১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের

আ’লীগ কারো দাসত্ব করে না

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ওবায়দুল কাদের : নয়া দিগন্ত -

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কারো দাসত্ব করে না বলে দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ভারত আমাদের বন্ধু, আমরা কারো দাসত্ব করি না। আমাদের শক্তির উৎস দেশের মানুষ, জনগণ। ভারতের কাছে আমরা ক্ষমতা চাই না, বন্ধুত্ব চাই। কারণ, এটা আমাদের স্বার্থেই দরকার। বিএনপি শত্রুতা করে আমাদের ক্ষতি করেছে ২১ বছর। আমরা সে অবস্থায় আর ফিরে যেতে চাই না।
গতকাল বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সাথে ২১ বছর শত্রুতা করে আমাদের কোনো লাভ হয়নি। বিএনপি শত্রুতা করে সংশয় ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল। সে কারণে দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। ক্ষমতায় এসে সেই অবিশ্বাসের দেয়াল শেখ হাসিনাই ভেঙে দিয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, গঙ্গার পানি শেখ হাসিনাই এনেছেন। পানির চুক্তি কে করেছেন? শেখ হাসিনা। সীমান্ত সমস্যার (সমাধানে) চুক্তি কে করেছেন? শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের মতো আরেকটি বাংলাদেশ (সমুদ্রসীমা) পেয়েছি আদালতের মাধ্যমে।
গেল শুক্রবার বিএনপির সমাবেশে দলটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ‘এক পশরা মিথ্যাচার’ করেছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গয়েশ্বর বাবু কোথায় ছিলেন এতদিন? কোথা থেকে এলেন? কোথায় পালিয়ে ছিলেন? ভারতে? মাথায় উঠেছে গান্ধী টুপি। এখন ভণ্ডামি শুরু করেছেন। গয়েশ্বর পল্টনে দাঁড়িয়ে আমাদের ভারতের দালাল বলেছেন। এই অপবাদ তো আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান দিয়েছিল। বিএনপির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ভারতে যখন নির্বাচন হয়, বন্ধের দিন ভারতীয় হাইকমিশনারের সামনে দাঁড়িয়েছিল, দালাল কারা? ভারতে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৪২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে- এ কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশের ৪২ শতাংশ ভোটার। এই নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। উপজেলা নির্বাচন জনগণ নাকি প্রত্যাখ্যান করেছে! তাহলে ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ লোক ভোট দিলো, তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ।
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী নেতাদের আন্দোলনের হুমকির কড়া সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, যতই আন্দোলন করেন কোনো লাভ হবে না। জনগণ সাথে না থাকলে সেই আন্দোলন মূল্যহীন। নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কিসের আন্দোলন করতে চান? আপনাদের আন্দোলনের হেতু কী? সরকারের পরিবর্তন হলে নির্বাচনের মাধ্যমে সম্ভব, নির্বাচন ছাড়া কখনো অবৈধভাবে সম্ভব না। আরেকটি আছে অগণতান্ত্রিক পন্থায়। এই দেশের মানুষ সেটা কখনো চায় না। বাংলাদেশের মানুষ কখনো অবৈধ পন্থায় সরকার গঠনের সুযোগ দেবে না। যারাই চেষ্টা করেছে তাদের অতীতে যেমন এই দেশের মানুষ রাজপথে প্রতিহত করেছে, ভবিষ্যতেও তেমনি দেশের মানুষ এসব চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রোকেয়া সুলতানা, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement