তাপপ্রবাহে মুরগি খামার ও কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি
- আবুল কালাম ও কাওসার আজম
- ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৩
- ১০ দিনে খামারিদের ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা
- চিটা হচ্ছে ধান মুকুলেই ঝরছে ফল
টানা তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের খামার ও কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে অনেক খামারি ভয়ানক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান করে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার কথাও ভাবছেন।
এ অবস্থায় প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার গতকাল সন্ধ্যায় জানান, গত ১০ দিনে প্রায় ১০ লাখ মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। যার ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। প্রতিদিন ১ লাখ মুরগি মারা যাচ্ছে। যার ৮০ শতাংশ ব্রয়লার, ১০-১৫ শতাংশ লেয়ার ও সোনালি এবং বাকি ৫ শতাংশ দেশী মুরগি। তার মতে, হিটস্ট্রোকে সব থেকে বেশি মুরগির মৃত্যুর হার নরসিংদীতে। এ অঞ্চলে গত ১২ দিনে প্রায় তিন লাখ মুরগি মারা গিয়েছে। এর পর ময়মনসিংহে, গাজীপুর অঞ্চলে ২ লাখ, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১ লাখ ৭৫ হাজার, সিলেট অঞ্চলে ৫০ হাজার, যশোর ১ লাখ ৫০ হাজার, পাবনায় ৫০ হাজার, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ মুরগি মারা গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে দেশের মুরগি ও ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ভয়ানক পরিস্থিতিতে ডিম ও মুরগি উৎপাদন কমেছে ৪ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত।
সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, দেশে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার খামার ছিল। কিন্তু লোকসান গুনতে গুনতে ক্ষুদ্র খামারিরা পথে বসেছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এই ক্ষুদ্র খামারিদের স্বার্থ দেখে না। তারা শুধু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ দেখেন। ক্ষুদ্র খামারিদের ভালোমন্দ দেখলে বর্তমান খামার সংখ্যা ৬ লাখে পৌঁছতো। কিন্তু, সেটা এখন কমতে কমতে ৬০ হাজারে নেমেছে। সুমন হাওলাদার জানান, বর্তমানে যে অবস্থা তাতে আগামীতে আরো ১৫-২০ হাজার খামার বন্ধ হয়ে যাবে। গোশত ও ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা: মো: শাহীনুর আলম জানান, হিটস্ট্রোকের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর কন্ট্রোল রুম খুলেছে। সেখানে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব রাখা হচ্ছে। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা এ্যানিম্যাল প্রডাকশন অফিসার আলী রেজা গতকাল সন্ধ্যায় জানান, গত তিন দিন ধরে (২৫,২৬ ও ২৭ এপ্রিল) আমরা হিসাব রাখছি। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩১৩ টি মুরগি মারা যাওয়ার তথ্য আছে। এর মধ্যে ব্রয়লার ও লেয়ারের সংখ্যাই বেশি।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা বলছেন, তবে, এখন পর্যন্ত কোনো গরু বা অন্য কোনো গবাদিপশু মারা যাওয়ার তথ্য আমাদের কাছে নেই। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: রেয়াজুল হককে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন জানান, হিটস্ট্রোকে এখন পর্যন্ত ১০-১৫টি গরু মারা যাওয়ার তথ্য আছে আমাদের কাছে। তবে, মারা যাওয়ার চাইতে এই গরমে গরুর প্রচুর মিস-ক্যারেজ-এর ঘটনা ঘটছে। তিনি জানান, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে দুগ্ধজাত গরুর ওলান শুকিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ দুধের উৎপাদন কমে গেছে। আসছে কোরবানি উপলক্ষে খামারে যেসব গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়, প্রতিদিন ১ কেজি করে গরুর ওজন বাড়ার কথা। এ রকমই হয়। কিন্তু, ওজন বাড়া তো দূরের কথা, আরো যেন কমছে। ফলে এখানেও খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দিনে তিন চার বার গোসল করিয়ে গরু সুস্থ রাখা যাচ্ছে না। ক্ষুরারোগসহ বিভিন্ন রোগ দেখা যাচ্ছে।
এ দিকে রেকর্ড ভঙ্গ করা তাপমাত্রায় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি খাত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশাখে এটাই স্বাভাবিক। তবে এবার বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। কৃষি অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ধানসহ আমাদের কৃষি এ তাপমাত্রার সাথে সহনশীল নয়। ফলে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে কৃষিতে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক ঘটনা ঘটছে। আগের চেয়ে গরমের ব্যাপ্তি বেড়েছে। গত বছর আমরা দেখেছি, আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হয়নি। ভূগর্ভস্থ পানি পেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে সবকিছুর জন্য একমাত্র জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী নয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে না, সারা বিশ্বেই এমন অবস্থা।’ অন্য দিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি)-এর সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু ঢাকা নয়, এখন জেলা-উপজেলা পর্যায়েও পুকুর বা জলাধার ভরাট করে পরিকল্পনাহীন ভবন উঠেই চলেছে। নগরগুলোর প্রতিটি ভবন পরিকল্পিত না হলে এবং এলাকাগুলোতে সবুজের ভারসাম্য আনা না হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধŸতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: কামরুজ্জামান মিলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘উষ্ণ আবহাওয়ায় ভবিষ্যতে অস্বস্তি আরো বাড়বে। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে টানা তিন দিন থাকলে যে ধানে পরাগায়ন পর্যায়ে ফুল এসেছে, ওই ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চিটা হয়ে যাবে।
হিট শকে মাঠের বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা। তারা বলছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামে বিদ্যুৎচালিত সেচ ব্যবহারে বিঘœ ঘটছে। এ কারণে শেষ মুহূর্তে বোরো ধানের জমিতে পানি দেয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম, জামরুলসহ মৌসুমি ফল মুকুলেই ঝরে পড়ছে। মাঠেই রোদের তাপে পুড়ে মরে যাচ্ছে ভুট্টা, কলাসহ নানা ধরনের ফসল।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সাবেক (পিকেএসএফ) সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কৃষি এ ধরনের তাপমাত্রার সাথে অভ্যস্ত নয়। ফলে কৃষিতে ক্ষতি তো হবেই। যেমন ধরেন এ তাপপ্রবাহের কারণে আমের বেশ ক্ষতি হবে। অনেক আমের গুটি ঝরে গেছে। ধানে চিটা পড়ে যাচ্ছে।’ এ অবস্থা চলতে থাকলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। কতটুকু প্রভাব পড়বে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
গোয়ালন্দে পোলট্রি খামারি ও মৎস্যচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গোয়ালন্দে বেড়েছে লোডশেডিং। এতে বিপাকে পড়েছেন মৎস্যচাষি ও পোলট্রি মুরগি খামারিরা। গরমে মারা যাচ্ছে মাছ ও মুরগি। কমেছে মাছ, গোশত ও ডিম উৎপাদন। খামারে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার ও জেনারেটরের পেছনে বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। বেশির ভাগ পুকুর, ডোবানালা শুকিয়ে যাওয়ায় হ্যাচারিগুলোতে মাছের পোনা উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার পুকুরে মাছ ও পোনা মারা যাচ্ছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ভর্তুকির দাবি করছেন অনেক খামারি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার উজানচর ছোটভাকলা, দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট খামার ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন খামারে প্রতিদিন শত শত মুরগি মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুকুর ও ডোবা নালা শুকিয়ে পানি গরম হয়ে মাছ মারা যাচ্ছ।
গোয়ালন্দ উপজেলার খামারি নজরুল ইসলাম, সেলিম মিয়া, লিখন খাঁন, হাবিব মিয়া, শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন জনের খামারে মারা যাওয়া মুরগি দেখা যায়। প্রতিদিন খামারে তিন-চার কেজি ওজনের ৮-১০টি করে মুরগি মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ডিম উৎপাদনও কমে গেছে। খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও অতিরিক্ত তাপে ও লোডশেডিংয়ে তা কাজে আসছে না।
অপর দিকে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ পুকুর, খালবিল, ডোবা, নালা শুকিয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিছু কিছু পুকুরে কিছু পানি থাকলেও তা বেশি তাপমাত্রার কারণে গরম হয়ে মাছ মারা যাচ্ছে।
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা যায়, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার কাছাকাছি থাকলে ৮০ শতাংশ মৎস্য রেণু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত রেণু ও পোনা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। তা ছাড়া এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মাছ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। এই সময়টায় মাছের চাষ স্বাভাবিক না থাকলে মোটা দাগে মাছ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গোয়ালন্দের অনেক মৎস্যচাষি এ সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মৎস্য হ্যাচারি থেকে মাছের ডিম কিনে এনে রেণু পোনা তৈরি করে ব্যবসা করে থাকেন। বর্তমান পোনা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। কিন্তু ইতোমধ্যে অনেকের পুকুরের পানি অত্যধিক গরম হয়ে ডিম রেণু নষ্ট হয়ে গেছে। বেশির ভাগ পুকুরে পানি না থাকায় ডিম ও পোনা ছাড়তে পারছে না। ফলে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
গলাচিপায় বিপাকে মাছ চাষিরা
গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, গলাচিপা উপজেলা তাপদাহের জন্য পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে রয়েছেন শত শত চাষি। খাল নদী থেকে পুকুরে পানি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের সুহুরী ১ম খণ্ড এলাকার সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করেছেন। কয়েক সপ্তাহে তীব্র তাপদাহে ও বৃষ্টির না হওয়ায় পুকুরের পানি কমে যাওয়ার গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মাছগুলোর গায়ে পচন দেখা দিয়েছে। এতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। তার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। একই রকমের ঘটনা ঘটেছে চর সুহুরীর তালেব প্যাদার সমিতি করা চারটি পুকুরের মাছের। গতকাল শনিবার সকাল থেকে মাছগুলো মরে ভেসে উঠা শুরু হয়েছে। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের খবির মৃধা ও জাফর মৃধা জানান, গরমে পুকুরে মাছ চাষে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পুকুরের পানি কমে যাওয়ায় দূর থেকে মেশিনের সাহায্যে পানি আনা হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে উপজেলার শত শত মাছচাষিরা উৎকণ্ঠে রয়েছে বলে জানা গেছে। গলাচিপা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: জহিরুন্নবী জানান, মাছ মারা যাওয়ার খবর কোনো কৃষক জানাননি তবে তীব্র তাপদাহে মাছচাষিরা বিপাকে রয়েছেন।
তাপপ্রবাহে প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় করণীয় : তাপ প্রবাহজনিত পীড়ন (স্ট্রেস) সহনীয় করতে গবাদি প্রাণী ও পোলট্রি খামারিদের কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট লাইভস্টক প্রোডাকশন রিসার্চ সেন্টার। সংস্থাটির পরামর্শ হলো- এই তাপপ্রবাহের সময় গবাদি প্রাণী বা পোলট্রির ঘর শীতল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য শেডের চালে ভেজা চট বা বস্তা বা কাপড় বিছিয়ে দিতে হবে। সময়ে সময়ে তাতে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। ঘরের ভেতরেও ভেজা চট বা বস্তা বা কাপড় ঝুঁলিয়ে রাখলে তা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। শেডের চালের উপরিভাগে প্রতিফলক রঙ করা যেতে পারে। ভিতরে সহজলভ্য ও সস্তা উপাদানের (যেমন- চাঁটাই, ছন, খড় ইত্যাদি) ফলস সিলিং লাগিয়ে দিলে ঘর অনেক ঠাণ্ডা থাকবে। শেডের উপরে সরাসরি সূর্যের তাপ প্রতিরোধে রঙিন (কালো বা স্বচ্ছ নয়) পলিথিন সামিয়ানার মতো করে টাঙিয়ে দেয়া যেতে পারে। ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনে ফ্যান ব্যবহার করতে হবে। গবাদি প্রাণীকে দিনে একাধিকবার গোসল করানো বা পাইপের সাহায্যে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। গবাদি প্রাণী বা পোলট্রিকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। পোলট্রির শেডে পানির পাত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে পানির সাথে উপযুক্ত পরিমানে লবণ, ভিটামিন সি, ইলেক্ট্রোলাইট, গ্লুকোজ বা অ্যামাইনো এসিড ইত্যাদি মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে।
সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আবদ্ধ ঘরে বা খোলা মাঠে গবাদি প্রাণী না রেখে প্রাকৃতিক ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা উচিত। গবাদি প্রাণীকে খড় বা অতি পরিপক্ব শক্ত আঁশযুক্ত খাবার সরবরাহ পরিহার করে নরম কচি ঘাস সরবরাহ করতে হবে। হজমের সময় তাপ বৃদ্ধি কমাতে দুধেল গাভীকে কম আঁশ এবং উচ্চ শক্তিসম্পন্ন খাবার সরবরাহ করলে তা হিটস্ট্রেস কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা