১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দোষী সাব্যস্ত হলে বেনজীরকে দেশে ফিরতেই হবে : কাদের

-


সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বেনজীর আহমেদ বিদেশে থাকলেও তার বিচার চলবে, দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। সরকার কোনো ছাড় দেবে না।
গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, মামলা, গ্রেফতার-সবকিছু একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে। ‘সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনি কি দেখেছেন কে তুলে দিয়েছে? ফখরুলের অভিযোগ, সে তো সব দিকে ব্যর্থতার দগদগে ক্ষত। সে ব্যর্থ নেতা। সে ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করল, নির্বাচনেও ব্যর্থ, আন্দোলনেও ব্যর্থ। নিজের দলের লোক সংসদে পাঠায়; কিন্তু নিজে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। সে কী বলল, না বলল সব বাস্তবতাবিবর্জিত। সরকার তুলে দিয়েছে, আমি মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই, সরকারের কারা তাকে তুলে দিয়েছে? কোন অথরিটি তাকে তুলে দিয়েছে? বলুন। অন্ধকারে ঢিল ছুড়লে হবে না।

এ সময় বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির খবর তার পদে থাকা অবস্থায় দেশের কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশ না পাওয়ায় সাংবাদিকদের সৎসাহস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বেনজীর রথ্যাবের ডিজি, আইজি ও আইজিপি থাকা অবস্থায়ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাহলে সরকার এখন কেন সে দায় নেবে না- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনি কোন টিভিতে কাজ করেন? বেনজীর কখনো দুর্নীতি করেছে আপনি বলতে পেরেছেন? মিডিয়ায় কে বলেছে? ...আপনারা এটা নিয়ে যদি বলতে পারতেন যে, এই এই দুর্নীতি করছেন। সেই সাহসটা তো দেখাতে পারেননি! এখন সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। আপনি কী করে বলেন সরকার জেনেও এটা গোপন করেছে?
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এ দেশে ’৭৫ পরবর্তীকালে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সৎসাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটি দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী সেটি দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি আরো বলেন, এ দেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি শুরু হয়েছে বিএনপির আমল থেকে। তারা ক্ষমতায় এলে বিএনপি নেতারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এটা দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করছে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দুর্নীতি কোনো দেশে হয় না এই দাবি কেউ করতে পারে না। আমাদের দেশে যিনি প্রধানমন্ত্রী, সরকারপ্রধান তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক- এটা বিশ্বের স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমে ও সৎ জীবনযাপন করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রধান নেতাই দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমান চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলে নেতৃত্ব দেয় সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারে না। তারা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেই বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে হঠাৎ করে ৭ ধারা বাদ দিয়েছে। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, চোরের রাজা মহারাজা হচ্ছে বিএনপি।


আরো সংবাদ



premium cement