০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`

ঈদে বেতন-বোনাস নিয়ে শঙ্কা ৪০০-এর বেশি পোশাক কারখানায়

-


ঈদের বেতন-বোনাস নিয়ে শঙ্কা ৪০০-এর বেশি পোশাক কারখানায়। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা সড়কে নামতে পারেন।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে এ নিয়ে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, প্রতি দুই ঈদের আগে দেশের তৈরী পোশাক কারখানার বহু শ্রমিকের বেতন-বোনাস বকেয়া থাকে। ঈদের আগে ঘোষণা ছাড়াই হুটহাট বন্ধ করে দেয়া হয় অনেক কারখানা। ছাঁটাই করা হয় কর্মীদের। এসব কারণে প্রতিবারই ঈদ এলে বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে সড়কে নামতে বাধ্য হন পোশাকশ্রমিকরা।
বিগত বছরগুলোতেও ঈদের আগে সড়ক অবরোধ, যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবারই এসব কর্মকাণ্ডে ইন্ধন জুগিয়েছে এক শ্রেণীর কুচক্রী মহল। শ্রমিকদের এসব আন্দোলনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর উসকানিতে তৈরি হয়েছে নাশকতামূলক পরিবেশ। অবনতি ঘটেছে আইনশৃঙ্খলার।

এ বছরও ঈদুল ফিতরের আগে দেশের অন্তত ৪১৬টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য বেতনভাতা ও বোনাস হাতে পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ঈদের আগে তারা পাওনা বুঝে না পেলে এবারো চরম শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এতে কারখানা অধ্যুষিত শিল্প এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রমজানের ঈদের ছুটির আগে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে হবে। ঈদের আগে কারখানাগুলো কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবে না। এজন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শিল্প পুলিশের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আসন্ন ঈদে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে সমস্যায় পড়তে পারে ৪১৬টি পোশাকশিল্প কারখানা। যার অর্ধেকের বেশি বিজিএমইএ (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন) ও বিকেএমইএর (বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিযয়েশন) সদস্যভুক্ত পোশাক কারখানা। আর্থিক সঙ্কট, পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশ না থাকাসহ নানা কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে এই কারখানাগুলো।
ঈদের আগে দেশের অন্তত ৪১৬টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য বেতনভাতা ও বোনাস হাতে পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ঈদের আগে তারা পাওনা বুঝে না পেলে এবারো চরম শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এতে কারখানা অধ্যুষিত শিল্প এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রয়াদেশ কমে যাওয়া, গ্যাস সঙ্কটসহ অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা কারণে চাপে আছে রফতানিমুখী পোশাকশিল্প। যার প্রভাব পড়ছে শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধে। মার্চ মাস শেষ হতে চললেও এখনো ফেব্রুয়ারির বেতন দিতে পারেনি অনেক কারখানা। তার ওপর যুক্ত হচ্ছে ঈদ বোনাস। সঙ্কট আছে অন্য খাতগুলোর কারখানায়ও।
শিল্প পুলিশের হিসাবে, দেশে বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা ৪১৬টি। তার মধ্যে বিজিএমইএর সদস্য ১৭১টি, বিকেএমইএর ৭১টি, বিটিএমএর ২৯টি, বেপজার ১৩টি এবং এসবের বাইরে ১৩২টি কারখানা রয়েছে। তিন হাজার ৬০০টি কারখানার তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে শিল্প পুলিশ।

শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে তিন পাশে শিল্পাঞ্চল। এসব পথ ধরেই ঈদে গ্রামে ফিরবে ঘরমুখো মানুষ। পোশাক কারখানার মালিকরা ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি হবে। এতে সড়ক অবরোধসহ সহিংস পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। এসময়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে সড়কে দুর্ভোগে পড়তে হবে ঈদযাত্রীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকরা বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নামতে পারে। তখন পুলিশকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। শ্রমিকদের সামনে ভিলেন হতে হয় পুলিশকে। কারণ, শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশকেই মুখোমুখি ভূমিকা নিতে হয়, তখন কারখানা মালিক সংশ্লিষ্টদের খুঁজেও পাওয়া যায় না।
অতীতে ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও গত কয়েক বছর সেটি করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করা হলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো: নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বেঁধে দেয়া হয়নি। কোনো শিল্পের মালিক কখন বেতন-বোনাস দিতে পারবেন, কখন দিতে পারবেন না, সেটা তো আমরা জানি না। আমরা শুধু বলেছি, ঈদের ছুটির আগে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে হবে। ঈদের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। এটা আমাদের কড়া নির্দেশনা।

এসব বিষয়ে বিকেএসপিএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, ঈদের বোনাস যেন এপ্রিলের শুরুতে পরিশোধ করা হয়। ঈদের ছুটির আগেই যেন মার্চ মাসের বেতন দেয়া হয়। মালিক ও শ্রমিকদের বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ঈদের ছুটি যেন পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়। ঈদ সামনে রেখে শ্রমিকদের বেতন-ভাতাকে ইস্যু করে কোনো কুচক্রী মহল যেন উসকানি দিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে
২০২৪ সালকে দেশের পোশাকশিল্পের জন্য আরো কঠিন বছর উল্লেখ করে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হীল রাকিব বলেন, বর্তমান অবস্থায় ভালো কারখানাগুলোর মালিকেরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন। কারখানা মালিকরা কখনো বেতন-বোনাস বকেয়া রাখতে চান না। সবাই চান ঈদের আগে অন্তত শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করে তাদের ঈদের ছুটি দিতে।
বাংলাদেশ শিল্পাঞ্চল পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো: মাহাবুবর রহমান বলেন, ঈদের আগে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই যেন শ্রমিক ছাঁটাই বা লে-অফ করা না হয়- এ ব্যাপারে মালিকপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ, শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে অনেক কারখানায় বিগত সময়ে ঈদের আগে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement
সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাসদস্যদের প্রস্তুত রাখতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা খাদ্যগুদাম তৈরিতে পরামর্শক খরচই ২৯০ কোটি টাকা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৪ মামলা বাতিলের রায় বহাল সফটওয়ার শিল্পে কর্মসংস্থান ও বিদেশী মুদ্রা হারানোর শঙ্কা তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন : সালাহউদ্দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ৬ ব্যাংকের এমডিকে ভয়ঙ্কর রূপে তালিকাভুক্ত ৯৭৯ ছিনতাইকারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ সেন্টমার্টিন রক্ষায় বিশ্বমানের উদ্যোগ আরামকোর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে স্বাগত জানানো হয়নি : সৌদি রাষ্ট্রদূত

সকল