১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের পেট্রো-ডলার চুক্তির অবসান

-

বিশ্বব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ৫০ বছরের পেট্রো-ডলার চুক্তিটি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। গত ৯ জুন রোববার চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে সমঝোতা না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের দীর্ঘ ৫০ বছরের পুরনো এই পেট্রো-ডলার চুক্তিটির অবসান ঘটেছে। এর ফলে সৌদি আরব এখন থেকে ইউরো, ইয়েন, ইউয়ান, চীনা আরএমবিসহ বিভিন্ন মুদ্রায় তাদের অপরিশোধিত তেল বিক্রি করতে পারবে। গত ৫০ বছর ধরে তারা কেবল মার্কিন ডলারেই এই বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল। সিয়াসত ডেইলি ও গার্ডিয়ান।
এক্সে ব্রিকস নিউজ এক পোস্টে লিখেছে, ‘নতুন কোনো সমঝোতা না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের ৫০ বছরের পুরনো পেট্রো-ডলার চুক্তিটি শেষ হয়ে গেছে।’ এতে আরো বলা হয়, ‘সৌদি আরব এখন থেকে কেবলমাত্র মার্কিন ডলারের বদলে চীনা আরএমবি, ইউরো, ইয়েন, এবং ইউয়ানসহ বিভিন্ন মুদ্রায় তেল বিক্রি করবে।’
পেট্রো-ডলার কোনো মুদ্রার নাম নয়। অপরিশোধিত তেল রফতানি মার্কিন ডলারে হয় বলে এর এই নামরকরণ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭০-এর দশকে এই সুবিধাটি লাভ করে। মধ্যপ্রাচ্যের তেল রফতানিকারক দেশগুলো ওই সময় থেকে কেবল মার্কিন ডলারের মাধ্যমে তেল রফতানি করে আসছে। ফলে বিশ্ব অর্থনীতি এবং ভূরাজনীতিতে ডলার বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে যায়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণের বিনিময়ের মাধ্যমে ডলারের মূল্যবান নির্ধারণ করত। প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ধরা হতো ৩৫ ডলার। কিন্তু ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ত্যাগ করে। পেট্রো-ডলার সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে। তবে চুক্তিটি সই হয় ১৯৭৪ সালের ৮ জুন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এবং সৌদি আরবের প্রিন্স ফাহদ ইবনে আবদেল আজিজ চুক্তিটি করেন। দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা হিসেবে চুক্তিটি হয়।
চুক্তিটিতে নিশ্চিত করা হয় যে ওপেক সদস্যরা তেল বিক্রি করবে মার্কিন ডলারে। এর বিনিময়ে সৌদি আরবকে সামরিক সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এখন এই চুক্তির অবসানের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা বদলে যেতে পারে।
পেট্রো-ডলার নবায়ন না হওয়ায় বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সিতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ডলারের চাহিদা কমে যেতে পারে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে, সুদের হার আকাশচুম্বি হতে পারে, মার্কিন বন্ড বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে বিশ্বে নতুন সমীকরণের সৃষ্টি হতে পারে। সৌদি আরব এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে চীন এবং ব্রিকস দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে পারে।
দীর্ঘ ৫০ বছর টিকে থাকার পর নতুন করে সমঝোতা না হওয়ায় চুক্তিটির অবসান ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থাই বদলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এতে বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সিতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ডলারের চাহিদা কমে যেতে পারে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, মার্কিন বন্ড বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। উল্টোদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য এটি নতুন একটি সুযোগ এনে দিতে পারে। কারণ তেলবাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখন সৌদি আরব যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারবে। তেমনি চীনসহ ব্রিকস দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আরো ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা ঘোষণা র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের পাকিস্তান টেস্ট দলের কোচের দায়িত্ব ছাড়লেন গিলেস্পি চৌগাছায় গৃহবধূ রাবেয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার ৯০ শতাংশ ধ্বংস করার দাবি ইসরাইলের ইজতেমা ময়দানে সা’দপন্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্মারকলিপি প্রদান ‘শহীদ জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ক্যারিশম্যাটিক লিডার’ ডেঙ্গুতে আরো ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২৪১ গৌরনদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শের দেশ গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে : রাষ্ট্রপতি বানিয়াচংয়ে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলআরোহী নারী নিহত

সকল