১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সৌদিতে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছেন অনেক কর্মী

-

বাংলাদেশ থেকে বৈধ এবং সুস্থভাবে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্য সৌদি আরবে যাওয়ার পর কিছু শ্রমিক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন। মাসের পর মাস এসব শ্রমিকের সাথে তাদের পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। উপায় না পেয়ে তাদের সন্ধান চেয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কাছে দেশের ফেরানোর আকুতি জানিয়ে আবেদন করছেন স্বজনরা। আবার কোনো কোনো শ্রমিক সৌদি আরবের জেলখানা অথবা অন্য স্থান থেকে ফ্রি টিকেটে দেশে ফিরলেও তাদের আত্মীয়স্বজনদের খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিতে হচ্ছে প্রশাসনের সহযোগিতা।
সর্বশেষ চাঁদপুর জেলার সদর থানার বাঘড়া বাজার সেকদী গ্রামের রাজন খানের সন্তান কাউসার খানের সৌদি আরব যাওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন, সৌদি আরবে গিয়ে কাজ না পেয়ে কাউসার খান মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। সৌদি আরবের রিয়াদের কোন শহরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে তারা নানাভাবে জানতে পেরেছেন। এই শ্রমিককে দ্রুত খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু আবেদন জানানোর এক মাস পর হওয়ার পরও এখনো মো: কাউসার খানের বিষয়ে কিছুই জানতে পারছে না গ্রামে থাকা পরিবারের সদস্যরা। শুধু কাউসার খান নয়, তার মতো আরো অনেকে সৌদি আরবে গিয়ে নানা কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী মো: কাউসার খানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে লিখিত আবেদন করেন স্বজনরা। ওই আবেদনে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় পরিচালককে (প্রশাসক ও উন্নয়ন)।
অভিযোগে কাউসার খানের মা রানু বেগম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার ছেলে কাউসার খান, (পাসপোর্ট নম্বর-বি-০০৪৯২৪৭৯), ঠিকানা সেকদী ডাকঘর বাঘড়া বাজার, থানা চাঁদপুর সদর, জেলা চাঁদপুর) গত ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ থেকে সৌদিতে কাজের উদ্দেশ্য রওনা হয়। সেখানে যাওয়ার পর ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে কাউসার খানের সাথে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তার একমাত্র কারণ সে সৌদি আরবে গিয়ে কাজ না পেয়ে শোকে কাতর হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এবারই সে সৌদি আরবে প্রথম গেছে, বিধায় তাকে কেউ চিনতে পারছে না উল্লেখ করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে দেয়া ওই অভিযোগে রানু বেগম আরো উল্লেখ করেন, এখন তার কাছে কোনো মোবাইল বা পাসপোর্টসহ ইকামা-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র বা তথ্য কিছুই নেই। রানু বেগম উল্লেখ করেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম, আমার ছেলে কাউসার খান সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে বার্তা মার্কেট বা ওই শহরের কোনো অঞ্চলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।, আমার একমাত্র সন্তান সৌদি আরবে বেঁচে আছে তা জানা নাই। যদি বেঁচে থাকে তাহলে বিষয়টি সুবিবেচনা করে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মা রানু বেগম অনুরোধ জানাচ্ছি।
এর আগে গত এক মাসে আরো কয়েকজন সৌদি আরব প্রবাসী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের আত্মীয়স্বজনদের খুঁজে বের করতে ঢাকার হজরত শাহজালাল রহ: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এপিবিএনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়।


আরো সংবাদ



premium cement