১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে রেল যোগাযোগ বন্ধ সিলেটে

হবিগঞ্জে শিলাবৃষ্টি, লণ্ডভণ্ড শ্রীমঙ্গল
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় কালবেশাখী ঝড়ে আটকেপড়া ট্রেন : নয়া দিগন্ত -

তীব্র তাপদাহের পর গতকাল বিকেলে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে সিলেটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। হবিগঞ্জে শিলাবৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল বাতাস ও ঝড়ের তীব্রতায় গাছপালা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে শ্রীমঙ্গল।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে গতকাল রোববার বিকেল ৫টার পর থেকে সারা দেশের সাথে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বয়ে যায় আধঘণ্টার কালবৈশাখী ঝড়। এতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। ওই সময় বনের মাঝে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ট্রেনের যাত্রীরা।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গলের মাঝে রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সাথে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তিনি জানান, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ৫টা ২০ মিনিটে ও ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে ৫টা ৩৭ মিনিটে আটকে আছে। গাছ অপসারণের কাজ চলছে। শিগগিরই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকশতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গাছপালা উপড়ে গেছে, বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বিকেলে হঠাৎ মৌলভীবাজার জেলা দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়। এতে জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। জানা গেছে কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ-বাঁশ ঘরের ওপরে পড়েছে। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল শহরে শতাধিক বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে। সড়কে গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। শহরের বিভিন্ন দোকানের চাল উড়ে গেছে। উপড়ে গেছে অসংখ্য বড় বড় গাছ।

শ্রীমঙ্গল শহরের বাসিন্দা মামুন আহমদ বলেন, হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড় আসে। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শ্রীমঙ্গল শহর। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কয়েক শত গাছ ভেঙে পড়েছে। ঘরবাড়িসহ দোকানের টিন উড়ে গেছে।
হবিগঞ্জে সংবাদদাতা জানান, সারা দেশে তীব্র তাপদাহের মধ্যে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে হাওরের বোরো ধান ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার পর দুই ধাপে নবীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকা, গজনাইপুর, দেবপাড়া ও পানিউমদা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ২০ মিনিটের মতো এ শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিল। একেকটা শিলার ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম। এতে অনেকের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে এমন ঝড়ে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধান কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। এখন শিলাবৃষ্টির কারণে অনেক ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হাওরের ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টা এভাবে শিলাবৃষ্টি হলে আমরা ধান ঘরে তুলতে পারতাম না।

 


আরো সংবাদ



premium cement