৬ মাসের সন্তানকে বুকে নিয়ে জীবিকার সন্ধানে মা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ মার্চ ২০২৪, ০১:২২
রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়। ট্রাফিক সিগন্যাল পড়তেই থেমে যাচ্ছে গাড়ি। এই সুযোগে ছয় মাসের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে গাড়ির কাছে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মা। তার দুই হাতে রয়েছে কাপড়ের তৈরি নুসনি (গরম পাতিল ধরার কাপড়)। আর বুকের সাথে কাপড় দিয়ে বানানো থলির মধ্যে রয়েছে ছয় মাসের সন্তান জান্নাত। আয়েশা গাড়ির গ্লাসের কাছে গিয়ে নুসনিগুলো বিক্রির জন্য আকৃষ্ট করার চেষ্ট করছেন ভেতরে থাকা যাত্রীদের। কিন্তু বেশির ভাগ যাত্রীই ইশারায় সরে যেতে বলছেন তাকে। তুবও থামছেন না আয়েশা নামের ওই মা। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে এক গাড়ি থেকে দৌড়ে অন্য গাড়ির দিকে ছুটছেন তিনি। আয়েশা বলেন, জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করছেন তিনি।
গতকাল বুধবার নীলক্ষেত মোড়ে কথা বলেন নতুন মা আয়েশা। তার বয়স কত হবে তিনি জানেন না। তবে ১৫-১৬ বছর হতে পারে। ভাসমান হিসেবে থাকেন নিউ মার্কেট এলাকায়। কয়েক বছর আগে এক ভাসমান ছেলের সাথে বিয়ে হয় তার। মেয়ে জান্নাতের জন্মের পর পল্টে যায় তার জীবনযাত্রা। মেয়েকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। নিজেরা ঠিকমতো খেতে না পারলেও মেয়ের জন্য দুধ কিনে রাখতে হয়। কিন্তু কিভাবে কিনবেন। তার স্বামী রনির রোজগার নেই বললেই চলে। তাই রাস্তায় নেমে পড়েন রোজগারের জন্য।
আয়েশা আরো বলেন, আমাদের তো বাসা বাড়ি নেই। সেখানে মেয়েকে কারো কাছে রেখে আসব। তাই রোদ বৃষ্টির মধ্যে কাপড়ের থলি তৈরি করে তার মধ্যে রেখে বুকের মধ্যে বেঁধে রাখি। যেখানেই যাই সেখানেই নিয়ে যাই। তিনি আরো বলেন, ভিক্ষা করে মেয়েকে বড় করতে চাই না। তাই নুসনি বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে মেয়ের দুধের দাম হয়ে যায়। নিজের খেতে না পারলেও মেয়ে জান্নাতকে খাবারের কষ্ট দিতে চান না তিনি।
তিনি বলেন, খুব বেশি বিক্রি হয় না তার। তবে কখনো কখনো কেউ কেউ নুসনি না নিয়েও তাকে টাকা দিয়ে যান। আবার কোনো কোনো যাত্রী ধমক দিয়ে বলেন, এত ছোট বাচ্চাকে কষ্ট দিতে রাস্তায় নিয়ে আসছ, যাতে ওই বাচ্চা দেখে মানুষ বেশি টাকা দিয়ে যায়’। আয়েশা তাদের এসব কথা প্রথমে মন খারাপ হতো। এখন হয় না। বুঝি ওইসব যাত্রী হয়তো আমার মেয়ের ভালোর জন্যই আমাকে এসব কথা বলেন। কিন্তু তাদের কিভাবে বোঝাব। মেয়েকে রেখে আসার মতো জায়গা নেই আমার। জায়গা থাকলে এত কষ্ট দিয়ে রোদ-বৃষ্টি গরমের মধ্যে তাকে নিয়ে আসতাম না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা