১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ নিয়ে যা জানা গেল

-

- তাবরিজে শেষ বিদায়ে মানুষের ঢল
- ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
- জাতিসঙ্ঘে নীরবতা পালনে ক্ষুব্ধ ইসরাইল

ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুুল্লাহিয়ানসহ ৯ জন আরোহীই নিহত হয়েছেন। খারাপ আবহাওয়ার কথা বলা হলেও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি। ইরান-ইসরাইল টান টান উত্তেজনার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্যের জাল। আলজাজিরা ও দ্য ইকোনমিস্ট।
প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি উড্ডয়নের প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। দুর্ঘটনার পেছনে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত আছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এ দুর্ঘটনার পরিণতিতে আঞ্চলিক রাজনীতি ও সামরিক ক্ষেত্রে কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয় কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পশ্চিমা মহল বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
রোববারের এ দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে বৈরী ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তবে এর নেপথ্যে আরো কিছু কারণ নিয়েও চলছে আলোচনা। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ সম্পর্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) বলছে, উঁচু পার্বত্য এলাকা ও গভীর উপত্যকার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় পাইলট বিভ্রান্ত হতে পারেন।
ইএএসএ বলছে, গভীর উপত্যকায় বাতাসের গতি ও দিক আচমকা অপ্রত্যাশিতভাবে পাল্টে যেতে পারে। এ কারণে বাতাসের গতি উল্লেখ করার মতো ওঠানামা করতে পারে। এতে অনেক সময় হেলিকপ্টারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন পাইলট। এ ছাড়া এসব জায়গা দিয়ে চলাচলের সময় কুয়াশা খুবই বিপজ্জনক একটি বিষয়। তবে কাইল বেইলি নামের একজন বেসামরিক বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ বলেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলটরা সহায়তা চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। ফলে কোনো সন্দেহ নেই যে যান্ত্রিক ক্রটির কারণেই হেলিকপ্টারটি নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যার মুখে পড়েছিলেন তারা।
কাইল বেইলি আরো বলেন, আকাশে থাকতে যান্ত্রিক সমস্যার মুখে পড়লে পাইলটের প্রথম কাজ হেলিকপ্টার আকাশে ভাসিয়ে রাখা। এরপরে সহায়তার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা। তবে তার আগেই হয়তো হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। অবশ্য বৈরী আবহাওয়ার কারণেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী ওই হেলিকপ্টারটি ছিল বেল-২১২ মডেলের। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই হেলিকপ্টার ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের আগে কিনেছিল তেহরান। সে হিসেবে এটি বেশ পুরনো। এর আগেও একবার ইরানে এই মডেলের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। হেলিকপ্টারটি অনেক পুরনো মডেলের হওয়াকেও অন্যতম কারণ বলেও মনে করছেন এই বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
এ দুর্ঘটনার পেছনে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত আছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এ দুর্ঘটনার পরিণতিতে আঞ্চলিক রাজনীতি ও সামরিক ক্ষেত্রে কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয় কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পশ্চিমা মহল বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে- ইরান ও ইসরাইলের চিরবৈরী সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পেছনে ইসরাইল জড়িত থাকতে পারে বলে কিছু ইরানি সন্দেহ করছেন। দামেস্কে ইসরাইল কর্তৃক একজন ইরানি জেনারেলকে হত্যা ও পরবর্তীতে ইসরাইলে ইরানের শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনার কারণেই এ তত্ত্বটি অনেকের মনোযোগ কেড়েছে। ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে চোরাগোপ্তা ও নিখুঁত অভিযান চালানোর জন্য ইসরাইলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ব্যাপক পরিচিতি আছে। যদিও ইসরাইলি এই গোয়েন্দা সংস্থা কখনোই কোনো রাষ্ট্রের প্রধানকে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি।
ইকোনমিস্ট বলছে, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইসরাইলের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করার জোরালো কারণ রয়েছে। তা ছাড়া ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের এ ঘটনা এমন এক সময় ঘটেছে; যখন আঞ্চলিক উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে তোলার মতো অনেক বিষয় রয়েছে। লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনজুড়ে ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে ইসরাইল ও হামাসের চলমান যুদ্ধের মাঝে আঞ্চলিক এ পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ এক প্রান্তে পৌঁছেছে। ইরানের নেতৃত্ব নিয়ে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হলে তা এসব গোষ্ঠীকে সঙ্ঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ইসরাইলের এক কর্মকর্তার দাবি, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির নিহত হওয়ার সাথে ইসরাইল জড়িত নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তার উদ্ধৃতি, ‘আমরা জড়িত নই’। রোববার রাতে প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রটতে থাকে, এ ঘটনার সাথে মোসাদ জড়িত। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ইসরাইলের ওই কর্মকর্তা এমন দাবি করেন।
বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দেশটির প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের সন্ধান পায় তুরস্ক থেকে পাঠানো ড্রোন। এ ড্রোনটির নাম বায়রাকতার আকিঞ্জি। রাইসির হেলিকপ্টারের সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছেন তুরস্কের পরিবহনমন্ত্রী আবদুল কাদির উরালোগলু। তিনি বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির সিগন্যাল সিস্টেম চালু ছিল না, অথবা এটিতে তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সেন্টার ফর এভিয়েশন অ্যাক্সিডেন্ট পরিচালিত এক জরুরি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, ইরানের দুর্বলতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তুর্কি পরিবহনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা হেলিকপ্টার থেকে একটি সঙ্কেত পরীক্ষা করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সম্ভবত হেলিকপ্টারটির সিগন্যাল সিস্টেমটি বন্ধ ছিল বা হেলিকপ্টারটিতে সিগন্যাল সিস্টেমই ছিল না। ফলে আমরা তাদের শনাক্ত করতে পারিনি।
তুরস্কের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, তারা গতরাতে ইরান থেকে একটি কল পান যাতে সঙ্কেত শনাক্ত করতে সহায়তা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, আমরা সঙ্কেতটি পরীক্ষা করেছি। তিনি আরো জানান, আমরা জানি না আসলে হেলিকপ্টারটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ছিল না নাকি এটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে হলেও এটি বন্ধ থাকার কথা নয়। সব ধরনের বিমান, বিশেষ করে যেসব হেলিকপ্টার রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের বহন করে সেগুলোতে এই ব্যবস্থা থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তাবরিজে শেষ বিদায়ে মানুষের ঢল
আলজাজিরা জানায়, ইব্রাহিম রাইসির শেষ বিদায়ে মানুষের ঢল নেমেছিল। মঙ্গলবার দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের তাবরিজ শহরে অনুষ্ঠিত এই শোকযাত্রায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। অন্য দিকে পাঁচ দিনের শোক পালন করছে ইরান। নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জন্য শোক জানাতে বিদায়ী মিছিলে হাজার হাজার ইরানি নাগরিক পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে জড়ো হন। হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ ইরানের পতাকা ও মরহুম প্রেসিডেন্ট রাইসির ছবি হাতে নিয়ে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ শহরের কেন্দ্রীয় চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করেন। গত রোববার হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার আগে এখানেই ফিরছিলেন রাইসি।
এ দিকে রাজধানী তেহরান থেকে আলজাজিরার রসুল সরদার মঙ্গলবার বলেছেন, ইরানের রাষ্ট্রীয় মর্যাদাবান ব্যক্তিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া তথা শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানগুলো ‘বেশ কয়েকটি স্থানে এবং বর্ধিত সময়’ নিয়ে হয়ে থাকে। তাবরিজে বিদায়ী শোক মিছিলের পর ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং ৬০ বছর বয়সী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ানের লাশ অন্য অনুষ্ঠানের জন্য রাজধানী তেহরানে স্থানান্তর করা হবে। আজ বুধবার তেহরানে বৃহত্তর পরিসরের অনুষ্ঠানে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নামাজে জানাজায় ইমামতি করবেন এবং বিদায়ী সেই অনুষ্ঠানে বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর প্রেসিডেন্ট রাইসির লাশ উত্তর-পূর্ব ইরানে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে নিয়ে যাওয়া হবে। ইরানের এ শহরেই প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেড়ে উঠেছিলেন। মাশহাদে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলেছেন, তারা পবিত্র এই শহরে রাইসিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দাফনের পরিকল্পনা করছেন।
আগামী ২৮ জুন দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। তবে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যেই ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুখবিরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর মুখবিরের নাম অনুমোদন করেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। এ ছাড়া পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলি বাকেরি কানিকে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে। আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন। সব কিছু ঠিক থাকলে ২৮ জুনই হবে দেশটির ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটির সংবিধানের ১৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুখবির বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত আছেন। সোমবারই তাকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘে নীরবতা পালনে ক্ষুব্ধ ইসরাইল
ইরনা জানায়, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান ও তার সফরসঙ্গীদের স্মরণে সোমবার এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাতিসঙ্ঘে ইসরাইলের স্থায়ী দূত গিলাদ এরদান। জাতিসঙ্ঘে মোজাম্বিকের রাষ্ট্রদূত পেদ্রো কমিসারিও আফনসো মে মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার আহ্বানে অধিবেশনের শুরুতেই নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
কিন্তু এতে ভীষণ বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। সদস্যদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, নিরাপত্তা পরিষদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? তাদের মৃত্যুবার্ষিকীতেও এক মিনিট নীরবতা পালন? এর আগেও ইসরাইলবিরোধী জাতিসঙ্ঘের সদস্যদের প্রতি হিংস্র আচরণ করেছেন এরদান।


আরো সংবাদ



premium cement