১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গরম কিছুটা কমলেও মাঝারি তাপপ্রবাহ রয়েছে ৪ বিভাগে

-


গরম কিছুটা কমলেও এখনো মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে দেশের ৪ বিভাগে। তবে এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্থানে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে পরিবেশ এখন অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা। সারা দেশেই কালবৈশাখী অথবা দমকা হাওয়ার পরশে জনজীবনে স্বস্তির পরিবেশ ফিরে এসেছে। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এখন আর কোথাও নেই। এমনকি তীব্র তাপমাত্রাও কোথাও নেই। তবে গরম এখনো রয়েই গেছে। এই গরমকে প্রশমিত করতে মুষলধারে বৃষ্টি প্রত্যাশা করছে মানুষ।

আজ রোববারও ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীর পাশে আরেকটি উত্তপ্ত এলাকা পাবনা ঈশ্বরদীতে ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য দিকে এতদিনকার অতি তীব্র তাপমাত্রার এলাকা যশোরে গতকাল ছিল ৩৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং চুয়াডাঙ্গায় উঠেছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছে। রাজধানী ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য দিকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় তেঁতুলিয়ায় ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ রোববার অবশ্য আবহাওয়া অফিস দেশের ৭ বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই বিভাগগুলোর মধ্যে আছে সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ। শুধুমাত্র খুলনা বিভাগের কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আজ সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ দিকে আবহাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কাল সোমবার দিনের বেলা সার্বিক তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। একই সাথে আজ রোববার রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, সামনের কয়েকদিন সারা দেশের তাপমাত্রাই ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে।

এ দিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যার সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, সিলেট ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর অববাহিকায় অন্যান্য জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ সময় সিলেট জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি হ্রাস পেতে পারে, অপর দিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর অববাহিকায় অন্যান্য জেলার পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ও ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী ও কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। অপর দিকে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি কিছু পয়েন্টে স্বল্প মেয়াদে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

চুয়াডাঙ্গায় টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এদিকে ৬ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত জেলায় টানা বৃষ্টর দেখা মিলতে পারে বলে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।
চুয়াডাঙ্গায় একটানা ২২ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবারসহ গত ৪ দিন জেলায় তাপমাত্রার পারদ একটু একটু করে নামতে শুরু করেছে। তবে তাপমাত্রা কমলেও বাতাসে গরমের তীব্রতা রয়ে গেছে। বাইরে বের হলে রোদের তীব্রতায় মনে হচ্ছে শরীর ঝলসে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই জেলার প্রতিটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রিকশা-ভ্যান চালক ও পথচারীদেরকে সুপেয় পানি, শরবত, স্যালাইন, আখের রস, ডাব খাওয়ানো হচ্ছে এবং ছাতা উপহার দেয়া হচ্ছে। শনিবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৬ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, গত প্রায় ২২ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত ৪ দিন থেকে একটু একটু করে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আগামী ৬ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত টানা বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে। সে কারণে বৃষ্টি শুরুর আগে কৃষকদেরকে মাঠের ফসল ঘরে তোলার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement