০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জিলহজ ১৪৪৫
`

কৃষি মার্কেটে এখন শুধু পোড়া গন্ধ

-


একদিন আগেও যেখানে ছিল লোকজনের কোলাহল আর বেচা-কেনার ধুম। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্য পণ্য, কাপড়, স্বর্ণ, পাইকারি-খুচরা মুদি দোকান, জুতার দোকানসহ প্রায় সব কিছুই ছিল একটি চত্বরজুড়ে। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নানা ধরনের ক্রেতায় মুখরিত থাকত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের অন্যতম জনপ্রিয় কৃষি মার্কেট। কিন্তু মাত্র একদিনের ব্যবধানে পুরো মার্কেট এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দোকানগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে প্রায় সবই। দিন-রাত জমজমাট থাকা মার্কেটজুড়ে এখন শুধুই পোড়া গন্ধ।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের একদিন পর গতকাল শুক্রবার কৃষি মার্কেটের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী যার যার দোকানের সামনে নির্বাক হয়ে বসেছিলেন। তাদের চোখে যেন অনিশ্চয়তার ছাপ। কেউ কেউ ভেতরের পোড়া স্তূপ সরিয়ে নিচ্ছিলেন। কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেল, আগুনে তাদের দোকানই নয়, পুড়েছে একেকটি পরিবারের স্বপ্ন। আচমকা বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। তবে ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চান, সহায়তা চেয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যত দ্রুত সম্ভব পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

পুড়ে যাওয়া শুভেচ্ছা জুয়েলার্সের মালিক মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে যৌথ মালিকানায় চলছে শুভেচ্ছা জুয়েলার্সের। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে পশ্চিম-উত্তর পাশ থেকে ৮ মাস আগে স্থানান্তর করা হয় উত্তরপূর্ব পাশের বর্ধিত অংশে। চোখের সামনে কোটি টাকার সম্পদ পুড়তে দেখলাম, কিছুই করতে পারলাম না। কোটি টাকার সম্পদের পাশাপাশি দুটি কসমেটিকসের দোকান পুড়ে গেছে দুই ভাই জহিরুল ইসলাম লিটন ও জসিম উদ্দিনের। আগুন লাগার পরে দৌড়ে এসেও কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি। সব শেষ হয়ে গেলেও পোড়া দোকান ছেড়ে যাননি তারা কেউই।
জসিম বলেন, কিছুই বের করতে পারি নাই, একটা সুতাও না। এখন কি করব, কোথায় কার কাছে যাব! কবে দোকান ঠিক হবে, আর ঠিক হলেই আবার দোকান সাজাতে মালামাল তোলার টাকা কই পাব। জানি না, সামনের দিনগুলোতে কী হবে।
আমির হামজা বস্ত্র বিতানের মালিক মো: ফজলুল হক বলেন, লাখ দেড়েক টাকা ছিল দোকানে। ঋণ না থাকলেও বাকিতে আনা অনেক মালামাল ছিল দোকানে। পরশু দিনও ২০ হাজার টাকা জমা দিয়া বাকিতে ৪ লাখ টাকার মাল আনছি। চার লাখের চার পয়সাও তো বেচতে পারিনি, সব পুড়ে গেল।

মায়ের দোয়া বস্ত্র বিতানের মালিক আলমগীর পুড়ে ছাই হওয়া দোকানের সামনে বসে ছিলেন। তিনি বলেন, নিঃস্ব হয়ে গেছি, সামনে কী করব জানি না।
ক্ষতিপূরণ আদৌ কবে দেবে আবার কবে দোকান সাজাতে পারব এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর ক্ষতিপূরণ কি ক্ষতির সমান হয়!
এদিকে, কৃষি মার্কেটের সামনে জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি বুথ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরাও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করছেন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা করব। তারপর আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মানবিক সহায়তা করার চেষ্টা করব।
বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পাঁচ ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষনে আগুনে পুড়ে ছাই হয় মার্কেটের অন্তত ৪০০ দোকান। আগুনে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
স্বাগত হিজরি নববর্ষ ১৪৪৬ ‘শিশু নিখোঁজ’ গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না : পুলিশ সদর দফতর উত্তেজনা তুঙ্গে রেখে নির্বাচনি প্রচারণায় ফিরলেন বাইডেন ফ্রান্সে কট্টরপন্থীদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা হামাসের হামলায় ইসরাইলি মেজর নিহত বিমান বাহিনী প্রধানের এয়ার চিফ মার্শাল র‌্যাংক পরিধান গোপালগঞ্জে শিক্ষক লাঞ্চনার ঘটনায় জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ও মানবিক : রাষ্ট্রদুত ইউসুফ রামাদান বাংলাদেশে শিশু নিখোঁজের ঘটনা কি সত্যিই বেড়েছে? আবেগী পোস্টে ফুটবলকে বিদায় জানালেন ক্রুস নোয়াখালীতে স্বাস্থ্য সেবা ও নারীবান্ধব গণশুনানি অনুষ্ঠিত

সকল