আইসিসিতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন
উত্তরাঞ্চলে তীব্র যুদ্ধ চলছে হামাস ইসরাইলের মধ্যে- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২১ মে ২০২৪, ০১:০৪
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তিনজন হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ব্রিটিশ আইনজীবী করিম আহমদ খান কিউসি। গতকাল সোমবার দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তিনি এই আবেদন করেন। আলজাজিরা ও রয়টার্স।
করিম খান বলেন, নেতানিয়াহু ও হামাস নেতারা গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী। আইসিসি গত তিন বছর ধরে অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করে আসছে। সাম্প্রতিককালে হামাসের কর্মকাণ্ডও তদন্ত করেছে এই সংস্থাটি। নেতানিয়াহু সম্প্রতি ইসরাইলের সিনিয়র ব্যক্তিদের আইসিসির ওয়ান্টেড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনাকে ‘ঐতিহাসিক ক্ষোভ’ বলে অভিহিত করেছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে ঢুকে অতর্কিত অভিযান চালায় গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই হামলার জবাবে গাজায় বোমাবৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। দেশটির ছোড়া গোলায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় ১৩ হাজার শিশুসহ মোট ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এ দিকে হামাসের হাতে বন্দীদের মধ্যে ১৩০ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
হামাস-ইসরাইল তীব্র যুদ্ধ : গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি সেনা ও হামাসের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ অব্যাহত আছে। সেখানে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও আর্টিলারি ব্যবহার করে নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। তাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করছে হামাস। তাদের সম্বল অল্প কিছু ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট। বিশ্বের অত্যাধুনিক অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়ে নিজের ভূখণ্ডের অধিকার রক্ষার জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করছে হামাস। বিশেষ করে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অব্যাহতভাবে হামলা করছে ইসরাইল। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি। যা কিছু বাড়ি অবশিষ্ট ছিল, তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। এতে এক দিনে সেখানে নারী ও শিশুসহ নিহত হয়েছেন ৩৭ জন।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১ জন। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকৃতপক্ষে গাজায় কি পরিমাণ মানুষ মারা গেছেন বা যাচ্ছেন সেই সংখ্যা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স রিপোর্ট করেছে যে, আল আওদা হাসপাতালে পান করার জন্য এক ফোঁটা পানিও নেই। ফলে সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আহত মানুষের কি অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।
এমন প্রেক্ষাপটে ইরাসইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছেন জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় ত্রাণ সঙ্কটের কারণে ‘ধ্বংসাত্মক’ এক পরিণতি নেমে আসবে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ রাফা এবং কারেম আবু সালেম ক্রসিং কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইলি সেনারা। গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী শাসন নিয়ে বেশ তোপের মুখে রয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা পরিচালনা করবে কারা তা নিয়ে নেতানিয়াহুকে বারবার তাগাদা দেন মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ। কিন্তু এ বিষয়ে ৮ জুনের মধ্যে কোনো সন্তোষজনক জবাব না পেলে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী এই মন্ত্রী। সম্প্রতি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনী হামলা জোরদার করেছে। এতে রাফা থেকে পালাতে বাধ্য হচ্ছে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে : এ দিকে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৫ হাজার ৫৬২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৯ হাজার ৬৫২ জন আহত হয়েছে বলে অবরুদ্ধ ও বোমাবর্ষিত অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০৬ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা