১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম

কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ, ৬০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি
-

কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দাম। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার হুঁশিয়ারি দিলেও তা কোনো কাজে আসেনি। বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বাড়তি দামেই পণ্য কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ২০০ ছাড়িয়েছে। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজিই। এতে ভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

ক্রেতারা বলছে, সরকার নিত্যপণ্যে দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্দে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেও আদতে তা কোনো কাজে আসছে না। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তেই আছে। কিন্তু আমাদের বেতন তো সেভাবে বাড়ছে না। খাবারের তালিকা ছোট করতে করতে এখন সংসার চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার পাইকারি থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকিতে জোর দিলে সামনে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

জানা গেছে, ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে গত সপ্তাহেই। পাড়া-মহল্লার দোকানে ৫৫ টাকা হালিও বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। প্রান্তিক খামারিরা ডিমের দাম কমা-বাড়া নিয়ে তেজগাঁও আড়ত মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, কিছুদিন আগেই ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়ত মালিকরা। সে সময় সারা দেশে ডিম হিমাগারে মজুদ হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে। বাজারে এখন মাছ-গোশতের দামও বেশ চড়া হওয়ায় আমিষের চাহিদা পূরণে ডিমই ভরসা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত তথা সীমিত আয়ের মানুষের। তবে এ পণ্যটির দাম হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বাজারে এখন প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। কাকরোল, বরবটিরও একই দাম। এমনকি বছরজুড়ে তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া পেঁপের কেজিও এখন ৮০ টাকা। সবজির বাজারে লম্বা বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, গোল বেগুন ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ৬০-৭০ টাকা, করল্লা ৮০-৯০ টাকা, চিচিঙ্গা
৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০-৫০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, শসা ৫০-৬০, ছোট সাইজের মিষ্টি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০, কাঁচাকলা ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গেল সপ্তাহজুড়ে প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া শাকের মধ্যে পাট শাক ১৫-২০ টাকা, কলমি শাক ১০-১৫ টাকা, পালং ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০-৪০ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৩০-৪০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাথের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেশি। এ ছাড়া আদা বা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার কমে মিলছে না। আলুর কেজি গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অপর দিকে অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ-গোশতের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। আবারও কোথাও তা ২৪০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকা। আবারও ৮০০ টাকা ছাড়িয়েছে গরুর গোশতের দাম। খাসির গোশতো বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১ শত টাকা কেজি।
গোশতের মতো মাছের বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সাইজ ভেদে তেলাপিয়া ২২০-২৩০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে শুরু করে সাইজ ভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ। মাছ যত বড় তার দাম ততো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement