১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হামাস কাতার থেকে সরিয়ে নেবে রাজনৈতিক কার্যালয়

-

- রাফাহ শহরে আবারো ইসরাইলের বিমান হামলা
- এরদোগানের সাথে আলোচনা করতে তুরস্কে হানিয়া

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায় দাবি না মেনে বরং কাতার থেকে রাজনৈতিক কার্যালয় গুটিয়ে নেয়াকেই শ্রেয় মনে করছেন গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতারা। ফলে এখন ওমান বা অন্য কোনো দেশে পাড়ি জমানোর বিষয়টি ভাবছেন সংগঠনটির নেতারা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে কয়েকটি পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করেছে। খবর : জেরুসালেম পোস্ট, টাইমস অব ইসরাইল, আলজাজিরা ও এএফপি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এক আরব মধ্যস্থতাকারী জানান, যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবারো স্থবির হয়ে পড়েছে। খুব শিগগিরই শুরু হবে, এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। হামাস ও আলোচকদের মধ্যে অনাস্থা বাড়ছে। আরেক আরব মধ্যস্থাকারী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আলোচনা ভণ্ডুল হওয়াটা একেবারেই সত্যি। বন্দিবিনিময়ের চুক্তিতে হামাস নেতারা রাজি না হলে বহিষ্কারের হুমকির মুখে পড়বে।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ইসরাইলের সাথে সাময়িক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না হামাস। এতে হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে অল্প কিছু দিন যুদ্ধ বন্ধের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু হামাস মনে করছে, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হতে হবে। ইসরাইলি বাহিনীকে গাজা ত্যাগ করতে হবে। উদ্বাস্তু সবাইকে তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দিতে হবে। এই প্রস্তাবে ইসরাইল রাজি হচ্ছে না।
আর ইসরাইল রাজি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও তাতে সম্মতি দিচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে হামাস নেতারা যাতে কাতারে থাকতে না পারে, সে জন্য কাতারের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। হামাস নেতাদের বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদেরকে কাতার ত্যাগ করতে হবে। হামাস নেতারা মনে করছেন, অন্যায় দাবি না মানার চেয়ে কাতার ত্যাগ করাই উত্তম হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দিকে এগোচ্ছিল ওমানও। গত বছর ওমান তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে ইসরাইলকে অনুমতিও দিয়েছিল। কিন্তু ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে ওই অনুমতি বাতিল করে ওমান।
এ দিকে হামাস নেতারা মার্কিন দাবি না মেনে কাতার ত্যাগ করার বিষয়টি বিবেচনা করায় ইসরাইল ভয় পেয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেরুসালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, হামাস নেতারা কাতার ত্যাগ করলে ইসরাইলি বন্দীদের মুক্ত করার ব্যাপারে যে আলোচনা চলছে, তা ভেঙে যেতে পারে। আবার কাতারও মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকায় থাকবে কি না তা নিয়ে ভাবছে। কয়েক দিন আগে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সানি ঘোষণা করেছেন, তারা ইসরাইল ও গাজার মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে কি না তা নিয়ে নতুন করে ভাবছে।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা তাদের নিজস্ব স্বার্থে আমাদের অবস্থানের অপব্যবহার করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে সে জন্য তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ব্যাপক যোগাযোগ করেছি আমরা। আমরা এই অঞ্চলের সব পক্ষের কাছ থেকে শুনছি যে, তারা যুদ্ধ চায় না। এই অঞ্চলে উত্তেজনা আর বাড়তে না দেয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা।’
রাফাহ শহরে বিমান হামলা : এ দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহ শহরের একটি আবাসিক বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। গতকাল শনিবার এ হামলার খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা। এ ছাড়া ইসরাইলি বাহিনী দ্বিতীয় দিনের জন্য অধিকৃত পশ্চিমতীরের তুলকারেমের নুর শামস শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়েছে। এতে একজন কিশোরসহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ইসরাইলি বাহিনী রাফাহ সংলগ্ন এলাকায় আরো সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং জেলার পূর্বাঞ্চলে কৃষিজমি ধ্বংস করেছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৯০১ জন। গতকাল শনিবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে।
হামাস নেতা হানিয়া তুরস্কে : ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের সাথে আলোচনার জন্য দেশটিতে গেছেন হানিয়া। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে এরদোগানের সাথে আলোচনার জন্য হানিয়া তুরস্কে গেলেন।
শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এরদোগান ও হানিয়া চলমান গাজা সঙ্ঘাত নিয়ে আলোচনা করবেন। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হানিয়া। তুরস্ক সফরে তার সাথে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল রয়েছে। ইরানে ইসরাইলের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। এ দিকে গাজায় নতুন করে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরদোগান গত বুধবার জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। তিনি নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর হবেন। তবে গতকাল সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এরদোগান হামাস নেতা হানিয়ার সাথে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি।


আরো সংবাদ



premium cement
সুইজারল্যান্ডে থাকা সিরিয়ার হিমায়িত অর্থের পরিমাণ জানালো সুইস সরকার ইসরাইলি হামলায় ২১ জন নিহত : বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা ২০২৪ সালে ৫৪ জন সাংবাদিককে হত্যা যাত্রাবাড়ী থানার ওসিকে ১৫ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে পলককে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল, স্বীকার করলেন ডিজি আবারো গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ জাতিসঙ্ঘের ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়ল ১৪.৪৮ পয়েন্ট সিরিয়ায় বাশার সরকারের পতনে ইরানি মুদ্রার মান রেকর্ড তলানিতে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজেছাত্র আহত তারেক রহমান কবে ফিরবেন, জানালেন মির্জা ফখরুল

সকল