প্রথম ফাইনালের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান
- জসিম উদ্দিন রানা
- ২৬ জুন ২০২৪, ০১:৪৯
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠার লক্ষ্য নিয়ে টি-২০ বিশ^কাপ নবম আসরের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ও টি-২০ বিশ্বকাপ মিলিয়ে সাতবার সেমিফাইনালে খেললেও ফাইনালের মঞ্চে ওঠার সুযোগ হয়নি প্রোটিয়াদের। চোকার্স উপাধি ঘোচাতে মরিয়া অষ্টমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্য দিকে ফাইনাল ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো ইভেন্টের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়া আফগানিস্তান।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে আগামীকাল বৃহস্পতিবার টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান। এখন পর্যন্ত টি-২০তে দু’বার মুখোমুখি হয়েছে দল দু’টি। দু’বারই বিশ^কাপের মঞ্চে দেখা হওয়া ম্যাচে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। ২০১০ সালে ৫৯ রানে এবং ২০১৬ সালে ৩৭ রানে জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় সেমিতে মুখোমুখি হবে ভারত-ইংল্যান্ড।
এবার গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের সবটিতে জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে ছিল তারা। সুপার এইটেও যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শতভাগ সাফল্য নিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি-২০ বিশ^কাপের সেমিফাইনালে ওঠে প্রোটিয়ারা। টানা সাত ম্যাচ জয়েও বিশ্বকাপের ইতিহাসে শীর্ষে।
তবে টানা সাত জয়ের মধ্যে ছয়টিতে ঘাম ঝরিয়ে ও ভাগ্যের জোরে জিততে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু সেমির মঞ্চে শ্বাসরুদ্ধকর জয় চান না প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। দাপুটে জয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখানোর স্বপ্ন মার্করামের, ‘সেমিফাইনালে উঠতে পারাটা সৌভাগ্যের এবং তৃপ্তির। সেমিতে দাপটের সাথে জিততে চাই। আগের সাত ম্যাচে অনেক ভুল করেছি। সেমিতে এর পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। তবে এটি সত্যি চলতি আসরে আমরা এখন পর্যন্ত দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। বোলিং ইউনিট দুর্দান্ত করেছে। পাশাপাশি ব্যাটিং ইউনিট সময়মতো নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আশা করি, সেমিতে আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব। নিজেদের সেরাটা দিয়েই ফাইনালে জায়গা করে নিবে।’
এবারো কি ‘চোকার্স’ শব্দকে নিজেদের সাথে আরো জোরাল করবে প্রোটিয়ারা? এমন প্রশ্নের জবাবে মার্করাম বলেন, ‘অতীতের পরিসংখ্যান নিয়ে আমরা ভাবছি না। সামনে এখন নতুন একটি ম্যাচকে ঘিরেই সব পরিকল্পনা। আফগানিস্তান খুবই ভালো দল। বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছে তারা। আমরাও আফগান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত।’
এ দিকে গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে আফগানিস্তান। প্রথম তিন ম্যাচে নিউজিল্যান্ড, উগান্ডা ও পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে। শেষ ম্যাচে হার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সুপার এইটে উঠে আরো বড় চমক দেখায় তারা। ভারতের কাছে হারলেও, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর গতকাল নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে বৃষ্টি আইনে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ করে নেয় আফগানরা।
স্বপ্নের মতো লাগছে আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের, ‘বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা, দল হিসেবে এটি আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। আমরা যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর বিশ্বাসটা ফিরে পেয়েছি। এটি অবিশ্বাস্য। অনুভূতি বোঝানোর মতো ভাষা নেই। এত বড় অর্জনে দেশের সবাই নিশ্চিতভাবেই আমাদের নিয়ে অনেক খুশি।’
গ্রুপ পর্ব, সুপার এইটের পর এবার সেমিফাইনালেও বাজিমাত করতে চায় আফগানিস্তান। ফাইনালের টিকিট পেতে মরিয়া রশিদ বলেন, ‘আমাদের সামনে ফাইনালে খেলার সেরা সুযোগ এসেছে। ফাইনাল ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না। পুরো দল উজ্জীবিত ও আত্মবিশ^াসী। সেমিফাইনালে সেরা ক্রিকেট খেলতে মরিয়া তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা শক্তিশালী দল, কিন্ত আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে জয় পাওয়া অসম্ভব নয়। ক্রিকেটে দিন বলেও একটা কথা থাকে, সেটি যেন আমাদেরই হয়।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা