৩২ ঘণ্টা পর জয়দেবপুর আপ লাইন চালু : চরম ভোগান্তি যাত্রীদের
- গাজীপুর প্রতিনিধি ও রাজশাহী ব্যুরো
- ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০
গাজীপুরে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সাথে তেলের কনটেইনারবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চালু হয়েছে ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটের আপ লাইনটি। বগিসহ দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন দু’টি লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে রেললাইনের মেরামত কাজ শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট থেকে ওই লাইন চালু করা হয় বলে জানিয়েছেন জয়দেবপুর জংশন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো: হানিফ মিয়া। এ দিকে এ ঘটনায় ঢাকা-জয়দেবপুর ডাবল রেললাইনের একটি লাইন (আপ) বন্ধ থাকায় ঢাকার সাথে ময়মনসিংহসহ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সব ক’টি ট্রেনের শিডিউলের বিপর্যয় ঘটেছে। একাধিক ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ট্রেনের যাত্রীরা।
জয়দেবপুর জংশন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো: হানিফ মিয়া জানান, গত শুক্রবার সকালে ঢাকা-জয়দেবপুর ডুয়েল রেলরুটের গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশন স্টেশনের পার্শ্ববর্তী আউটার সিগন্যালের ছোটদেওড়া কাজীবাড়ী এলাকার ক্রসিং পয়েন্টে আপ-লাইন দিয়ে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা যাত্রীবাহী ট্রেন টাঙ্গাইল কমিউটারের সাথে একই লাইন দিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী জ্বালানি তেলের কনটেইনারবাহী অপর একটি ট্রেনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। যাত্রীবাহী ট্রেনের দুইটি বগির মধ্যে একটি অপরটির ভেতরে ঢুকে যায়। এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি এবং কনটেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি দুমড়েমুচড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি ও কনটেইনারবাহী ট্রেনের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় উভয় ট্রেনের চালকসহ (লোকো মাস্টার) চারজন আহত হন। এ ঘটনায় ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ওই ডুয়েল রেলরুটের আপ লাইন বন্ধ করে ডাউন লাইন দিয়ে উভয় দিকের ট্রেন চলাচল শুরু করে।
তিনি আরো জানান, এ দুর্ঘটনার পর ট্রেন দু’টিকে উদ্ধার করতে বিকেলে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে। পরে আখাউড়া থেকে অপর একটি ক্রেনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে যোগ দেয়। তারা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো রেখে অন্য বগিগুলো পেছনের দিকে টেনে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন এলাকায় নিয়ে রাখে। উদ্ধারকারীরা টানা প্রায় ৩১ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে শনিবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত তেলবাহী ট্রেনের একটি বগি বাদে বাকি বগিগুলোকে আলাদা আলাদাভাবে লাইনের ওপর তুলে পেছনে ধীরাশ্রম রেল স্টেশনে নিয়ে রাখে। দুর্ঘটনাকবলিত লাইনের দু’পাশে ব্লক করে কাজ করা হয়। পরে তেলবাহী ট্রেনের অবশিষ্ট বগিসহ দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন দুইটির ইঞ্জিন ও সব ক’টি বগি লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে লাইন মেরামত শেষে দুর্ঘটনার প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর ওই লাইনে ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে কিয়ারেন্স দিয়ে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল চালু করা হয়।
এ দিকে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া ক্রেনম্যান আবুল হোসেন বলেন, ক্রেন দিয়ে লাইনচ্যুত বগিগুলো লাইনের ওপর তোলা হয়। পরে যেগুলো সচল করা সম্ভব ছিল, সেগুলো টেনে বগিগুলো জয়দেবপুর রেল স্টেশনে এবং তেলের কনটেইনারবাহী বগিগুলো ধীরাশ্রম রেল স্টেশনে নিয়ে রাখা হয়েছে। উদ্ধারকাজ শেষে ক্রেনটি আখাউড়া ফিরে যাবে। আর তেলের বগিগুলো ধীরাশ্রম রেল স্টেশনে রাখার পর দুর্ঘটনাকবলিত দু’টি ট্রেনের ইঞ্জিন একসাথে টেনে ঢাকার কমলাপুর নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখান থেকে এগুলো চট্টগ্রাম ওয়ার্কশপে পাঠানো হবে।
আবুল হোসেন আরো বলেন, এসব কাজ শেষ করতে আজকে সারা দিন লেগে যাবে। কাজ শেষ করে আমরা লাইন ক্লিয়ার করার পর ঢাকা-জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনের বন্ধ থাকা লাইনে রেল চলাচল শুরু হবে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত দু’টি ট্রেনের একটি ট্রেনের বগিতে দাহ্য পদার্থ রয়েছে। তাই তেলের কনটেইনারবাহী ওই ট্রেনের প্রতিটি বগিকে সতর্কতার সাথে লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এজন্য একটু বেশি সময় লেগেছে। তবে বিকেল পর্যন্ত ওই ট্রেনের একটি ওয়াগন ব্যতীত অন্যগুলোকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পরে যে ওয়াগনটি লাইনের ওপর ছিল সেটিকেও সরিয়ে নেয়া হয়। বগিগুলো সরিয়ে নেয়ার পর লাইন মেরামত শেষে রেল কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
শিডিউল বিপর্যয়, যাত্রীদের ভোগান্তি : গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর থেকে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ চলাচলকারী সব ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
জয়দেবপুর জংশন স্টেশনে গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলার শত শত যাত্রী গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেখানে কথা হয় রাজশাহী যেতে ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তন্ময়ের সাথে। তার সাথে তার এক বন্ধু রয়েছেন। তন্ময় বলেন, টিকেট কেটে সকাল পৌনে ৭টা থেকে জয়দেবপুর জংশনে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে আছি, কিন্তু বেলা প্রায় ১১টার দিকে ও ট্রেনের দেখা মেলেনি।
জামালপুরগামী তিস্তা ট্রেনের জন্য একই স্টেশনে অপেক্ষায় আছেন আরেক যাত্রী জামাল। তিনি উত্তরার বায়িং হাউজে কাজ করেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি জামালপুর যাওয়ার জন্য প্লাটফর্মে বসে আছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা পর্যন্ত স্টেশনে ট্রেন পৌঁছেনি।
স্টেশন মাস্টার মো: হানিফ মিয়া জানান, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর থেকে পাশের লাইনে (ডাউন) ট্রেন চলাচল শুরু করলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এক লাইনে ট্রেন চলাচল করতে গিয়ে পদ্ধতিতে ট্রেন চালানো হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী ধীরাশ্রম স্টেশন এবং জয়দেবপুর জংশনে ট্রেন অপেক্ষায় রেখে একটি একটি করে ট্রেন দুই দিকে চলতে দেয়া হচ্ছে। এতে কোনো ট্রেনেরই শিডিউল ঠিক থাকছে না।
জয়দেবপুর রেল স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার আল ইয়াসবাহ বলেন, এক লাইনে ট্রেন চলাচলের কারণে ঢাকা থেকে নেত্রকোনা চলাচলকারী মহুয়া কমিউটার ট্রেন (নং ৪৩ ও ৪৪), ঢাকা-জয়দেবপুর চলাচলকারী তুরাগ কমিউটার ট্রেন (নং তুরাগ কমিউটার ১৪) এবং ঢাকা-জামালপুর চলাচলকারী জামালপুর কমিউটার ট্রেন (নম্বর-৫১/৫২) শনিবারের উভয়মুখী যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা প্রায় ৩ ঘণ্টা বিলম্বিত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় তদন্ত শুরু, জংশন ও হাসপাতালে তদন্ত কমিটি : গাজীপুরে শুক্রবার ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি শনিবার কাজ শুরু করেছে।
প্রথমে এ কমিটির প্রধান ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মতিউর রহমান জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে আপ গুমটি স্টেশন মাস্টার আবুল হাসেম, পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম ও মোস্তাফিজুর রহমানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন ও জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার মো: হানিফ মিয়া।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান জানান, এদিন সকালে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্তের বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরে দুপুরে জয়দেবপুর জংশনে ট্রেন দুর্ঘটনার দিন কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার আবুল হাসেম, পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম ও মোস্তাফিজুর রহমানের সাক্ষাৎকার এবং তাদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়।
নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে ছিল ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান : গাজীপুরে ভুল সিগন্যালের কারণেই সংঘর্ষ : গাজীপুরে বিপরীতমুখী সিগন্যাল বা ভুল পয়েন্ট স্থাপনের কারণেই দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ওই ভুল পয়েন্ট সংযোগে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের কেউ জড়িত ছিলেন না। ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ভুলের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাফকন্স’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পভুক্ত রেলের সিগন্যালিং পয়েন্টগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব জনবল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ও আলোচিত ট্রেন দুর্ঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সদস্য মো: হানিফ আলী ট্রেন দুর্ঘটনার ব্যাখা দিয়ে বলেন, রেলওয়ে সিগন্যালিং (বিই) বা রেলরোড সিগন্যালিং (এই) রেলওয়ে ট্র্যাফিকের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত একটি সিস্টেম। একটি পয়েন্ট মেশিনের প্রাথমিক কাজই হলো যান্ত্রিকভাবে সুইচ রেলগুলোকে সারিবদ্ধ করা এবং ট্রেনগুলোকে এক ট্র্যাক থেকে অন্য ট্র্যাকে স্থানান্তর করা। তিনি আরো জানান, টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্পভুক্ত পয়েন্টগুলো নিজস্ব লোক দিয়ে ম্যানুয়ালি (হাতে) নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোন ট্রেন কোন লাইনে ঢুকবে স্টেশন থেকে শুধু এই তথ্য গুণ্টিঘরে (পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণকক্ষ) দায়িত্বরত মাস্টারকে নিজস্ব সিস্টেমে যুক্ত টেলিফোনে জানানো হয়।
রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের শিডিউল বিপর্যয়
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা অভিমুখে আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেসের যাত্রার নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৭টা ৪০ মিনিট। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে সেই ট্রেনটি শনিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের ৬ ঘণ্টা পর ট্রেনটি গতকাল রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে গন্তব্যের উদ্দেশে।
শুধু আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেসই নয়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রায় সবগুলো ট্রেনই গতকাল শনিবার সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করেছে।
এর আগে গত শুক্রবার (৩ মে) গাজীপুরের জয়দেবপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ভেঙে পড়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের টাইম শিডিউল। দুর্ঘটনার পর বড় ধরনের প্রভাব না পড়লেও শনিবার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের। তাপদাহের কারণে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় প্রায় মাসখানেক থেকে ধীর গতিতে চলছিল পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন ট্রেন। ফলে প্রতিটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারছিল না। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতেও বিলম্ব হচ্ছিল। তার ওপর শুক্রবার গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর উদ্ধারকাজ চলার কারণে আরো বিলম্বে চলাচল করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ট্রেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগের ঘোষণা ছাড়াই সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৬ ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনের যাত্রীরা।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে একাধিক যাত্রী জানান, শনিবার সকালে যাত্রা শুরুর মাত্র মিনিট কয়েক আগে তাদের জানানো হয় যে, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছুটা বিলম্বে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে। কিন্তু ৭টা ৪০ মিনিটের ট্রেন ৬ ঘণ্টা বিলম্বে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বিলম্বিত ট্রেনের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন অনেক যাত্রী। যারা জরুরি কাজে ঢাকা যাচ্ছেন তারা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া তীব্র গরমে কষ্ট শিকার করেই রোগী ও শিশু ভ্রমণকারীরাও ট্রেনে রওনা হচ্ছেন বলেও জানান তারা।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, গাজীপুরের দুর্ঘটনার কারণে মূলত ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের। ট্রেনের টাইম শিডিউল নিয়ে তারা এখন ভালো অবস্থায় নেই। শনিবার ৭টা ৪০ মিনিটের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে গেছে। এছাড়া বনলতা এক্সপ্রেস পৌনে ২ ঘণ্টা বিলম্বে রাজশাহী থেকে ছেড়ে গেছে। পদ্মা এক্সপ্রেসও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিলম্ব হতে পারে। এছাড়া শনিবারের রাতের ঢাকামুখী আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেসের বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিডিউল বিপর্যয় কাটতে রোববার (৫ মে) পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান, গাজীপুরের দুর্ঘটনায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এখন ট্রেনগুলোর ডে-অফ না এলে এ শিডিউল বিপর্যয় কাটানো যাচ্ছে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা