দুবাইয়ে বিদেশীদের গোপন সম্পদের পাহাড়, তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশী
- আরফাত বিপ্লব দুবাই (ইউএই) থেকে
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
দেশের ব্যাংক খাতে নৈরাজ্য, রিজার্ভ সঙ্কট, অর্থপাচার সংক্রান্ত নানা আলোচনার মধ্যেই আগুনে ঘি ঢালার মতো খবর দিলো অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোর।
এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ের আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের তালিকায় রয়েছেন ৩৯৪ বাংলাদেশীও। তাদের মালিকানায় বাংলাদেশী মুদ্রায় দুই হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে।
সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরো রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও দুবাইয়ে বিপুল সম্পদের মালিক। অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা না থাকায় নানা দেশের ধনীরা দুবাইয়ে বেহিসেবি অর্থের পাহাড় গড়ে তুলতে পারেন।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে ভারতীয়দের। সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টিজ কোম্পানির মালিকের মধ্যে ২৯ হাজার ৭০০ জনই ভারতীয়। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি রয়েছে। এর মূল্য এক হাজার ২৫০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশী নাগরিকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদে যে চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা, সম্পদের পরিমাণ এবং দাম উল্লেখ রয়েছে।
‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক এ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছে ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যম। প্রতিবেদনটি ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে গত মঙ্গলবার।
এই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসও। সব মিলিয়ে ফোর্বস ২২ ধনকুবের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৬০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের ৭৬টি সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে। বিশ্বের চারটি মহাদেশের ১০টি দেশ থেকে এসেছেন তারা। যুক্তরাজ্য, মিসর, সাইপ্রাসের নাগরিকদেরও সম্পদ রয়েছে দুবাইয়ে।
এদিকে পাকিস্তানের ইংরেজি পত্রিকা দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানি সম্পদের মালিক। তবে তথ্য-উপাত্ত ও অতিরিক্ত সূত্র ব্যবহার করে এ সংখ্যা ২২ হাজারের মতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
এ ছাড়া তালিকায় চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি ইয়েমেন, নাইজেরিয়া ও কেনিয়ার মতো দেশের নাগরিকরাও রয়েছেন।
জানা গেছে, দুবাই চেম্বারের সদস্যপদ পাওয়া বাংলাদেশীদের মালিকানাধীন কোম্পানির মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৭৫টি। এর মধ্যে গত ছয় মাসেই বাংলাদেশীদের মালিকানাধীন এক হাজার ৪৪টি কোম্পানি দুবাই চেম্বারের সদস্যপদ নিয়েছে।
পৃথিবীর অন্যতম বিলাসবহুল ও অত্যাধুনিক শহর দুবাইয়ে বহু বাংলাদেশীর অবৈধ সম্পদ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এ নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনাও চলে আসছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা