১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ডলারের বাজারে অস্থিরতা

খোলাবাজারে ১২৫ টাকার কমে মিলছে না : আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব
-

নতুন পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারিত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিতরা দেখা দিয়েছে। গতকাল এক লাফে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২৫ টাকা উঠে গেছে। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে আমদানিতেও ডলারের দরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগাম ডলার কিনতে ব্যাংকভেদে ১২৮ থেকে ১২৯ টাকা উঠে গেছে। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। মানিচেঞ্জাররা গতকাল দিনভর নতুন দর পর্যবেক্ষণ করেছে। এ কারণে অনেকেই বাড়তি দরে ডলার কেনাবেচা থেকে বিরত থেকেছেন। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাজারে এমনিতে ডলার সঙ্কট চলছে, এর ওপর নতুন দর চালু হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেকেই আমদানি ব্যয় মেটাতে আগাম ডলার কেনার জন্য আসছে। আবার অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকে এসে বাড়তি মূল্য গুনছে। পাশাপাশি খোলাবাজারের মূল্যও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে বাজারে ডলার সঙ্কট চলছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরোক্ষ হস্তক্ষেপে ডলারের দর বেঁধে দেয়া হয়েছিল ১১০ টাকা। তবে এ দর ছিল নেহাতই কাগজে কলমে। বাস্তবে এ দরে কোথাও ডলার পাওয়া যেত না। তবে এ দরকে ভিত্তি ধরে বাড়তি মূল্যে লেনদেন করা হতো। কিন্তু গত বুধবার ক্রলিংপেগ ঘোষণা করে। এতেই এক লাফে ডলারের দাম ১১০ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকায় উঠে যায়। আর এ কারণে খোলা বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গত বুধবার খোলাবাজারে ডলার লেনদেন হয়েছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকার মধ্যে। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে তা বেড়ে ১২৫ টাকায় উঠে যায়। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি আমদানিতেও বাড়তি মূল্য গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। আগাম ডলারের মূল্য হঠাৎ করেই তা ১২৮ থেকে ১২৯ টাকায় উঠে যায়। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাড়তি দামে ডলার লেনদেন হলেও অনেকটা মানুষের মধ্যে সহনশীল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রলিংপেগ চালু হওয়ায় বাজার আবারো অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।

মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি এম এস জামান গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, গতকাল দিনভর তারা ডলারের বাজার মনিটরিং করেছেন। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে সার্কুলার দেয়া হয়েছে তাতে ক্রলিংপেগের ১১৭ টাকা কোন রেট তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এটি কি আমদানি না রফতানি দর, ক্যাশ কারেন্সি কত হবে তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তাই আমাদের বেশির ভাগই গতকাল বাজার মনিটরিং করেছে। বাজারের গতিবিধির দিকে লক্ষ রেখেছি। আমরা শুনেছি, কেউ কেউ ১২৫ টাকা দরে ডলার কেনাবেচা করেছে। তবে তারা আমাদের কোনো সদস্য নন। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে নির্দেশনা দেবে তাই আমরা মেনে নেবো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ক্রলিংপেগ একটি স্থির দর। এ দরের চেয়ে অধিক কম বা বেশি দরে ডলার কেনাবেচা করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলে দেয়া হয়েছে ১১৭ টাকার থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা বেশি দরে ডলার লেনদেন করতে পারবে। গতকাল বাফেদা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনেই ডলারের ক্রয়মূল্য ১১৬ টাকা ৪৩ পয়সা এবং বিক্রয় মূল্য ১১৭ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে আরো আড়াই টাকা বেশি মূল্য প্রণোদনা হিসেবে রেমিট্যান্স কিনতে পারবে। তাতে রেমিট্যান্সের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১১৯ টাকা। কিন্তু বেশির ভাগ ব্যাংকই গতকাল ১২০ টাকা থেকে ১২৩ টাকা মূল্যে রেমিট্যান্স আহরণ করেছে। সুতরাং ক্রলিংপেগ বাজার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।

তবে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, আগে ভিত্তিমূল্য ছিল ১১০ টাকা। এর ওপর ১০ থেকে ১২ শতাংশ প্রিমিয়াম ধরে আগাম ডলার বিক্রি করত। গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজন মেটাতে বাড়তি দরেই ডলার কিনে আমদানি দায় পরিশোধ করত। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারণ করেছে ১১৭ টাকা। তাই এ থেকে বাড়তি ১০ শতাংশ প্রিমিয়াম নিলে আগাম ডলার কেনার ক্ষেত্রে ডলারের প্রকৃত মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১২৯ টাকা। বেশির ভাগ ব্যাংক এ পদ্ধতিতেই ডলার লেনদেন করছে। আর যেহেতু এটা একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পদ্ধতি, তাই এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও করার কিছু থাকছে না। এভাবেই গ্রাহকরা বাড়তি মূল্যে ডলার কিনে আমদানি দায় মেটাচ্ছে। অপর দিকে কিছু সরকারি কেনাকাটায় সরকারি ব্যাংকগুলো ভিত্তি মূল্য অর্থাৎ ১১০ টাকা ধরেই লেনদেন দেন করত। কিন্তু এখন ১১৭ টাকা হওয়ায় সরকারি আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশে প্রতি বছর আমদানিতে ব্যয় হয় ৬২ থেকে ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশই ব্যয় হয় সরকারি কেনাকাটায়। তাই সরকারি ব্যয়ও বেড়ে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল, স্বীকার করলেন ডিজি আবারো গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ জাতিসঙ্ঘের ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়ল ১৪.৪৮ পয়েন্ট সিরিয়ায় বাশার সরকারের পতনে ইরানি মুদ্রার মান রেকর্ড তলানিতে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজেছাত্র আহত তারেক রহমান কবে ফিরবেন, জানালেন মির্জা ফখরুল কালিয়াকৈরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক : ডিজি মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সৈন্যসহ জেনারেল আটক শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’

সকল