১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণ

-


আগের দুই ম্যাচে কানের কাছ দিয়ে গুলি যাওয়া। চতুর্থ ম্যাচে সাকিব ও মোস্তাফিজ মিলে দলকে উদ্ধার করলেন (৫ রানে জয়)। তৃতীয় ম্যাচেও ত্রাতা বোলাররা (৯ রানে জয়)। তবে গতকাল মিরপর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই ভূমিকায় নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি বোলাররা। সাকিব আল হাসান তার ঘূর্ণিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। একটি মাত্র উইকেট নিলেও চার ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ৯। তার সাথে গত ম্যাচে যে বোলারটি ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সেই মোস্তাফিজ দিলেন তিন ওভারে ১৮ রান। তবে ১৫৭ রানকে পুঁজি করে জিততে অন্য বোলারদের যে ভূমিকা রাখা দরকার তা পারেননি সাইফউদ্দিন, মাহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেনরা। এর পরও শেষ যে আশা ছিল সেটিও ধূলিসাৎ হয়ে যায় সাইফউদ্দিনের করা ১৮তম ওভারে ১৯ রান দেয়ায়। ফলে পঞ্চম ও শেষ টি-২০তে জিম্বাবুয়ের কাছে হার বাংলাদেশের। টাইগারদের ৮ উইকেটে হারিয়ে সান্ত্বনার জয় জিম্বাবুয়ের। সাথে হোয়াইটওয়াশ এড়াল সফরকারীরা। আর ৪-১-এ সিরিজ জিতে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমান ধরার আগে হারের লজ্জ্বায় পুড়তে হলো নাজমুল হোসেন শান্তদের। স্বাগতিকদের ছয় উইকেটে ১৫৭ রানের জবাবে ১৮.৩ ওভারে সেই লক্ষ্য তাড়া করে সিকান্দার রাজার দল। সিকান্দার রাজার অপরাজিত ৭২ ও ব্রেইন বেনেটের ৭০ রানেই জয়ে শেষ করা তাদের। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরা বেনেট।

সকাল ১০টার মুদ্রাক্ষেপণে হাসি জিম্বাবুয়ের। এতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে যেতে হয়। আফ্রিকান দেশটির এর আগে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল তা পঞ্চম ওভারের মধ্যেই প্রমাণ দেয় তাদের বোলাররা। ৪.১ ওভারেই নেই বাংলাদেশের তিন ইনফর্ম ব্যাটার। দলের স্কোর তখন ১৫। অল রাউন্ডার ব্রেইন বেনেটের স্পিনে প্যাভিলিয়নে সৌম্য সরকার ও তৌহিদ হৃদয়। উইকেট রক্ষকের হাতে ধরা পড়া হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে এক রান। সৌম্য করেন সাত। এর আগে প্রথম আঘাত হানেন ব্লেসিং মুজারাবানি। তার বলে দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই অভিজ্ঞ ওয়েলিংটন মাসাকাদজার তালুবন্দী দুই রান করা ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম।
এই ধাক্কা সামলে দলকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দুইজনের চতুর্থ উইকেট জুটিয়ে ৬৯ রান আসার পর আউট শান্ত। আগের বলেই ছক্কা মারা বাংলাদেশ অধিনায়ক এবার ডিপ স্কোয়ার লেগ দিয়ে বল সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে রায়ান ব্রুলের হাতে ক্যাচ দেন। তখন চলছিল ১২তম ওভারের খেলা। শান্তর ২৮ বলে ৩৬ রানের এই ইনিংসে ছিল পাঁচটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা। এরপর মাহমুদুল্লাহর সাথে জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। দুইজনের পার্টনারশিপে ৩৯ রান আসার পর সাকিব দারুণ ক্যাচে পরিণত হন জোনাথন ক্যাম্পবেলে। বেশ খানিকটা দৌড়ে সামনে ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি নেন জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক অলিস্টার ক্যাম্পবেলের এই ছেলে। বোলার ছিলেন জং উই। এতে থামে এক ছক্কায় সাকিবের ১৭ বলে ২১ রানের ইনিংস। এতে টি-২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান এখন সাকিবের। এর আগেই ফিফটির দেখা পান মাহমুদুল্লাহ। তার এই অষ্টম আন্তর্জাতিক টি-২০-এর অর্ধশত পেতে বল খেলতে হয়েছিল ৩৬টি। যদিও বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকা হয়নি রিয়াদের। ১৮তম ওভারের শেষ বলে সিকান্দার রাজার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। তার উইকেটটি নেন মুজারাবানি। ৪৪ বলে ছয় বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৪ রান করেন তিনি। এরপর অবশ্য টাইগারদের আর উইকেট পড়েনি। উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলী অনিক ও সাইফউদ্দিন মিলে শেষ দুই ওভারে তোলেন ২৯ রান। এতে বড় অবদান জাকের আলীর। ১৫ বলে দুই ছক্কা আর এক চারে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ে হয়ে মুজারাবানি ২২ রানে ও বেনেট ২০ রান নেন দু’টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট জং উই ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার।

টি-২০তে ১৫৭ রান কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। যা আগেই দুই ম্যাচেই ইঙ্গিত দিয়েছিল জিম্বাবুয়েনরা। এর পরও এই পুঁজিতে জিততে হলে যে আর্লি ব্রেক থ্রু দরকার তা হয়নি সৌম্য সরকারের ক্যাচ মিসে । ইনিংসের প্রথম ওভারেই সিøপে ক্যাচ দেন বেনেট। কিন্তু মাহেদী হাসানের এই বলে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ সৌম্য। এই লাইফ পেয়ে বেনেট ৪৯ বলে ৭০ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। যার মধ্যে ছিল পাঁচটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি। এই বেনেট ওপেনিং জুটিতে এতটাই ভয়ঙ্কর ছিলেন যে দলীয় ৩৮ রানে যখন প্রথম উইকেট পতনের সময় টাডিওয়ারাশে মারুবানির সংগ্রহ মাত্র ১। এই ব্রেক থ্রুটা অবশ্য দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার বলে দ্বিতীয় চেষ্টায় মারুবানিকে স্ট্যাম্পিং করেন জাকের আলী। এতে তিন ফরমেট মিলে ৬৯৯ উইকেট নিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। যদিও কাল আর ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা হয়নি তার। এরপর সিকান্দার রাজা ও বেনেট মিলে স্বাগতিক দর্শকদের শুধু হাতশাই বাড়িয়েছেন। দুইজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৭৫ রান। ক্যারিয়ারে প্রথম টি-২০ ফিফটি করা বেনেটকে ফেরান সাইফউদ্দিন। পুরো ম্যাচে এই একবারই খুশি হতে পেরেছেন সাইফউদ্দিন। ১৫.১ ওভারে তার বিদায়ের পর জোনাথন ক্যাম্পবেলকে সাথে নিয়ে জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন সিকান্দার রাজা। দল জয়ের বন্দরে পৌঁছার পর রাজার স্কোর যখন ৭২ তখন ক্যাম্পবেলের ব্যাটে ৮ রান। সবচেয়ে ব্যয়বহুল সাইফউদ্দিন ৫৫ রানে এক উইকেট নিয়ে দলের পরাজয়ের নেপথ্য নায়ক হিসেবেই থাকলেন। অথচ প্রথম টি-২০তে ১৫ রানে তিন, দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৭ রানে এক ও তৃতীয়টিতে ৪২ রানে তিন উইকেট নেন তিনি। চতুর্থ ম্যাচে খেলেননি।
উল্লেখ্য, তৃতীয় টি-২০তে বাংলাদেশের ১৬৫ রানের জবাবে ১৫৬ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। চতুর্থ ম্যাচে লাল-সবুজদের ১৪৩ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৩৮ এ ইনিংস শেষ হয়েছিল তাদের। কাল বেনেট ম্যাচ সেরা হলেও সিরিজ সেরা তাসকিন আহমেদ। ইনজুরির জন্য গতকালের ম্যাচে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশে মুসলিম কৃষকের ধানে আগুনকে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বলে প্রচার শিক্ষানুরাগী এস এম খলিলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ সিরিয়ার নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র! ইতিহাসের প্রথম : ৪০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক মাস্ক ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপ সৌদি আরবে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সচল ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ভারতীয় মিডিয়াতে ইসকনের ওপর হামলার খবর ভুয়া : সিএ প্রেস উইং ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মির্জা ফখরুল টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা ঢাকা সফর নিয়ে ভারতের এমপিদের ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন দুর্নীতি তদন্তে অগ্রাধিকার পাবে

সকল