রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনায় কুকিচিন জড়িত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। এ নিয়ে সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুকিচিন একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। কুকিচিনের তৎপরতা ইদানীং বেড়েছে। বিজিবি-পুলিশ তাদের ব্যাপারে অপারেশন চালাচ্ছে। সেখানে গোলাগুলি চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশের আইজির নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে রয়েছে। ব্যাংক লুট করে চলে যাওয়ার পর পুলিশ ও বিজিবি সেখানে এই অপারেশন চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী সদস্যরাও সেখানে যোগ দেবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। সব তথ্যই আপাতত প্রাথমিক। খতিয়ে দেখাসহ প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার যা করার তাই করবে। মঙ্গলবার পাহাড়ে ব্যাংক ডাকাতির বিষয়ে আমাদের কাছে যা তথ্য আসছে তাতে কুকিচিন গ্রুপটি এটি করেছে। তারা আগেও বান্দরবানে একটি জায়গায় অবস্থান করে জঙ্গি বাহিনীর সাথে আঁতাত করে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল। র্যাব ও আর্মি সেই ঘাঁটি সরিয়ে দিয়েছে। ইদানীং কুকিচিন আবার নানাভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পর্যন্ত শুনেছি, রুমায় সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে বৈদ্যুতিক যে সাবস্টেশন ছিল সেটাকে বন্ধ করে তারা ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ ও ব্যাংকের ম্যানেজার সবাই তারাবি নামাজে ছিলেন। সেই সময় তারা ঢুকে দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে দু’টি এসএমজিও আটটি চাইনিজ রাইফেল লুট করে। উপজেলা কমপ্লেক্সে আনসারদের শটগানগুলোও নিয়ে নেয় তারা।
সরকারের যথেষ্ট পরিমাণ ফোর্স রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত সেখানে পুলিশ ও বিজিবি রয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে সেনাবাহিনীও যাবে। আর এ বিষয়টি আমাদের কাছে একেবারে নতুন। থানচি ছিল একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা। এটা পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের মূল জায়গা। রুমাও শান্তিপূর্ণ জায়গা ছিল, সেখানে অনেক দিন ধরে শান্তি বিরাজ করছিল। সেই জায়গা তারা কেন বেছে নিলো, সবকিছু দেখার বিষয় রয়েছে। এগুলো দেখে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব, ইনশাআল্লাহ।
ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে দুই দেশের সাথেই আলোচনা হচ্ছে। সীমান্তে ওই দেশে একটা চক্র রয়েছে, আমাদের দেশেও একটা চক্র রয়েছে, যারা অবৈধ ব্যবসা করে। দেশের পণ্য ওই দেশে নিয়ে যায়, ওই দেশের পণ্য এ দেশে নিয়ে আসে। সীমান্ত এলাকায় যারা থাকেন তারা দুর্ধর্ষ, তারা কোনো নিয়মকানুন মানেন না। কখনো ওই দেশে ঢুকে যায়, আবার কখনো এই দেশে চলে আসে। তখন সীমান্তরক্ষীদের সাথে ঘটনা ঘটে যায়।
সীমান্তে শুধু তো বাংলাদেশের মানুষই হতাহত হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, এটা সঠিক নয়। বাংলাদেশের মানুষ ওই দেশে যখন ঢুকে যায়, তখন ক্যাজুয়ালটি হয়। ওই দেশের মানুষ যখন আমাদের দেশে আসে, আমরা ফলো করি যাতে নিহত না হয়। ওই দেশের সাথে আলোচনা চলছে, যেন নন লেথাল অস্ত্রগুলো (প্রাণঘাতী নয়) ব্যবহার করা হয় যাতে ক্যাজুয়ালটি না হয়।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে বুয়েটে জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে তথ্য নেই, তবে হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটাই সবাই মেনে চলবেন। যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, বুয়েটে নিষিদ্ধ হয়েছিল, সেটার ওপর একটা আদেশ হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা