১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী সার্বিয়া

-


দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ সার্বিয়ায় নির্মাণ, ফ্যাক্টরি, হোটেল-রেস্তোরাঁর মতো খাত কর্মীসঙ্কটের কারণে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। ব্যবসাবাণিজ্য চাঙ্গা রাখতে দেশটির নিয়োগকারী কোম্পানিগুলো এখন তাদের দেশের কর্মীর পাশাপাশি বিদেশী কর্মী খুঁজছেন। পাশাপাশি ইউরো-এক্সপো আয়োজন করতে যাচ্ছে। এসবের জন্য তাদের নির্মাণ খাতে বিপুলসংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন। দেশটির সরকার এই সঙ্কট কাটাতে বিদেশী কর্মী নিয়োগের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
বিদেশে বাংলাদেশের সঙ্কুচিত হতে থাকা শ্রমবাজারের জন্য সার্বিয়ার নতুন এই শ্রমবাজারটি ধরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে সার্বিয়ার নিয়োগকারী কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের (কর্মসংস্থান শাখার) কর্মকর্তা ও রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা।
সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যনির্ভর শ্রমবাজারের সঙ্কট কাটাতে ইউরোপের নতুন নতুন শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সার্বিয়া হতে পারে বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ সুযোগ। দুই বছর ধরে সার্বিয়াতে কর্মী পাঠানোর চেষ্টা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুই সপ্তাহ আগে সার্বিয়ার একটি টেক্সটাইল কোম্পানি থেকে প্রায় ৬০০ বাংলাদেশী কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য ঢাকার বাড্ডার নদ্দা এলাকার রিক্রুটিং এজেন্সি এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপের (বিডি) সাথে একটি চুক্তি হয়েছে।

গত মঙ্গলবার এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ বিডির অফিসে যোগাযোগ করা হলে জেনারেল ম্যানেজার (ইউরোপ সেকশন) সত্যরঞ্জন শিকদার নয়া দিগন্তকে চাহিদাপত্র পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রডের একটি টেক্সটাইল ফ্যাক্টরিতে ৬০০ দক্ষ কর্মী পাঠানোর জন্য নিয়োগ কর্তার সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানের একটি চুক্তি হয়েছে। চাহিদাপত্র অনুযায়ী একজন কর্মীর বেতন হবে ৫৫০ ইউরো। বাংলাদেশী টাকায় ৬৫ হাজার মাত্র। থাকা এবং খাওয়া নিয়োগকর্তার। কাজের সময় আট ঘণ্টা। সাথে ওভারটাইম হতে পারে। তিনি বলেন সার্বিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়া শুরু হলে সেখান থেকে অনেক রেমিট্যান্স আসবে।
ভিসা জটিলতা কাটাতে প্রত্যেককে দেয়া হবে ই-ভিসা। রিক্রুটিং এজেন্সি এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপের অপর এক কর্মকর্তা জানান, নিয়োগকারী কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর আমরা কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এখন ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন ও আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। অনুমোদন যত তাড়াতাড়ি পাবো তত তাড়াতাড়ি কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
সার্বিয়া, মন্টেনিগো, ক্রোয়েশিয়া, আলবেনিয়া ও মেসিডোনিয়াসহ বলকান দেশগুলোর ভিসার সত্যায়ন হয় ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নতুন এ শ্রমবাজার সম্পর্কে গণমাধ্যমকে বলছেন, সার্বিয়ায় শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনাময়। কারণ সার্বিয়া প্রায় এক লাখ দক্ষ বিদেশী কর্মীর ভিসা ইস্যু করতে যাচ্ছে। ২০২৭ সালে ইউরো এক্সপো আয়োজনের জন্য তাদের পাঁচ লাখ নির্মাণশ্রমিক প্রয়োজন রয়েছে। এই কর্মীর চাহিদা বৈধপথে পূরণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
জানা যায়, প্রতি বছর ৩০ হাজার সার্ব নাগরিক বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান, যাদের মধ্যে বড় একটি অংশ তরুণ।

 


আরো সংবাদ



premium cement