১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন দূতাবাসের মতবিনিময়
-


নিজের ও এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনকারী দেশ হিসেবে (নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার) বাংলাদেশকে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
গতকাল মার্কিন দূতাবাসে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব’ বিষয়ক মতবিনিময়ে এ কথা জানান দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি এ অঞ্চলের সব দেশের নিজেদের সুরক্ষা এবং অন্যদের সহায়তা করার সক্ষমতা থাকা উচিত। দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা এ ধরনের টেকসই ও ইতিবাচক নিরাপত্তা কাঠামো দেখতে চাই। ফোর্সেস গোল-২০৩০ অর্জন বাংলাদেশের সশ¯্র বাহিনীগুলোর একটি লক্ষ্য। আমরা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছি। এর কারণ হচ্ছে, আমরা চাই বাংলাদেশ দায়িত্বশীলতার সাথে এ অঞ্চলে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ দেশে পরিণত হোক।

ম্যাক্সওয়েল বলেন, আমরা দেখেছি এ অঞ্চলে ইতিবাচক অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। নিজের এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সক্ষমতা অনেকগুণ বাড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দিচ্ছে।
ম্যাক্সওয়েল বলেন, আমরা জানি বাংলাদেশ এ অঞ্চলের দেশগুলো এবং বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলে। এটিতে কোনো সমস্যা নেই। আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কণ্ঠস্বর অনেক জোরালো। এটি সার্বিক সম্পর্কের একটি অংশ। আমরা বহুমাত্রিক সম্পর্কের দিকে জোর দিচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সহযোগিতা।
দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে দিল্লির নেতৃত্বকে স্বীকার করে ওয়াশিংটন। এ বিষয়টিকে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলো কিভাবে দেখে- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখি না। গণমাধ্যমসহ নানা জায়গায় শুনেছি, ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এটা সত্যি না। আমরা যদি দ্বিপক্ষীয় অভিন্ন স্বার্থের নিরিখে সম্পর্কটাকে দেখি তাহলেই আমরা একসাথে কাজ করতে পারি। এটাই আমরা সরকার, গণমাধ্যমসহ সবাইকে জোর দিয়ে বলছি।

ম্যাক্সওয়েল বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় দু’টি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া। এর মধ্যে একটি জাহাজ গত বছরের জুনে মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড়ের পরে ত্রাণসহায়তা দিয়েছিল। এই ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতাই আমরা বাংলাদেশের সাথে চাই, যেখানে এই অঞ্চলের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।
মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। আমরা চাই, এটি যেন সবাই পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে। আর কোয়াড কোনো জোট নয়। এটি একটি গ্রুপ, যেখানে সমমনা কয়েকটি দেশ নিজেদের ভেতর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এ কারণে আমি মনে করি, কোয়াড নিয়ে বাংলাদেশের ভয় পাওয়া উচিত নয়। আমার ধারণা, বাংলাদেশ ভয় পায় না।


আরো সংবাদ



premium cement