বেনজীরের গ্রেফতার বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে : ওবায়দুল কাদের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ জুন ২০২৪, ০১:১৪
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটার তো একটা প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ায় দুদক তদন্ত করছে। দুদক যদি মামলা করে, তারপর আদালত ঠিক করবে গ্রেফতার কবে করবে, কখন করবে, জেলে পাঠাবে। এটা বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে। আমরা সরকার কী আদেশ দিবো?
গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। অনেক গণমাধ্যম জানাচ্ছে বেনজীর সপরিবারে দেশত্যাগ করেছে, তার আগেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এটা জানি না, এটা এখনো পরিষ্কার না। বেনজীর ৩২টি ব্যাংক থেকে ইতোমধ্যে তার টাকা তুলে ফেলেছে বলে শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে যেহেতু আমি অবহিত নই, এটা আইনের বিষয়। দুদক বলছে তারা টের পেয়েছে, দুদক সেটা প্রমাণ করুক।
বিএনপি দুর্নীতিবাজদের তালিকা করবে, এ বিষয়টি সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, লিস্ট করলে তো প্রথমে বিএনপি নেতাদের নাম লিখতে হবে। কারণ দুর্নীতি-লুটপাটের শিরোমণি তারা। বিএনপি নেতাদের নাম আগে আসবে। তারপর অন্য লিস্ট দেখা যাবে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি আমলে হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতি আর লুটপাটের ভবন। এখন তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে। বিএনপি আমলে দুর্নীতি করা দলের কাউকে কি কোনো শাস্তি দিয়েছে তারা? প্রশাসনের কাউকে শাস্তি দিয়েছে? আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তদন্ত হচ্ছে। সরকার, বিএনপির মতো ইমিউনিটি কালচার কখনো গড়ে তোলেনি। ওবায়দুল কাদের নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমি মন্ত্রী যদি দুর্নীতি করি, সেটা কি বিনাবিচারে শেষ হয়ে যাবে? প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর আছে, কারা কী করে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসেও কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বিএনপি বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতন্ত্র পারফেক্ট নয়। আমাদের দেশের গণতন্ত্রও পারফেক্ট দাবি করি না। তবে পারফেক্ট করার পথে আমাদের চেষ্টা আছে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে আন্তরিক। আজকে বিএনপি যারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলে তাদের গণতন্ত্র ছিল কারফিউ গণতন্ত্র। ১৫ ফেব্রুয়ারি হ্যাঁ/না ভোট। বিএনপির ভিতরেই যেখানে গণতন্ত্র নেই সেখানে তারা দেশের গণতন্ত্র কিভাবে আনবে, এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগে যথাসময়ে সম্মেলন হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম কয়বার কত বছরে সম্মেলন না হয়েই বিএনপির মহাসচিব দলের গঠনতন্ত্র ভেঙে। মহাসচিব পদে মির্জা ফখরুলের কি বৈধ অধিকার আছে? সম্মেলন ছাড়া মহাসচিব কত বছর?
দেশের অর্থনীতির ধ্বংস করছে আওয়ামী লীগ সরকার, বিএনপির এমন দাবির প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে অর্থনীতির খারাপ অবস্থা। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে দুর্নীতি, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতির বেসামাল অবস্থা। বাংলাদেশ সেখানে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামাল দিয়ে যাচ্ছে, ভারসাম্য রক্ষা করছে। দেশের অর্থনীতি যদি ধ্বংস হবে তাহলে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক কিভাবে বাংলাদেশকে সম্ভাবনার দেশ হিসেবে সাপোর্ট করছে? সেটা মির্জা ফখরুলদের স্মরণ করে দিতে চাই।
বাংলাদেশ সেবাদাস রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, বিএনপির এমন বক্তব্যের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সেবা দাস কে কার? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কারো সেবাদাস নয়। বিএনপির মুখের বিষ আরো উগ্র হয়েছে। তারা একরাশ ব্যর্থতার স্তূপীকৃত আবর্জনার ওপর দাঁড়িয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগছে। মানসিক অস্থিরতায় তারা সত্য বলতে ভুলে গেছে। মিথ্যার বেসাতি করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা