১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অস্ত্রের সন্ধান পেল পুলিশ

-


পুরান ঢাকার ইসলামবাগ এলাকায় ঈদের ছুটিতে একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে প্রথমে দুই নারীকে এবং পরে তাদের দেয়া তথ্যে আরো পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ জানায়, তারা সাধারণ চোর নয়। বাসাবাড়িতে চুরির পাশাপাশি তারা অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা করে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্রও উদ্ধার করেছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- রাজীব হোসেন রানা, শাহীন, আবুল হাসান সুজন, পারভেজ নুর ও মানিক চন্দ্র দাস। এই ঘটনায় জড়িত আরো দুইজন পলাতক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খ. মহিদ উদ্দিন জানান, পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গত ১২ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে চুরি হয়। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে অভিযান চালিয়ে চুরির সাথে জড়িত দুই নারীসহ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রের মূলহোতা ২২ মামলার আসামি মামুন। মামুনের অন্যতম সহযোগী তার মা হাসিনা। তারা স্থানীয়ভাবেও চোর হিসেবে পরিচিত। তিনি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গিয়ে চক্র গড়ে তোলে মামুন। কারাগারে গড়ে তোলা ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি স্থানীয়ভাবে মামুন বাহিনী হিসেবে পরিচিত। তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চুরি করে আসছিল।

মামুনের চক্রের একটি অংশের সদস্য রাজীব হোসেন রানাসহ চক্রের তিন সদস্য প্রায় এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসায় চুরি করে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে এই ঘটনায় থানা পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগীরা। এর কারণ এই বাসা থেকেই টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বেশ কিছু অস্ত্র চুরি হয়ে যায়। ফলে এই অবৈধ অস্ত্রের মালিক শাহিন কোনো অভিযোগ করেননি।
পরবর্তীতে অস্ত্রের মালিক শাহিনকে গ্রেফতার করার পর গত ২২ এপ্রিল থকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্র ও ৩৯ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় শাহিনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
অস্ত্র উদ্ধার মামলায় গ্রেফতার রানার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, সুজনের বিরুদ্ধে একটি, মানিকের বিরুদ্ধে চারটি ও পারভেজের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা পুলিশের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে রয়েছেন।
গত এক বছরে চুরি করে পাওয়া অস্ত্রগুলো নানা কৌশলে হাত বদল হয় উল্লেখ করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ বলেন, মামুনের চক্রটি মূলত চুরির সাথে জড়িত। সাধারণত যখন কোনো চক্র গড়ে ওঠে তখন তারা নানা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে থাকে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে এই অস্ত্রগুলো একাধিকবার হাত বদল হয়েছে। কেনাবেচা হয়েছে। তবে অস্ত্রগুলো কোনো ধরনের ব্যবহারের তথ্য পাইনি। ব্যবহারের আগেই জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যার বাসা থেকে অস্ত্রগুলো চুরি হয়েছে তিনিও কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি আমাদের তদন্তে যখন গ্রেফতার হন তখনো তিনি অস্ত্রের বৈধতার কোনো তথ্য দিতে পারেননি। অস্ত্রগুলো চুরি হওয়ার পরে তিনবার হাত বদল হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র তিনি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন সেই বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।


আরো সংবাদ



premium cement