ভোটারের আকাল অনিয়ম ও সংঘর্ষ
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
- প্রথম ৪ ঘণ্টায় ২০ শতাংশের কম : ইসি
- দুপুরেই ভোট বর্জন ঘোষণা কয়েকজনের
তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও ভোটারের খরা কাটেনি। উল্টো আরো বেড়েছে। ভোটকেন্দ্রে ভোটার অনুপস্থিতের কারণে জালভোটের আধিপত্য, জালভোট দিতে গিয়ে আটক, কিছু জায়গায় সংঘর্ষ, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আটক, আচরণবিধি লঙ্ঘন-অনিয়ম ও ইভিএম মেশিন বিকলসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগে কয়েকটি কেন্দ্রের এজেন্টদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ভোট কারচুপির চেষ্টায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। দু’জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দেবিদ্বারে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী দুপুরে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। আর হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত অবস্থায় মো: এমদাদুল হক নামে এক সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।
এ দিকে এবার ৩৫ শতাংশের কমবেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ভোট পড়ার প্রকৃত তথ্য জানতে আরো কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।
এ নির্বাচনে প্রথম চার ঘণ্টায় ২০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে বলে গতকাল দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো: জাহাংগীর আলম। সচিব বলেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ না করায় এখন পর্যন্ত ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার পুরো তথ্য সংগ্রহ করতে পারছি না। এ জন্য ম্যানুয়ালি তথ্য সংগ্রহ করছি। যে কেন্দ্রগুলোর তথ্য পেয়েছি সেখানে ২০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে, এটা প্রাথমিক তথ্য। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোথাও ১৫, কোথাও ১৬, কোথাও ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বিকেলে ব্রিফিংয়ে বলেন, এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী ছিলেন। ইভিএমে ১৬ উপজেলায় এবং বাকিগুলো ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। অবাধ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এই লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক তৎপর ছিল।
তিনি বলেন, খুবই সীমিত পরিসরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোট কারচুপির চেষ্টায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। দু’জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনেও অধিকাংশ উপজেলার ভোটকেন্দ্রে ছিল ভোটার খরা। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে রাজশাহী, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, রংপুর, নীলফামারী, কুষ্টিয়া, পাবনা, নোয়াখালী, বগুড়া, সুনামগঞ্জ, জামালপুরসহ অধিকাংশ জেলার ভোটকেন্দ্রে সারাদিন ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে।
নির্বাচনের এ ধাপে এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
বগুড়া অফিস, শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বুধবার বগুড়ার তিন উপজেলায় ককটেল বিস্ফোরণ, এজেন্টদের হুমকি, কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ভোট কেনার অভিযোগে গ্রেফতারসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বগুড়া সদরে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়া ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ উঠেছে এবং ব্যালটে প্রতীক সঠিক না হওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। তিন উপজেলাতেই ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল।
নির্বাচন অফিস জানায়, বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ ও শাজাহানপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থীর বরাদ্দকৃত প্রতীকের সাথে ব্যালট পেপারে ছাপানো প্রতীকের মিল না থাকায় প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এ পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অভিযোগকারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতেরুল ইসলাম মামুন অভিযোগ করেন, তিনি ভোট দিতে গিয়ে ব্যালট পেপার হাতে নিয়ে দেখেন নির্বাচন অফিস থেকে বরাদ্দকৃত আইসক্রিম মার্কার সাথে ব্যালটে ছাপানো মার্কার মিল নেই। তিনি এ ব্যাপারে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করে সকাল সাড়ে ১০টায় বগুড়া সদরের ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো: আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
সকালে শহরের দু-একটি কেন্দ্রে কিছু ভোটারকে ভোট দিতে দেখা গেলেও গ্রাম পর্যায়ের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। শহরের জিলা স্কুল ,পিটিআই, ঠনঠনিয়া মাদরাসা, খান্দারসহ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান সফিকের এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদরের নামুজা ইউনিয়নের ধলমোহিনী ও বামনপাড়া ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রার্থী আবু সুফিয়ান সফিকের লোকজনের বিরুদ্ধে। অপর দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান সফিক ও সুলতান মাহমুদ রনির অভিযোগ, অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী শুভাশীষ পোদ্দার লিটনের লোকজন বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করেছে। ভোটার ও এজেন্টদের ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রে আসতে দেয়া হয়নি। আমরা অসহায়। প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। বগুড়া জিলা স্কুলকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মশিউর রহমান জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টায় ভোট কাষ্ট হয়েছে মোট ৩৫টি। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২১৩২টি। এখানে ভোটার রয়েছে শহরের নিউ মার্কেট , থানা রোডসহ ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
শাজাহানপুর : উপজেলার বেশ কিছু স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বারআঞ্জুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস মার্কার প্রার্থী ভিপি সাজেদুর রহমান সাহীনের পক্ষে জাল ব্যালট পেপার কেন্দ্রে সরবরাহ করার সময় সাব্বির হোসেন নামে একজনকে আটক করেছেন কর্মকর্তারা। বনভেটি কেন্দ্রে ভিপি শাহিনের লোকজন জোর করে ভোট নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আমরুল ইউনিয়নের শৈলধুকরী কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের ভোট কেনার সময় ১২ হাজার টাকাসহ সোহেল নামের এক কর্মী ও আরেকজন এজেন্টকে আটক করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বামুনিয়া এলাকা থেকে ভোট কেনার অভিযোগে আরো একজন কে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহীনের পক্ষে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করায় শেরপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল শুভ ইমরান গ্রেফতার করা হয়েছে। বেজোড়া ভোটকেন্দ্র থেকে মোবাইল ফোন রাখার দায়ে দুই এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ : উপজেলার সবদলদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে সাতটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে কেউ আহত হয়নি। পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছে।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দু’টি ভোটকেন্দ্রে চারজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়।
এরা হলেন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মীরা শীল, অঞ্জন দেব ও সিরাজুন নেহার চৌধুরী। তারা শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন ভোটকেন্দ্রে ছিলেন। এ ছাড়া সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রসান্ত কুমার দেবকে প্রত্যাহার করা হয়। তিনি হাউজিং স্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্বে ছিলেন।
দুই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা জানান, আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছিলাম যেন ভোটার আসার আগে কেউ ব্যালট এ সিল না মারেন। কিন্তু তারা আগেই সিল মেরে রেখে দিয়েছিল। পরে ম্যাজিস্ট্রেট এসে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে দেশীয় অস্ত্রসহ চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সকালে ওই ভোটকেন্দ্রের ৭ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
জানা যায়, দোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ৭ নম্বর কক্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফুল ইসলাম জুয়েলের পক্ষে এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুক মিয়া। মাসুক মিয়া ভোট করে ভেতরে থাকা অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।
অভিযোগ পেয়ে ওই কক্ষ পরিদর্শনে আসেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম। এ সময় ওই এজেন্টের আচরণ সন্দেহজনক হলে তাকে আটক করে তল্লাশির নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ তার শরীর তল্লাশি করে ধারালো দেশীয় অস্ত্র (চায়নিজ চাকু) উদ্ধার করে। সেখানে উপস্থিত থাকা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনুমোদনবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে জরিমানা গুনলেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জিল্লুর রহমান তোতা। তিনি বড়াইগ্রাম সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামীম তাবাসসুম প্রভা শ্রীরামপুরে এ জরিমানা করেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর উপজেলার ছয়টি কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষিপ্ত এসব সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মোহনপুরে ১২ জন এবং পবায় ১ জন আহত হন। গতকাল বুধবার সকালে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও দুপুর গড়াতেই দুই উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্রের আশপাশে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের পারিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ফারুক হোসেন ডাবলু ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এমদাদুল হকের সমর্থকদের মধ্যে ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন ছুরিকাহত হলে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল মোমিন (৩০)। তিনি পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের মো: শুকটার ছেলে। আব্দুল মোমিন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এমদাদুল হকের সমর্থক।
অন্য দিকে মোহনপুর উপজেলার সিংহমারা, হাটরা, মহিশকুণ্ডি কেন্দ্রের বাইরে আনারস ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হন।
রাজশাহী ব্যুরো আরো জানায়, রাজশাহীতে উপজেলা নির্বাচনে সিল মারা ব্যালট নিয়ে বুথের মধ্যেই তার সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তার নাম ওমর ফারুক ফারদিন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। গতকাল বুধবার সকালে ভোটগ্রহণ চলাকালে রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে
ছাত্রলীগ নেতা ফারুক ফারদিনের গ্রামের বাড়ি পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামে। ভোট দেয়ার পর ফারুক ফারদিন তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ছবি পোস্ট করেন। এতে দেখা যায়, ছবিটি বুথের ভেতরেই তোলা। ফারদিনের হাতে রয়েছে সিল মারা ব্যালট। এতে আনারস প্রতীকে সিল দেয়া দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরকার অসীম কুমার গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তার নজরে এসেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতা জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর সোনাগাজীতে সিলমারা ব্যালটের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার অপরাধে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইয়াকুব আলীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। অন্য দিকে একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুককে (১৬) জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে আটক করেছে সোনাগাজী থানা পুলিশ।
আজ বুধবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাইয়েদ মো: শাফায়াতের আদালত ওই ছাত্রলীগ নেতাকে জরিমানা করেন। এবং অন্য নেতাকে আটক করেন পুলিশ।
ফেনী অফিস জানায়, ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিভিন্ন ফাঁকা কেন্দ্রে স্কুলছাত্ররাও ভোট দিয়েছে। ফেনী সদরের কিছু কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়লেও দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতে বেশির ভাগ কেন্দ্রই ছিল ভোটারশূন্য। এসব কেন্দ্রে দিনভর জাল ভোটের মহোৎসব চলেছে। সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে অনেকে সরে পড়লেও কোনো কোনো কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল দিনভর। তারা জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টরা যথাক্রমে দোয়াত-কলম, টিউবওয়েল ও কলস প্রতীকের সমর্থক।
পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া-চন্দনাইশ বোয়ালখালী ও আনোয়ার উপজেলায় ভোটারের খরার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট চলাকালে বাইরে দু-একটি ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া মারধরের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পটিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের ঘটনা ঘটে। দুপুর ১২টায় পূর্ব পিঙ্গলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সাময়িকভাবে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে।
এ দিকে চন্দনাইশ উপজেলায় ৩২ .৩২ শতাংশ ভোট পড়ে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা