবে ওভারের মাত্রা। আফগানদের ১১৫ রানে আটকে ফেলার পর তা ঠিক হলো ১২.১ ওভার। বাংলাদেশ শুরুটা করেছিল সে লক্ষ্যেই, প্রথম ওভারেই লিটন দাস তুললেন ১৩ রান। তবে ওপাশ থেকে তানজিদ তামিম সাজঘরে ফেরত গেলেন, এরপর একে একে গেলেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ও সাকিব আল হাসানও। বল হাতে দারুণ সাকিব তো ব্যাট হাতে হজম করলেন গোল্ডেন ডাকের লজ্জা।
উইকেটের একপাশে দাঁড়িয়ে সঙ্গীদের আসা যাওয়ার মিছিল দেখছেন লিটন, কি-ই বা করার ছিল তার। একটা সময় সেমির টিকিটের জন্য টাইগারদের দরকার ছিল ১৯ বলে ৪৩ রান। টি-২০র যুগে এই রান তো তাড়া করাই যায়, এমন রেকর্ড তো কতই আছে। কিন্তু বাংলাদেশ পারল না!
ইনিংসের ১০ম ওভারে স্ট্রাইকে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দেশসেরা ফিনিশার যাকে বলা হয়, একা হাতে এই বিশ্বকাপেও যিনি দলের জন্য জয় তুলে এনেছেন, সেই তিনিই নুর আহমেদের ওভার থেকে নিতে পারলেন ৪ রান। সেমির স্বপ্ন তখনই শেষ বাংলাদেশের। এরপর তারা ধুঁকে ধুঁকে এগোতে থাকে ম্যাচটা কোনোমতে জেতার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তা হয়নি।
ইতিহাসের দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে টি-২০ বিশ্বকাপে ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করার কীর্তিটা গড়ে লিটন দাসের কি লাভ হলো। দল তো ম্যাচটাই হেরে গেছে। একই সাথে বিশ্বকাপের মঞ্চে আফগানদের কাছে বাংলাদেশের কখনো না হারার দম্ভটাও ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান ইনিংস : ১১৫/৮ (গুরবাজ ৪৩, ইব্রাহিম ১৮, ওমরজাই ১০, গুলবাদিন ৪, নবি ১, জানাত ৭*, রশিদ খান ৩*, তাসকিন ১/১২, মোস্তাফিজ ১/১৭, রিশাদ ৩/২৬)।
বাংলাদেশ ইনিংস : ১৭.৫ ওভারে ১০৫/১০ (লিটন ৫৪*, তানজিদ ০, শান্ত ৫, সাকিব ০, সৌম্য ১০, হৃদয় ১৪, মাহমুদুল্লাহ ৬, রিশাদ ০, তানজিম ৩, তাসকিন ২, মোস্তাফিজ ০, নাভিন ৪/২৬, ফজলহক ১/১৫, রশিদ ৪/২৩, নাইব ১/৫)।
ফল : আফগানিস্তান বৃষ্টি আইনে ৮ রানে জয়ী।


আরো সংবাদ



premium cement