বগুড়ায় দুই যুবককে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
- বগুড়া অফিস
- ২০ জুন ২০২৪, ০০:৪৮
বগুড়ায় ঈদের রাতে আওয়ামী লীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সাথে মোটর সাইকেলের ধাক্কার জের ধরে গুলির পর নৃশংসভাবে কুপিয়ে শরিফ (২৫) ও রুমন (২২) নামে দুই বন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আরেক বন্ধু গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশি হেফাজতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা টিপু, শ্রমিকনেতা মিঠু ও পৌর কাউন্সিলর হিমুসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলার পর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠুসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার রাত ২টার দিকে সদরের পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের নিশিন্দারা চকড়পাড়া এলাকায় এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, ওই এলাকার দুদু শেখের ছেলে নোমান আহমেদ ওরফে শরিফ (২৫) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে রুমন আহম্মেদ ওরফে রুমন (২২)। তারা দুজনই পেশায় ওয়েলডিং মিস্ত্রি। তাদের লাশ শজিমেক হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ আহত যুবক একই এলাকার বাদল সরকারের ছেলে হোসাইন ওরফে বুলেট (২১)।
জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, শ্রমিক নেতা ও পৌর কাউন্সিলরসহ ২৮জন আসামি : ঈদের রাতে জোড়া খুনের ঘটনায় জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের ১নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু (৫০), পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ মেহেদী হাসান। হিমু (৫০) ও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু। (৬০) সহ ২৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারে ১৩ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে বগুড়া সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন নিহত শরীফের মাতা হেনা বেগম। এ মামলার প্রধান আসামি মিঠুসহ চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অপর তিনজন হলেন, নিশিন্দারা খাঁপাড়া এলাকার শেখ সৌরভ, নিশিন্দারা পূর্বপাড়া এলাকার নাঈম হোসেন এবং সুলতানগঞ্জপাড়ার আজবিন রিফাত। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত শরীফের মামাতো ভাই আবদুর রহিম বলেন, ঈদের দিন বিকালে সুলতানগঞ্জপাড়া গোয়ালগাড়ী এলাকায় সরু সড়কের পাশে সৈয়দ সার্জল আহমেদ টিপুর গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। এমন সময় রোমান মোটর সাইকেল নিয়ে চকরপাড়া ফিরছিলেন। রাস্তা পার হতে অসুবিধে হওয়ায় টিপুর গাড়িচালকের সাথে রোমানের বাকবিতণ্ডা হয়। বিতণ্ডার জেরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরশ্রমিক নেতা সৈয়দ কবির আহম্মেদ, তাঁর ভাই সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ, সার্জিলের ভায়রা ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শাহ মেহেদি হাসান হিমুর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন চকরপাড়া এলাকায় যান। তারা রোমান ও শরীফকে ডেকে নেয়। বান্বিতণ্ডার একপর্যায়ে রোমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রতিবাদ করলে শরীফকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তারা গুলি ছুড়ে ঘটনাস্থল ছাড়েন। গুলিতে হোসেন নামের শরীফের এক বন্ধু আহত হন। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইয়ান ওলিউল্লাহ বলেন, বগুড়ার নিশিন্দারা এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনায় ১৩জন নামীয় এবং অজ্ঞাত ১৪-১৫জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদি নিহত শরীফের মা হেনা বেগম। এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু (৬০), শেখ সৌরভ (২৬), আজবীন রিফাত (১৯) ও নাইম হোসেনকে (২৮) গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত কারাগারে পাঠায়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলির খোসা পাওয়া গেছে। এর আগে ঈদের দিন বিকেলে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি এবং সাবেক পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সার্জিল আহম্মেদ টিপুর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মেয়ের গাড়ীর সাথে মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগলে শরিফ ও রুমনের কথা-কাটাকাটি হয়। এই তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ঈদের রাত ১টার দিকে তাদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ওই জনপ্রতিনিধি ও তার ২০ থেকে ২৫ জন লোক এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা