বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ মে ২০২৪, ০১:৩৬
- ঢাকাসহ চার বিভাগে স্বস্তির বৃষ্টি
- আজ কমবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে কিছুটা স্বস্তি মিললেও সারা দেশেই এখনো উচ্চ তাপমাত্রা রয়ে গেছে। তবে আজ শুক্রবার সারা দেশেই দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিকে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া সার্বিক তাপমাত্রা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। এ দিকে তিন জেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
অতি তীব্র তাপপ্রবাহের এলাকাগুলো থেকে থার্মোমিটারের কাঁটায় তাপ কমছে বলে দেখালেও প্রকৃতপক্ষে এসব এলাকায় এখনো উচ্চ তাপমাত্রার অনুভূতি রয়ে গেছে। এসব এলাকার বাতাসে এখনো যেন আগুনের হলকা। দুপুরের দিকে বের হলেই নাকে-মুখে বাতাস লাগলে পুড়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছিল বলে ওই এলাকার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন। বড় ধরনের বৃষ্টি না হলে এসব এলাকার পরিবেশ ঠাণ্ডা হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুসারে, এখনো দেশের বেশির ভাগ স্থানে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে বৃষ্টির সাথে শুরু হয়েছে ভীষণ রকমের বজ্রপাত। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা আগের মতোই। গরমজনিত কারণে নানা ধরনের রোগব্যাধি তো রয়েছেই।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বেশি তাপমাত্রার এলাকাগুলোর মধ্যে ছিল যশোর ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া দেশের আর কোনো অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠেনি।
বিশেষ করে দেশের খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি জেলায় মরুভূমির লু হাওয়ার মতো তীব্র গরম বাতাস বয়ে যাচ্ছিল। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, আজ শুক্রবার দেশের কোথাও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। বরং আজ দেশের কোনো কোনো অঞ্চল থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। কারণ আজ দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।
রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হলেও ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো ছিটেফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। তবে দেশের কিছু অংশে বৃষ্টি হওয়ায় এবং সেসব এলাকার ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে তীব্র অথবা অতি তীব্র তাপপ্রবাহের এলাকায় ঠাণ্ডার সামান্য পরশ বুলিয়ে গেছে।
তবে আবহাওয়া বিভাগ আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর্যন্ত পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজ চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি অতিক্রম করার আশঙ্কা নেই। চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা দেশের কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ছিল ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার উচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কমে গেলেও নিম্ন তাপমাত্রা অনেকটা ওপরে। সে কারণে সার্বিক তাপমাত্রার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। ঢাকায় সবুজ বনানীর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য বলে এবং দালানকোঠায় ভর্তি এবং পিচ ঢালা বড় বড় রাস্তার কারণে এখানে দুপুরের দিকে প্রচণ্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করে থাকে। অসহ্য গরমে দুপুরের দিকে মানুষ বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছে। বাতাস ও সবুজ বনানী না থাকায় হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যাও এখানে বেশি। তা ছাড়া গরমের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে।
চট্টগ্রামে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি : জনমনে কিছুটা স্বস্তি
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, গত ১ মাস ধরে সূর্যের প্রখর তেজের দখলে ছিল চট্টগ্রামের আকাশ। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন যখন ওষ্ঠাগত, ঠিক তখনই আকাশে মেঘের দেখা মেলে। ভোর থেকে শুরু হয় রহমতের বৃষ্টি। তবে কোথাও এক ঘণ্টা, কোথাও আধা ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সকালে, কোথাও বিকেলে বৃষ্টি ঝরেছে। কিছু সময়ের জন্য প্রচণ্ড গরমে বৃষ্টির ফোঁটায় জনজীবনে নেমে এসেছে প্রশান্তি। তবে দিনের বেশির ভাগ সময় তপ্ত রোদের কারণে মানুষ হাঁসফাঁস করেছে। রোদ ও বৃষ্টির এ লুকোচুুরি চলেছে গতকাল সারা দিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের প্রায় সব এলাকাতেই বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি না হলেও এতে রাস্তাঘাট ভিজেছে এবং তাপদাহের তীব্রতা কিছুটা কমেছে। ফলে জনমনে নেমে এসেছে স্বস্তির আবহ।
তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে গণপরিবহনের যাত্রী ও সড়কে থাকা পথচারীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন। বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাথের বিক্রেতাদের দোকান গুটিয়ে নিতে দেখা যায়। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠা অনেককে অবশ্য ইচ্ছা করে বৃষ্টিতে ভিজতেও দেখা গেছে। যদিও বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরপরই রোদের দেখা পায় নগরবাসী। এ সময় তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আব্দুল বাকের বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ও থেমে থেমে হালকা ও মাঝামাঝি ধরনের বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বজ্রপাতে পেকুয়ায় ২ জনের মৃত্যু
চকরিয়া ও চকরিয়া উপকূল (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র তাপদাহে প্রচণ্ড গরম ও তার সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফলে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। গতকাল ভোররাতে এক পশলা বজ্রবৃষ্টিতে কিছুটা শীতলতা নেমে আসে। বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতে দু’জন লবণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া উপজেলার উপর দিয়ে গতকাল ভোর রাতে প্রথমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বজ্রবৃষ্টি নামে। এ সময় পেকুয়ায় উপজেলার মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়নে লবণমাঠে উৎপাদিত লবণ সংরক্ষণ করতে ছুটে যান লবণচাষিরা। এতে বজ্রপাতে মো: দিদার (৩৪) ও মো: আরমান (২৫) নামে দুই লবণচাষির মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্লাদ্বিয়া এলাকার জমির উদ্দীনের ছেলে মোহাম্মদ দিদার ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকার জামালের ছেলে মোহাম্মদ আরমান। স্থানীয়রা লবণের মাঠ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলার সরকারি হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত হয় বলে জানান।
সিলেটে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন কৃষক
সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুইজন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দীঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের হাওরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষকের নাম বাবুল আহমদ (৪৮)। তিনি উপজেলার দক্ষিণ কুয়রেরমাটি এলাকার মরহুম আব্দুস সালামের ছেলে। আহতরা হলেন- একই এলাকার ফাহিম আহমদ (১৭) ও প্রদীপ বিশ্বাস (২০)।
জানা গেছে, দুপুরে বাবুল হাওরে ধান কাটতে যান। এ সময় তার সাথে ছিলেন ভাতিজা ফাহিম আহমদ ও প্রদীপ বিশ্বাসসহ আরো দুইজন। হঠাৎ প্রচণ্ড বজ্রপাত হলে জ্বলসে গিয়ে গুরুতর আহত হন তারা। পরে স্থানীয় লোকজন ধানকাটা জমি থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা বাবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুইজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটিতে বজ্রপাতে ৩ জন নিহত, আহত ৭
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি জানান, প্রায় এক মাস ধরে তীব্র তাপদাহের পর রাঙ্গামাটিতে স্বস্তির বৃষ্টি নামলেও কাল প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি শহরে এক পুরুষ ও বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ও সাজেকে দুই নারী বজ্রপাতে মারা যায়। এ সময় বজ্রপাতে বাঘাইছড়িতে আহত হয়েছে আরো সাতজন। মারা যায় একটি গরুও।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাঙ্গামাটি শহরের সিলেটি পাড়া ও বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়ন ও সাজেকের লংথিয়ান পাড়ায় এই বজ্রপাত হয়।
নিহতরা হলেন, রাঙ্গামাটি শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো: নজির আহমেদ (৫০), বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন রূপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লকের বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) ও সাজেক ইউনিয়নের বেটলিং মৌজার লংথিয়ান পাড়ার বাসিন্দা তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।
জানা গেছে, রাঙ্গামাটি শহর সংলগ্ন সিলেটি পাড়া এলাকায় কাপ্তাই হ্রদে বরশি দিয়ে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন নজির আহাম্মেদ (৫০) নামের এক ব্যক্তি। পরে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারা মৃত ঘোষণা করেন। রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা: শওকত আকবর খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নজির আহাম্মদ নামে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান।
বাঘাইছড়ির রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা জানান, ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লকের বাসিন্দা লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান। এ সময় একটি গরুও মারা যায়। অন্য দিকে সাজেক ইউনিয়নের বেটলিং মৌজার লংথিয়ান পাড়ার বাসিন্দা তনিবালা ত্রিপুরা গৃহিণী (৩৭) ঘরে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, অনেক দিন পর গতকাল সকালে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হয়। এতে বাহারজান বেগম ও সাজেকে তনিবালা ত্রিপুরা নামে দুইজন মহিলা বজ্রপাতে নিহত হন। নিহতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
স্বস্তি নেই চুয়াডাঙ্গায় :তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরেই থাকছে
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, স্বস্তি নেই চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষের। আবহাওয়া অফিস থেকে স্বস্তির খবর দিলেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরেই থাকছে। গতকালও ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ৪০ ডিগ্রির ওপরে থাকছে। চলতি মৌসুমের প্রায় প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
একটানা এমন তাপমাত্রার ফলে খরতাপে জেলায় খুব অতিতীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে জনজীবন ওষ্ঠাগত। ভুগছে প্রাণীকুলও। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে গরু, ছাগল, ও ফার্মের মুরগি, পোষা কবুতরসহ অন্যান্য প্রাণী। এ দিকে তীব্র তাপদাহে মাঠের ফল-ফসলও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে। কোথাও কোথাও
ফসল ঝলসে যাওয়ার খবর মিলেছে
এখানে দিন রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও থাকছে কম। দিনে প্রচণ্ড রোদ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরম নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেলা ১২টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। অপ্রয়োজনে কেউ বের হলে ছাতা মাথায় বের হচ্ছেন। দেখা গেছে। এই তাপপ্রবাহে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর এবং ভ্যান ও রিকশা শ্রমিকেরা। গরমে ঘেমে-নেয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, গতকাল বেলা ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ভালুকায় ধান কাটতে গিয়ে হিটস্ট্রোকে কৃষকের মৃত্যু
ভালুকা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের ভালুকায় ধান কাটতে গিয়ে হিটস্ট্রোকে রহিম উদ্দিন (৫৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নের বান্দিয়া গ্রামে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ভালুকা উপজেলার বান্দিয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রহিম উদ্দিন নিজের ক্ষেতে পাকা বোরো ধান কাটতে যান। কিছুক্ষণ ধান কাটার পর তিনি মাটিতে ঢলে পড়েন। খোঁজ পেয়ে পাশের ধানক্ষেতে থাকা অপর এক কৃষক অজ্ঞান অবস্থায় ধান ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকদের খবর দেন।
অবশেষে ঢাকায় বৃষ্টি : টানা এক মাস তাপদাহের পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলল রাজধানী ঢাকায়। গতকাল সন্ধ্যা থেকেই রাজধানী ঢাকার আকাশ মেঘ ছিল। ঘড়ির কাঁটা যখন রাত ৯টা, তখন রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় শুরু হয় বৃষ্টি। তাপদাহের মধ্যে বাড়তি স্বস্তি নিয়ে এসেছে মধ্য বৈশাখের এ হালকা বৃষ্টি। গতকাল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট, ইসলামপুর, সূত্রাপুর, রায়সাহেব বাজার, রায়েরবাগসহ একাধিক এলাকায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি না হলেও অন্যান্য এলাকায় আকাশ মেঘলা অবস্থায় দেখা গেছে।
বৃষ্টি হওয়ায় গরমের নাভিশ্বাস থেকে একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস এসেছে জনজীবনে। অনেকেই বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা