১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে বাংলাদেশী দুই জেলে গুলিবিদ্ধ

-

সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের একজনকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হলেও অপরজন গুরুতর অবস্থায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীর মোহনাস্থ নাইকংদিয়া এলাকায় এই গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি।
আহত জেলেরা হলেন, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের উত্তর পাড়ার আলী আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (২০) ও দক্ষিণ পাড়ার সিদ্দিক আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক (২৫)।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানিয়েছেন, এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ফিশিং ট্রলার সাগর থেকে মাছ ধরে কূলে ফেরার সময় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে দুইজন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রথমে টেকনাফ হাসপাতালে আনা হলে একজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা: সুমাইয়া নাসনিন জানান, আহতদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অপরজন ফারুকের তিনটি গুলি লেগেছে। হাত ও পায়ে লাগা গুলিতে গুরুতর হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে।
আহত জেলে মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, গত চার দিন আগে এফবি মায়ের দোয়া ট্রলার নিয়ে ৯ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যান। রোববার ফেরার পথে সাগরে মিয়ানমারের অংশ অবস্থান নেয়া মিয়ানমারের একটি নৌ যান থেকে তাদের সঙ্কেত দিয়ে তাদের দিকে যেতে বলেন। ওটা মিয়ানমারের জলসীমা হওয়ায় তারা শাহপরীর দ্বীপের দিকে চলে আসতে থাকে। এ সময় পর পর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। অন্যরা অহত রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি সংঘর্ষ চলছে।
বিষয়টি নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কোস্ট গার্ড মহাপরিচালক : বাংলাদেশের জলসীমার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইনে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জলসীমায় কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তের যেকোনো নিরাপত্তাজনিত কারণে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা সদা সতর্ক রয়েছেন। এ ছাড়া রোহিঙ্গা কিংবা রাখাইনের যেকোনো অনুপ্রবেশ রোধে কোস্ট গার্ডের জনবল ও জলযান বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাখাইনের সঙ্ঘাত সংঘর্ষ বাংলাদেশের জন্য কোনো হুমকি মনে করে না।
গতকাল সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের জলসীমা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান রাখাইনে চলমান সঙ্ঘাতের কারণে গোলাগুলি সংঘর্ষ বিস্ফোরণের শব্দ এপারে চলে আসছে। এ কারণে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। এ ব্যাপারে কোস্ট গার্ডসহ বিজিবি নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সীমান্ত সতর্ক নজরদারিতে রয়েছে। তিনি জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশরোধ মাদক পাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধে কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement