১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মিয়ানমারে ফিরল সেনাসহ আশ্রিত ২৮৮ জন

-

মিয়ানমারে চলমান সঙ্ঘাতের মধ্যে পালিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নেয়া দেশটির জান্তা বাহিনীর ২৮৮ সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাদের কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছরা বিআইডব্লিউটিএর জেটি ঘাট দিয়ে একটি জাহাজে করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
২৮৮ জনের মধ্যে ২৬১ জনই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্য। বাকিদের মধ্যে চার সেনাসদস্য ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা রয়েছে। গত ৩ মার্চ থেকে কয়েক ধাপে এসব মিয়ানমারের নাগরিক বান্দরবানে আশ্রয় নিয়েছিল।
পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা গেছে, মিয়ানমারের ২৮৮ জনকে ভোর ৪টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়ন থেকে বাসে করে প্রথমে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আনা হয়। এরপর সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে। দুপুরে জাহাজটি সেন্টমার্টিন উপকূল হয়ে মিয়ানমারের সিটওয়েতে ফিরে যায়।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে মিয়ানমার নাগরিকদের হস্তান্তর উপলক্ষে কক্সবাজার বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের কাছে বিজিবির প্রতিনিধিদলের সাথে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। পরে কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইনের উদ্দেশ্যে তারা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট ত্যাগ করেন। এর আগে জাহাজে করে আগত মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ক্যাম্পে অবস্থানরত মিয়ানমারের বিজিপি ও অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাহাজে করে আগত বিজিপি সদস্যদের কাছে আশ্রয়প্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বিজিপির পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ দূতাবাসের চারজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বুধবার মিয়ানমারে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছে ১৭৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক। তারা যে জাহাজে বাংলাদেশে ফিরেছেন সেই মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজেই ফেরত গেছেন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ২৮৮ জন মিয়ানমার বিজিপি সদস্য। কারাভোগ শেষে দেশে ফেরত আসা ১৭৩ জন বাংলাদেশীর মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ির জাকের হোসেন বলেন, দুই বছর আগে মানব পাচারকারীদের হাত ধরে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল সে। পথিমধ্যে তাদেরকে মিয়ানমারের জঙ্গলে ফেলে রেখে দালালরা সরে পড়ে। পরে মিয়ানমার পুলিশ তাদেরকে সে দেশের জেলে পাঠিয়ে দেয়।
এর আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আরো ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সঙ্ঘাত চলছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement