দেশের আদালত আজ ৪ মিলিয়ন মামলার ভারে জর্জরিত : প্রধান বিচারপতি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ০০:৪৫
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বাংলাদেশের আদালত আজকে ৪ মিলিয়ন মামলার ভারে জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা রাউন্ড- ব্রেকিং টেকনোলজিকাল ইনোভেশন সিস্টেমের ওপর ফোকাস করছি এবং মামলা নিষ্পত্তির জটিলতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন জুডিশিয়ারি অ্যাকরোস দ্য বর্ডার্স (টুয়েন্টি ফার্স্ট সেন্সুরিস চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সেস ফরোম হিমালয়াস অ্যান্ড বিওয়ান্ড’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি ওই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভুটান ও নেপাল কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতিদানের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন।
পিপলস জুডিশিয়ারি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পিপলস জুডিশিয়ারি ধারণাটি এমন একটি ধারণা, যা সংখ্যালঘুসহ সব নাগরিকের সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে এবং সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারগুলো রক্ষা করে। তিনি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার মূল সমস্যা উল্লেখ করে তা থেকে উত্তরণের উপায় ব্যাখ্যা করিতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশের আদালত আজকে চার মিলিয়ন মামলার ভারে জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা রাউন্ড-ব্রেকিং টেকনোলজিকাল ইনোভেশন সিস্টেমর ওপর ফোকাস করছি এবং মামলা নিষ্পত্তির জটিলতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা আধুনিকায়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি কক্সবাজারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জমি বরাদ্দের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির প্রথম সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি।
আইনমন্ত্রী বলেন, এই অধিবেশন দক্ষিণ এশিয়ার বিচারব্যবস্থার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা নিজেদের মধ্যে সংলাপে অন্তর্ভুক্ত হওয়া, ক্রস বর্ডার ঐক্য গড়ে তোলা এবং বৃহত্তর সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং তা বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাই দেশে আজ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের হাইকোর্টের বিচারপতি লোবজাং রিনজিন ইয়ার্গে। ভুটান হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, ব্যক্তির মানবাধিকার রক্ষায় আইনের শাসনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। তিনি বলেন, দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি যথা : কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এবং সবাই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী, বাস্তবায়ন করা না হলে আইন ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচারের উৎস হয়ে উঠে। তিনি তার বক্তব্যে ভুটানের বিচারব্যবস্থার অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, চট্টগ্রাম বিশব্বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো: জাকির হোসেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা